ঢাকা: রাজধানীর কলাবাগানে মাস্টারমাইন্ড স্কুলে ‘ও’ লেভেল পড়ুয়া শিক্ষার্থী আনুশকা আমিন নুরকে (১৭) ধর্ষণের পর হত্যা মামলায় নিহতের বন্ধু ইফতেখার ফারদিন দিহানের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দিয়েছেন নিহতের বাবা ও মামলার বাদী ব্যবসায়ী মো. আল আমিন আহমেদ।
বৃহস্পতিবার (৩১ মার্চ) ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৭ এর ভারপ্রাপ্ত বিচারক এ এম জুলফিকার হায়াতের আদালতে সাক্ষ্য দেন তিনি।
সাক্ষ্যে তিনি ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন। এ সময় কাঠগড়ায় দাঁড়ানো আসামি দিহানকে শনাক্ত করে তার সর্বোচ্চ শাস্তি দাবিও করেন।
গত ১৬ ফেব্রুয়ারি এ মামলায় চার্জগঠনের মাধ্যমে বিচার শুরুর আদেশ দেন একই আদালত। আজ মামলাটিতে সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হলো। এ মামলার মোট সাক্ষী ৫৫ জন। পরবর্তী সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য আগামী ২১ এপ্রিল দিন ধার্য করেন ট্রাইব্যুনাল।
এদিন কারাগারে থাকা দিহানকে আদালতে হাজির করা হয়।
জবানবন্দিতে আনুশকার বাবা বলেন, গত বছরের ৭ জানুয়ারি সকাল আনুমানিক সাড়ে ৮টার দিকে আনুশকার মা কর্মস্থলের উদ্দেশে বাসা থেকে বের হয়ে যান। এরপর আমিও নবাবপুরে ব্যবসার কাজে চলে যাই। দুপুর দেড়টার দিকে আমার স্ত্রী ফোনে কাঁদতে কাঁদতে জানায় মেয়ের বন্ধু দিহান তাকে ফোন করেছিলেন। সেখান থেকে জানতে পেরেছেন, মেয়ে দিহানের কাছে গিয়ে সেখানে অসুস্থ হয়ে পড়েছে। তখন আমার স্ত্রী আগেই ধানমন্ডি আনোয়ার খান মডান হাসপাতালে পৌঁছে। আমিও সেখানে যাই। সেখানে গিয়ে আমার স্ত্রী কর্তব্যরত চিকিৎসকের কাছে জানতে পারে আনুশকাকে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে।
বাদীর জবানবন্দির পর আসামিপক্ষের আইনজীবী মো. বোরহান উদ্দিন তাকে জেরা করেন।
গত ৮ নভেম্বর একমাত্র আসামি ইফতেখার ফারদিন দিহানকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) এর পরিদর্শক খালেদ সাইফুল্লাহ। এরপর মামলাটি বদলি হয়ে ট্রাইব্যুনালে আসে।
২০২১ সালের ৭ জানুয়ারি মাস্টারমাইন্ড স্কুলের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী আনুশকাকে ফুসলিয়ে নিজ বাসায় ডেকে এনে ধর্ষণের পর হত্যার অভিযোগ ওঠে তারই প্রেমিক দিহানের বিরুদ্ধে। সন্ধ্যায় ধর্ষণের শিকার ওই শিক্ষার্থীকে গুরুতর অবস্থায় আনোয়ার খান মডার্ন হাসপাতালে নিয়ে যান অভিযুক্ত ও তার বন্ধুরা। পরে হাসপাতালের চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
এ ঘটনায় ৭ জানুয়ারি দিনগত রাতে নিহত আনুশকার বাবা মো. আল-আমিন বাদী হয়ে একটি মামলা দায়ের করেন।
মামলায় একমাত্র আসামি করা হয়েছে দিহানকে। মামলায় তার বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ৯ এর ২ ধারায় ধর্ষণের পর হত্যার অভিযোগ আনা হয়।
ওইদিন রাতেই এ ঘটনায় দিহানসহ চারজনকে আটক করে কলাবাগান থানা পুলিশ। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে শুধু দিহানকে এ মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়।
পরদিন ৮ জানুয়ারি আসামি দিহান ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে একই আদালতে ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেন। এরপর তাকে কারাগারে পাঠানো হয়। সেই থেকে তিনি কারাগারে আছেন।
বাংলাদেশ সময়: ২০১৭ ঘণ্টা, মার্চ ৩১, ২০২২
কেআই/আরবি