ঢাকা: নব্বই দশকের জনপ্রিয় চিত্রনায়ক সোহেল চৌধুরী হত্যা মামলার কেস ডকেট জমা দিতে শেষবারের মতো সময় পেলেন ডিবির তৎকালীন এসআই ফরিদ উদ্দিন।
সোমবার (৩০ মে) ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-২ এর বিচারক জাকির হোসেন এ আদেশ দেন।
এ দিন মামলায় সাক্ষ্যগ্রহণের দিন ধার্য ছিল। তবে ফরিদ উদ্দিন কেস ডকেট দাখিল করেননি। ফলে সাক্ষ্যগ্রহণ সম্ভব হয়নি। তাই আদালত আগামী ১৫ জুনের মধ্যে তাকে কেস ডকেট দাখিলের নির্দেশ দেন। ওই দিন কেস ডকেট দাখিল না করলে তার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
কেস ডকেটে ঘটনাস্থলের মানচিত্র, সূচিপত্র, সাক্ষীদের ১৬১ ধারায় জবানবন্দির নথিসহ অন্যান্য কাগজপত্র থাকে।
২০০৫ সালের ২ জুন ফরিদ উদ্দিন এ মামলার কেস ডকেট নেন। এরপর থেকে মামলার কেস ডকেট খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। গত ২৫ এপ্রিল ফরিদ উদ্দিনকে কেস ডকেট দাখিলের নির্দেশ দেন আদালত।
ফরিদ উদ্দিন এ দিন আদালতে হাজির হন। তিনি জানান, কেস ডকেট গ্রহণের দিনই তিনি ডিবির তৎকালীন ডিসি শহিদুল ইসলামকে দেন। এরপর তিনি বদলি হওয়ায় এ বিষয়ে কিছু জানেন না। আদালতের আদেশের পর তিনি খোঁজ করেও ডকেট পাননি।
বিচারক তাকে কেস ডকেট খুঁজে বের করার নির্দেশ দেন। এ কাজে তাকে সহযোগিতা করার জন্য পাবলিক প্রসিকিউটর অফিসকে নির্দেশ দেন।
একই দিনে আশিষ রায় চৌধুরী ও সানজিদুল ইসলাম জামিন আবেদন করেন। আদালত সেই আবেদন খারিজ করে দেন।
সংশ্লিষ্ট ট্রাইব্যুনালের অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর সাদিয়া আফরিন শিল্পী এ তথ্য জানান।
মামলার আসামিরা হলেন— ব্যবসায়ী আজিজ মোহাম্মদ ভাই ওরফে আব্দুল আজিজ, ট্রাম্পস ক্লাবের মালিক আফাকুল ইসলাম ওরফে বান্টি ইসলাম, সেলিম খান, দুই শীর্ষ সন্ত্রাসী সানজিদুল ইসলাম ইমন ও আশিষ রায় চৌধুরী ওরফে বোতল চৌধুরী, তারিক সাঈদ মামুন, হারুন অর রশীদ ওরফে লেদার লিটন ওরফে বস লিটন, আদনান সিদ্দিকী ও ফারুক আব্বাসী।
বনানীর ১৭ নম্বর রোডের আবেদীন টাওয়ারে ট্রাম্পস ক্লাবের নিচে ১৯৯৮ সালের ১৮ ডিসেম্বর সন্ত্রাসীদের গুলিতে মারা যান নায়ক সোহেল চৌধুরী। ওই ঘটনায় সোহেল চৌধুরীর ভাই তৌহিদুল ইসলাম চৌধুরী রাজধানীর গুলশান থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন।
মামলাটির তদন্ত শেষে ১৯৯৯ সালের ৩০ জুলাই গোয়েন্দা পুলিশের সহকারী পুলিশ কমিশনার আবুল কাশেম ব্যাপারী ৯ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করেন।
২০০১ সালের ৩০ অক্টোবর ঢাকার তৃতীয় অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালত আসামিদের বিরুদ্ধে চার্জগঠন করেন। এর দুই বছর পর মামলাটির বিচার দ্রুত নিষ্পত্তির জন্য ঢাকার দুই নম্বর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে পাঠানো হয়।
ওই বছরই এক আসামি মামলা বাতিলে হাইকোর্টে আবেদন আবেদন করেন। সেই আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ২০০৩ সাল থেকে দীর্ঘ ১৯ বছর হাইকোর্টের আদেশে মামলাটি স্থগিত ছিল। ২০১৫ সালে সেই স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার হয়। তারও সাত বছর পর গত ২৭ ফেব্রুয়ারি মামলার নথি বিচারিক আদালতে ফেরত আসলে সাক্ষ্যগ্রহণ প্রক্রিয়া শুরু হয়।
বাংলাদেশ সময়: ১৭২২ ঘণ্টা, মে ৩০, ২০২২
কেআই/এমজেএফ