ঢাকা: নব্বইয়ের দশকের জনপ্রিয় চিত্রনায়ক সোহেল চৌধুরী হত্যা মামলায় সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য আগামী ২৮ মার্চ নতুন করে দিন ধার্য করেছেন আদালত।
বৃহস্পতিবার (২৪ মার্চ) ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-২ এর বিচারক জাকির হোসেনের আদালতে এ মামলার সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য দিন ধার্য ছিল।
তবে মামলার বাদী নিহতের ভাই তৌহিদুল ইসলাম চৌধুরী আদালতে উপস্থিত হয়ে ব্যক্তিগত আইনজীবী নিয়োগের জন্য সময় চান। অপরদিকে পলাতক আসামিদের জন্য রাষ্ট্রীয় খরচে আইনজীবী নিযুক্তির জন্য রাষ্ট্রপক্ষও সময়ের আবেদন করে। উভয় পক্ষের আবেদন আমলে নিয়ে বিচারক আগামী ২৮ মার্চ সাক্ষ্য শুরুর নতুন দিন ঠিক করেন।
দীর্ঘদিন হাইকোর্টের আদেশে মামলার কার্যক্রম স্থগিত ছিল। সেই স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার করে গত ১০ মার্চ এ আদালতে মামলার কার্যক্রম শুরু হয়। সেদিন বিচারক সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য ২০ মার্চ দিন ধার্য করেন। তবে নির্ধারিত দিনে বাদী উপস্থিত না হওয়ায় তা পিছিয়ে ২৪ মার্চ সাক্ষ্য শুরুর তারিখ ঠিক করা হয়।
ওইদিন ব্যবসায়ী আজিজ মোহাম্মদ ভাই ওরফে আব্দুল আজিজসহ তিনজনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন ট্রাইব্যুনাল। পরোয়ানাভুক্ত অপর দুই আসামি হলেন- ট্রাম্পস ক্লাবের মালিক আফাকুল ইসলাম ওরফে বান্টি ইসলাম ও সেলিম খান। জামিনে থাকা এ তিন আসামি নতুনভাবে বিচারকাজ শুরু হলে কোনো পদক্ষেপ না নেওয়ায় গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়।
এছাড়া দুই আসামি শীর্ষ সন্ত্রাসী সানজিদুল ইসলাম ইমন ও আশিষ রায় চৌধুরী ওরফে বোতল চৌধুরী শুরু থেকেই পলাতক রয়েছেন। এদিন কারাগারে থাকা মামলার দুই আসামি তারিক সাঈদ মামুন ও হারুন অর রশীদ ওরফে লেদার লিটন ওরফে বস লিটন আদালতে হাজির করা হয়। এছাড়া জামিনে থাকা দুই আসামি আদনান সিদ্দিকী ও ফারুক আব্বাসী আদালতে হাজির ছিলেন।
জানা যায়, চিত্রনায়ক সোহেল চৌধুরী ভালোবেসে বিয়ে করেন ওই সময়ের জনপ্রিয় চিত্রনায়িকা পারভিন সুলতানা দিতিকে। বিয়ের কিছু দিন পর তাদের সম্পর্কে ফাটল ধরে। ওই সময় মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন সোহেল চৌধুরী। জড়িয়ে পড়েন নেশার জগতে। সেই অন্ধকার জগতের অপরাধীদের সঙ্গে শুরু হয় বিভিন্ন বিষয়ে নিয়ে দ্বন্দ্ব। সেই দ্বন্দ্বের রেশ ধরেই খুন হন সোহেল চৌধুরী।
বনানীর ১৭ নম্বর রোডের আবেদীন টাওয়ারে ট্রাম্পস ক্লাবের নিচে ১৯৯৮ সালের ১৮ ডিসেম্বর সন্ত্রাসীদের গুলিতে মারা যান নায়ক সোহেল চৌধুরী। ওই ঘটনায় নিহতের ভাই তৌহিদুল ইসলাম চৌধুরী গুলশান থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন।
মামলাটি তদন্ত শেষে ১৯৯৯ সালের ৩০ জুলাই গোয়েন্দা পুলিশের সহকারী পুলিশ কমিশনার আবুল কাশেম ব্যাপারি নয়জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করেন। ২০০১ সালের ৩০ অক্টোবর ঢাকার তৃতীয় অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালত আসামিদের বিরুদ্ধে চার্জগঠন করেন। এর দুই বছর পর মামলাটির বিচার দ্রুত নিষ্পত্তির জন্য ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-২ এ পাঠানো হয়।
ওই বছরই এক আসামি মামলা বাতিলে হাইকোর্টে আবেদন করেন। সেই আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ২০০৩ সাল থেকে দীর্ঘ ১৯ বছর হাইকোর্টের আদেশে মামলাটি স্থগিত ছিল। ২০১৫ সালে সেই স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার হয়। তারও সাত বছর পর গত ২৭ ফেব্রুয়ারি মামলার নথি বিচারিক আদালতে ফেরত এলে সাক্ষ্যগ্রহণ প্রক্রিয়া শুরু হয়।
বাংলাদেশ সময়: ১৯১৪ ঘণ্টা, মার্চ ২৪, ২০২২
কেআই/আরবি