ঢাকা, রবিবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আইন ও আদালত

৫০ মামলার ৭০ অভিযুক্ত শিশুকে সংশোধন হওয়ার সুযোগ 

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭৪৮ ঘণ্টা, মার্চ ২১, ২০২২
৫০ মামলার ৭০ অভিযুক্ত শিশুকে সংশোধন হওয়ার সুযোগ 

সুনামগঞ্জ: নানা অপরাধে ৫০ মামলায় অভিযুক্ত ৭০ শিশুকে সংশোধন হওয়ার সুযোগ দিলেন নারী ও শিশু ট্রাইব্যুনাল আদালত।  

সোমবার (২১ মার্চ) দুপুরে এ রায় দেন সুনামগঞ্জ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল এবং শিশু আদালতের বিচারক মো. জাকির হোসেন।

 

বিভিন্ন সময় বিভিন্ন ছোট খাটো অপরাধের অভিযোগে অভিযুক্ত শিশুদের ব্যাতিক্রমী এ রায়ের মাধ্যমে শাস্তি না দিয়ে সংশোধনের সুযোগ দেওয়া হলো। যাতে করে এই শিশুগুলো তাদের একটি সুন্দর ভবিষ্যৎ পায় সেজন্য এই উদ্যোগ নিয়েছেন আদালত।  

জাতীয় শিশু দিবস উপলক্ষে আদালত এমন ৭০ শিশু অভিযুক্তদের সংশোধনের জন্য বাবা মায়ের জিম্মায় পরিবারের সঙ্গে থাকার সুযোগ দেওয়া হয়েছে।

আদালতের পক্ষ থেকে শিশুদের হাতে বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা, ফুল এবং ডায়েরি তুলে দেন আদালতের কর্মীরা।

বিভিন্ন সময়ে দায়ের হওয়া ৫০ টি মামলায় ৭০ জন শিশুকে আদালতে এসে হাজিরা দিতে হতো। মারামারি, ছোটখাটো চুরির অভিযোগ আনা হয়েছিল এদের বিরুদ্ধে। এ কারণে অভিযুক্ত শিশুদের শিক্ষাজীবন ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছিলো।  

তাই আদালত এই শিশুদের কারাগারের পরিবর্তে মা-বাবার জিম্মায় ফেরত পাঠিয়ে শিশুদের জীবন সুন্দর ও মানবিক গুণাবলি নিয়ে বেড়ে ওঠার জন্য সংশোধনের শর্ত দিলেন।  

আদালতের এমন রায়ে খুশিতে কান্না করে ফেলেন অভিযুক্ত শিশুদের অভিভাবকরা।

যে শর্তে শিশুদের মা-বাবার জিম্মায় দিয়েছেন আদালত তা হলো, নিয়মিত পড়াশুনা করা পাশাপাশি প্রতিদিন কিছু ভালো কাজ করা এবং তা লিখে রাখা, মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস জানা এবং ভালো ব্যবহার করা, বাবা-মাসহ গুরুজনদের আদেশ নির্দেশ মেনে চলা এবং বাবা মায়ের সেবা যত্ন করা ও কাজে কর্মে তাদের সাহায্য করা, নিয়মিত ধর্মগ্রন্থ পাঠ করা এবং ধর্মকর্ম পালন করা, প্রত্যেকে কমপক্ষে ২০টি করে গাছ লাগানো এবং গাছের পরিচর্যা করা, অসৎ সঙ্গ ত্যাগ করা, মাদক থেকে দূরে থাকা, ভবিষ্যতে কোনো অপরাধের সঙ্গে নিজেকে না জড়ানো।  

এসব শর্ত প্রতিপালিত হচ্ছে কি না তা দেখভালের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে সমাজ সেবা অধিদপ্তরের প্রবেশন কর্মকর্তা মো. শফিউর রহমানকে। তিনি পর্যবেক্ষণ করে এবং প্রতি তিনমাস অন্তর অন্তর আদালতকে অবহিত করবেন।

জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট রুহুল তুহিন বাংলানিউজকে বলেন, এই রায়ের ফলে ছোট খাট অনেক মামলাই দ্রুত নিস্পত্তি হলো। শিশুরা তাদের আপন ঠিকানা ফিরে পেল। বাবা-মায়ের দুশ্চিন্তার অবসান হলো। মা বাবা সন্তানকে নিজের কাছে রেখে সংশোধনের সুযোগ পেলেন।  

এর আগেও একই আদালত ইতিপূর্বে তিন দফায় ৯৫ মামলায় ১৩৩ জন শিশুকে প্রবেশন দিয়ে মামলা থেকে অব্যাহতির মাধ্যমে সুস্থ স্বাভাবিক জীবনে প্রত্যাবর্তনে সুযোগ করে দিয়েছিলেন।  

বাংলাদেশ সময়: ১৭৪৫ ঘণ্টা, মার্চ ২১, ২০২২
এসআইএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।