ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আইন ও আদালত

শিশু হত্যায় সৎ বাবার যাবজ্জীবন

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫৩১ ঘণ্টা, জুলাই ২৬, ২০২২
শিশু হত্যায় সৎ বাবার যাবজ্জীবন

লক্ষ্মীপুর: লক্ষ্মীপুরে মামুন নামে ১২ বছরের একটি শিশুকে হত্যার দায়ে তার সৎ বাবা মো. মাকসুদ ওরফে মাসুদকে (৩২) যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে তাকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও এক বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

মঙ্গলবার (২৬ জুলাই) দুপুরে জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. রহিবুল ইসলাম এ রায় দেন। রায়ের সময় আসামির আদালতে উপস্থিত ছিলেন।  

মাসুদ নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলার আলাইয়ারপুর ইউনিয়নের চৌপল্লী গ্রামের হাসান চৌকিদারের ছেলে।  

নিহত মামুন দণ্ডপ্রাপ্ত মাসুদের দ্বিতীয় স্ত্রীর প্রথম সংসারের সন্তান। দাম্পত্য বিরোধকে কেন্দ্র করে ২০১৮ সালের ২১ জানুয়ারি রাতে নাক-মুখ চেপে ধরে মামুনকে হত্যা করে মৃতদেহ নালায় ফেলে দেন মাসুদ।  

হত্যার ঘটনায় মামুনের মা রাহেনা বেগম সুমি বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামাদের আসামি করে মামলা দায়ের করেন। পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে মাসুদ তার সৎ ছেলে মামুনকে হত্যার কথা স্বীকার করেন। পরে পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠায়।  

মামলা সূত্র জানায়, লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার টুমচর ইউনিয়নের টুমচর গ্রামের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের মৃত কলিম উল্যার মেয়ে রাহেনা বেগম সুমির সঙ্গে প্রথমে বরিশালের আবু ছিদ্দিক নামে এক ব্যক্তির বিয়ে হয়। ওই সংসারে সুমন ও মামুন নামে দুই ছেলের জন্ম হয়। সাংসারিক বনিবনা না হওয়ায় ২০১২ সালে সুমি এবং ছিদ্দিকের বিবাহবিচ্ছেদ ঘটে।  

পরে সুমি বেগমগঞ্জের মাসুদকে বিয়ে করে চট্টগ্রামে বসবাস শুরু করেন। সুমির দুই শিশুপুত্র শুরুতে লক্ষ্মীপুরের টুমচরে নানির বাড়িতে থাকত। নানির মৃত্যুর পর সুমি তাদের চট্টগ্রামে নিজের কাছে নিয়ে যান। এ নিয়ে তার দ্বিতীয় স্বামী মাসুদের সঙ্গে তার মনোমালিন্য শুরু হয়। তাই বড় ছেলে সুমনকে অন্যত্র কাজে দিয়ে দেন তিনি। আর ছোট ছেলে মামুনকে সঙ্গে রাখেন।  

২০১৮ সালের ২১ জানুয়ারি সুমি, ছেলে মামুন ও স্বামী মাকসুদকে নিয়ে টুমচরে গ্রামের বাড়িতে আসেন। ওই সময় এলাকায় একটি মাহফিল চলছিল। মাহফিল থেকে যাওয়ার পথে মাসুদ ডাব খাওয়ানোর কথা বলে মামুনকে একটি নির্জন বাগানে নিয়ে নাক-মুখ চেপে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে মৃতদেহ নালায় ফেলে দেন। রাতে তিনি বাড়িতে গিয়ে অন্যদের সঙ্গে মামুনকে খুঁজতে থাকেন। পরদিন দুপুরে মামুনের মৃতদেহ পাওয়া যায়। পুলিশ মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য জেলা সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠায়।  

এ ঘটনায় মামুনের মা সুমি অজ্ঞাত ব্যক্তিদের নামে থানায় মামলা করলে পুলিশ সৎ বাবা মাসুদকে জিজ্ঞাসবাদ করে। এতে তিনি হত্যার কথা স্বীকার করেন। ২০১৮ সালের ৩ অক্টোবর পুলিশ মাসুদকে হত্যা মামলায় অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে। আদালত সাক্ষ্য প্রমাণের ভিত্তিতে মঙ্গলবার এ রায় দেন।

জেলা জজ আদালতের সরকারি কৌসুলি অ্যাডভোকেট জসিম উদ্দিন রায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।  

বাংলাদেশ সময়: ১৫০৯ ঘণ্টা, জুলাই ২৬, ২০২২
এসআই
 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।