ঢাকা, রবিবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আইন ও আদালত

স্ত্রী-সন্তান খুনে মঠবাড়িয়ার আলমগীরের মৃত্যুদণ্ড বহাল

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৩৩ ঘণ্টা, মার্চ ২৮, ২০২২
স্ত্রী-সন্তান খুনে মঠবাড়িয়ার আলমগীরের মৃত্যুদণ্ড বহাল

ঢাকা: পিরোজপুরে মঠবাড়িয়ার উত্তর পাঠাকাতা গ্রামে স্ত্রী ও দুই সন্তানকে হত্যার দায়ে মৃত্যুদণ্ডাদেশপ্রাপ্ত আসামি আদালতের অনুকম্পা পেতে পারেন না বলে মন্তব্য করেছেন হাইকোর্ট। তাই উচ্চ আদালত সেই মামলার আসামি পল্লী চিকিৎসক আলমগীর হোসেনকে বিচারিক আদালতের দেওয়া মৃত্যুদণ্ডাদেশ বহাল রেখেছেন।

সোমবার (২৮ মার্চ) এ মামলার ডেথ রেফারেন্স (মৃত্যুদণ্ডাদেশ অনুমোদনের আবেদন) গ্রহণ করে রায় দেন বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি আহমেদ সোহেলের অবকাশকালীন হাইকোর্ট বেঞ্চ।

আদালতে আসামি পক্ষে ছিলেন রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী মো. হাফিজুর রহমান খান। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বশির আহমেদ।

রায়ের পর্যবেক্ষণে আদালত বলেছেন, ‘আসামি যেভাবে স্ত্রী ও দুই সন্তানকে হত্যা করেছেন, তা সমাজ ও মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ। এমন অপরাধ নমনীয়ভাবে দেখার সুযোগ নেই। এ হত্যাকারী আদালতের অনুকম্পা পেতে পারেন না। ’

সামাজিক অবক্ষয়ের কারণেই এ ধরনের বিকৃত, বর্বরোচিত ও অমানবিক ঘটনা ঘটছে উল্লেখ করে পর্যবেক্ষণে আদালত আরও বলেছেন, ‘নিজের পরকীয়ার কারণে আসামি তার স্ত্রী-সন্তানকে যেভাবে হত্যা করেছেন, তাতে হীন ও বিকৃত মানসিকতাই ফুটে উঠেছে। তা একই সঙ্গে বর্বরোচিত ও অমানবিক। তাকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়াই উপযুক্ত। ’

মামলার বিবরণে জানা যায়, পল্লী চিকিৎসক আলমগীরের সঙ্গে এক নারীর অনৈতিক সম্পর্ক গড়ে ওঠে। এ নিয়ে স্ত্রী হাফিজা বেগমের (৩৫) সঙ্গে তার প্রায়ই ঝগড়া হতো। ২০০৮ সালের ২২ জুন রাতে আলমগীর তার স্ত্রীকে ইনজেকশন দিয়ে অচেতন করেন। এরপর ছেলে আশরাফুর রহমান (১১) ও মেয়ে জামিলা আক্তারকে (৩) ঘুমের ওষুধ খাওয়ান। পরে স্ত্রী ও দুই সন্তানকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে গলা গেটে হত্যা করেন। হত্যাকাণ্ড শেষে ডাকাতের ওপর দোষ চাপান আলমগীর। খবর পেয়ে রাতেই ঘটনাস্থলে গিয়ে তিনজনের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে আলমগীর হত্যার কথা স্বীকার করেন।

ঘটনার পরদিন হাফিজার ভাই আবুল বাশার বাদী হয়ে আলমগীরের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করেন। আলমগীর আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।

এ মামলায় ২২ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে ২০১৬ সালের ১ আগস্ট রায় ঘোষণা করেন পিরোজপুরের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ এস এম জিল্লুর রহমান।

কিন্তু এ রায়ের আগের বছর ২০১৫ সালের ৩০ এপ্রিল হাইকোর্ট থেকে জামিন পান আলমগীর। এরপর থেকে তিনি পলাতক।

পরে নিয়ম অনুযায়ী মৃত্যুদণ্ডাদেশ অনুমোদনের জন্য ডেথ রেফারেন্স হাইকোর্টে পাঠানো হয়। এই ডেথ রেফারেন্সের শুনানি শেষে উচ্চ আদালত তাতে অনুমোদন দেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৬২৯ ঘণ্টা, মার্চ ২৮, ২০২২
ইএস/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।