ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আইন ও আদালত

ক্ষমা চেয়ে দায় থেকে অব্যাহতি পেলেন বোয়ালমারীর ইউএনও

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩৫২ ঘণ্টা, জুলাই ২৫, ২০২২
ক্ষমা চেয়ে দায় থেকে অব্যাহতি পেলেন বোয়ালমারীর ইউএনও রেজাউল করিম

ঢাকা: আদালতের নোটিশ জারিকারকের সঙ্গে দুর্ব্যবহার ও ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে বিচারের হুমকির ঘটনায় নিঃশর্ত ক্ষমা চাওয়ার পর ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রেজাউল করিমকে আদালত অবমানার দায় থেকে অব্যাহতি দিয়েছেন হাইকোর্ট।

একইসঙ্গে নিঃশর্ত ক্ষমা চাওয়ার পর অফিস সহকারী উকিল হোসেনকেও দায় থেকে অব্যাহতি দিয়েছেন।

 

সোমবার বিচারপতি জে বি এম হাসান ও বিচারপতি রাজিক আল জলিলের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

আদালতে ইউএনও’র পক্ষে  ছিলেন, আইনজীবী শফিক আহমেদ ও মাহবুব শফিক। অফিস সহকারীর পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মোজাম্মেল হক।

রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল তুষার কান্তি রায়।

পরে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল তুষার কান্তি রায় জানান, নিঃশর্ত ক্ষমা চাওয়ার পর আদালত দুই জনকে আদালত অবমাননার দায় থেকে অব্যাহতি দিয়েছেন।

 ‘ছরোয়ার শেখ বনাম নির্বাহী প্রকৌশলী, সওজ’ মামলাটি ফরিদপুরের বোয়ালমারী জ্যেষ্ঠ সহকারী জজ আদালতে বিচারাধীন। এ মামলার নোটিশ জারির জন্য ফরিদপুর জেলা জজ আদালতের নেজারত শাখার জারিকারক কামাল হোসেন ও মেহেদী হাসান গত ২৭ এপ্রিল দুপুরে বোয়ালমারী উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়ে যান।

ওই কার্যালয়ের অফিস সহকারী উকিল হোসেনকে নোটিশটি গ্রহণ করার জন্য অনুরোধ করেন তারা। কিন্তু নোটিশ গ্রহণ না করে ব্যস্ততার অজুহাত দেখিয়ে অপেক্ষায় রাখেন। দীর্ঘ অপেক্ষার পরও যখন কেউ নোটিশ গ্রহণ করছিলেন না, তখন জারিকারকরা চলে আসার জন্য উদ্যত হন এবং নোটিশ গ্রহণ না করার বিষয়টি আদলতকে জানাবেন বলে জানান।

এরপর অফিস সহকারী উকিল হোসেনের সঙ্গে জারিকারকদের তর্কাতর্কিও হয়। এক পর্যায়ে উকিল হোসেন নোটিশটি বুঝে নেন। অফিসের এক কর্মচারী বিষয়টি ইউএনও মো. রেজাউল করিমকে জানালে তিনি জরিকারকদের তার কক্ষে ডেকে নিয়ে দরজা আটকে দেন।

বিভিন্ন গণমাধ্যমে আসা এ সংক্রান্ত খবরে জানা যায়, অফিস স্টাফদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহারের অভিযোগ তুলে ইউএনও জারিকারকদের বিরুদ্ধে ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে সাজা দেওয়ার হুমকি দেন। এমনকি ইউএনও জারিকারকদের মোবাইল ফোন কেড়ে নেন, তাদের জাতীয় পরিচয়পত্র জমা দিতে বলেন। শেষ পর্যন্ত জোর করে মুচলেকা নিয়ে দুই জারিকারককে ছাড়েন ইউএনও।

হয়রানির এ ঘটনা সমন জারিকারী বিচারক ও ফরিদপুরের জেলা ও দায়রা জজকে লিখিতভাবে জানান। পরে ফরিদপুরের বোয়ালমারীর জ্যেষ্ঠ সহকারী জজ আদালতের বিচারক ইউএনও’র কাছে এ ঘটনার ব্যাখ্যা চান। ঘটনার বিশদ বর্ণনা দিয়ে সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেলের কাছে চিঠি লেখেন ফরিদপুরের জেলা ও দায়রা জজ। সেই চিঠি প্রধান বিচারপতির কাছে যায়। প্রধান বিচারপতি বিষয়টি হাইকোর্টে উপস্থাপন করার জন্য সংশ্লিষ্ট বিভাগে পাঠান। এরপর গত ৭ জুন বিষয়টি হাইকোর্টে উঠলে ইউএনও মো. রেজাউল করিম ও অফিস সহকারী উকিল হোসেনকে তলব করেন হাইকোর্ট। সেই সঙ্গে তাদের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার অভিযোগে কেন শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না, জানতে কারণ দর্শাতেও বলা হয়।

২১ জুন তলবে হাজির হয়ে আইনজীবীর মাধ্যমে নিঃশর্ত ক্ষমার আবেদন করেন বোয়ালমারী উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. রেজাউল করিম ও তার কার্যালয়ের অফিস সহকারী উকিল হোসেন।

শুনানি শেষে আদালত আদেশের জন্য দিন রাখেন। সে অনুসারে সোমবার আদেশ দেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৩৫১ ঘণ্টা, ২৫ জুলাই, ২০২২
ইএস/এসআইএস 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।