ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আইন ও আদালত

পুলিশ-বিএনপি সংঘর্ষ

ভোলায় ২ মামলায় আসামি ৪ শতাধিক, গ্রেফতার ১০

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১১১ ঘণ্টা, আগস্ট ১, ২০২২
ভোলায় ২ মামলায় আসামি ৪ শতাধিক, গ্রেফতার ১০

ভোলা: ভোলায় পুলিশ ও বিএনপি সংঘর্ষের ঘটনায় জেলা বিএনপির সভাপতি গোলাম নবী আলমগীর ও সম্পাদক হারুন অর রশিদ ট্রুম্যানসহ চার শতাধিক নেতাকর্মীর নামে দুইটি মামলা দায়ের করেছে পুলিশ।  এ মামলায় সোমবার (১ আগস্ট) পর্যন্ত ১০ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

রোববার (৩১ জুলাই) দিনগত রাতে ভোলা সদর মডেল থানায় এ দুটি মামলা দায়ের করা হয়।

পুলিশের ওপর হামলার এবং স্বেচ্ছাসেবদল কর্মী হত্যার দায়ে ভোলা সদর মডেল থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. জসিম বাদী হয়ে ঘটনায় এই দুটি মামলা করেন। এতে ৭৪ জনের নামোল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতপরিচয় আরও ৩৫০ জনকে আসামি করা হয়েছে। এ মামলায় সোমবার (১ আগস্ট) পর্যন্ত ১০ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

এদিকে স্বেচ্ছাসেবকদলের কর্মী আব্দুর রহিম হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় বিএনপির পক্ষ থেকে পাল্টা আরেকটি মামলার প্রস্তুতি চলছে বলে জানিয়েছেন জেলা দলের সভাপতি গোলাম নবী আলমগীর।

তিনি বলেন, পুলিশ আমাদের দলের কর্মীকে গুলি করে হত্যা করেছে। এ ঘটনায় আমরা মামলা দায়ের করবো।

জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক হারুন অর রশিদ ট্রুম্যান বলেন, পুলিশকে আসামি করেই আমরা মামলা দায়েরের প্রস্তুতি নিচ্ছি।

অন্যদিকে নিহতের পরিবারকে শান্তনা দিতে এবং ঘটনা পর্যবেক্ষণে ভোলায় আসেন বরিশাল বিভাগীয় বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক বিলকিস জাহান শিরিন।

তিনি বলেন, পুলিশের গুলিতে আজ রাস্তা রক্তাক্ত, আমরা এর বিচার চাই। আমরা রহিম হত্যার বিচার চাই। বিএনপি রহিমের পরিবারের পাশে আছে।

সোমবার দুপুর ১২টার দিকে সংঘর্ষে নিহত আব্দুর রহমানের মরদেহ ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়। পরে গোরস্থান মসজিদে তার জানাজা অনুষ্ঠিত হয়।

এদিকে আব্দুর রহমানের পরিবারে চলছে শোকের মাতম।

তার স্ত্রী খাদিজা বিবি বলেন, আমার স্বামী বিএনপিকে ভালোবাসতেন। রোববার তিনি মিছিলে গিয়েছিলেন, কিন্তু তাকে হত্যা করা হয়েছে। আমি স্বামী হত্যার চাই।

এদিকে এ ঘটনায় আটক ১০ নেতাকর্মীকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। শহরে এখন থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। জেলা বিএনপি কার্যালয়সহ গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে মোতায়েন করা হয়েছে অতিরিক্ত পুলিশ।

জেলা বিএনপির সভাপতি গোলাম নবী আলমগীর বলেন, গ্রেফতার এড়াতে দলের নেতাকর্মীরা পালিয়েছেন। কেন্দ্রীয় নিদের্শে আমরা পরবর্তী কর্মসূচি পালন করবো।

ভোলার পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম সংবাদ সম্মেলন করে জানান, বিএনপির মিছিল করার অনুমতি ছিল না। তারপরেও তারা সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছে ও পুলিশকে হত্যাচেষ্টা করেছে। পুলিশ ফাঁড়ি পুড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেছে। সংঘর্ষে নিহত ব্যক্তি পুলিশের গুলিতে নয়, মারা গেছেন ইটের আঘাতে।

তবে জেলা বিএনপির সভাপতি গোলাম নবী আলমগীর ও সম্পাদক হারুন অর রশিদ ট্রুম্যানের অভিযোগ, স্বেচ্ছাসেবক কর্মীকে গুলি করে হত্যা করেছে পুলিশ। তাই তারা এ ঘটনার মামলা দায়ের করবেন।

ভোলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ফরহাদ সরদার বলেন, মামলার আসামিদের গ্রেফতারে অভিযান চালাচ্ছে পুলিশ। দুই মামলায় আসামি উল্লেখ করা হয়েছে চার শতাধিক।

উল্লেখ্য, রোরবার বিএনপি কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে জেলা বিএনপির প্রতিবাদ ও বিক্ষোভ সমাবেশে বাধা দেওয়াকে কেন্দ্র করে পুলিশ ও বিএনপি কর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এতে একজন নিহত ও পুলিশসহ অর্ধশতাধিক আহত হয়।

বাংলাদেশ সময়: ২১১০ ঘণ্টা, আগস্ট ০১, ২০২২/আপডেট: ২১৩৭ ঘণ্টা,
এফআর/এএটি/ইআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।