ঢাকা, সোমবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আইন ও আদালত

কুষ্টিয়ায় পৃথক দুটি হত্যা মামলায় ৬ জনের যাবজ্জীবনসহ অর্থদণ্ড 

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬০৫ ঘণ্টা, আগস্ট ১১, ২০২২
কুষ্টিয়ায় পৃথক দুটি হত্যা মামলায় ৬ জনের যাবজ্জীবনসহ অর্থদণ্ড 

কুষ্টিয়া: কুষ্টিয়া মডেল থানা ও কুমারখালী থানার পৃথক দুটি হত্যা মামলায় ছয় জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ডসহ অর্থদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত।
বৃহষ্পতিবার (১১ আগস্ট) দুপুরে কুষ্টিয়া জেলা ও দায়রা জজ অতিরিক্ত আদালত-১-এর বিচারক তাজুল ইসলাম এবং বিশেষ জজ আদালতের বিচারক আশরাফুল ইসলাম এই রায় দেন।

এ সময় আসামিরা আদালতে উপস্থিত ছিলেন।  

রায়ে কারাদণ্ডসহ ২৫ হাজার টাকা এবং ১০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও এক বছর সাজার আদেশ দিয়েছেন আদালত।

কুষ্টিয়া মডেল থানার ডা. সানাউর রহমানকে (৫৭) হত্যায় চাঞ্চল্য সৃষ্টির মামলায় যাবজ্জীবন সাজা প্রাপ্তরা হলেন- কুষ্টিয়া সদর উপজেলার খাজানগর গ্রামের বাসিন্দা মজিবর রহমান ব্যাপারীর ছেলে আজিজুল ইসলাম (২৫), আব্দুর রহমান ওরফে কালা কাজীর ছেলে সাইজুদ্দিন কাজী (৩০), কবুরহাট দোস্তপাড়ার আব্দুস সামাদ সরদারের ছেলে জয়নাল সরদার (৩৮) এবং খাজানগর মাদ্রাসাপাড়ার আজিজুল হক খানের ছেলে সাইফুল ইসলাম খান (৩০)।

অপরদিকে কুমারখালী থানার ব্যবসায়ী রিয়াজুল উপজেলার বাড়াদি গ্রামের বাসিন্দা মৃত আইনুদ্দিন বিশ্বাসের ছেলে সিফাত বিশ্বাস (৫০) এবং মৃত জয়েন বিশ্বাসের ছেলে ওয়াসিম আলি (৩৭)।

আদালতের মামলা সূত্রে জানা যায়, ২০১৬ সালের ২০ মে, সকাল পৌনে ১০টায় সদর উপজেলার মৃত বজলুর রহমানের ছেলে হোমিও চিকিৎসক মীর সানাউর রহমান তার সহযোগী কুষ্টিয়া ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সাইফুজ্জামানসহ নিজ দাতব্য চিকিৎসা কেন্দ্র বটতৈল শিশির মাঠ এলাকায় পৌঁছালে পেছন থেকে আসামিরা পরিকল্পিতভাবে হামলা চালান। আসামিরা ধারালো চাপাতিসহ রড ও লাঠিসোটা ব্যবহার করে কুপিয়ে রক্তাক্ত ও জখম করে ফেলে রেখে যান তাদের দুজনকে। পরে স্থানীয়রা টের পেলে গুরুতর আহত দুজনকে উদ্ধার করে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে নিলে সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক মীর সানাউর রহমানকে মৃত ঘোষণা করেন। গুরুতর আহত ইবি শিক্ষক আশঙ্কাজনক অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি হন। এঘটনায় নিহতের ছোট ভাই মীর আনিসুর রহমান বাদী হয়ে ২১ মে কুষ্টিয়া মডেল থানায় অজ্ঞাতনামা আসামিদের নামে হত্যা মামলা করেন।  
মামলাটি তদন্ত শেষে ২০১৭ সালের ৩০ এপ্রিল কুষ্টিয়া মডেল থানার উপ পুলিশ পরিদর্শক আজিজুর রহমান আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন। সেখানে তদন্ত প্রতিবেদনের পর্যবেক্ষণে ঘটনাটিকে সাম্প্রদায়িক, কতিপয় ধর্মান্ধ ব্যক্তিদের দ্বারা ঘটেছে বলে রহস্য উন্মোচিত হয়েছে মন্তব্য করেন তদন্তকারী কর্মকর্তা।  

অপরদিকে ২০১৭ সালের ২৩ এপ্রিল বিকেল ৫টার সময় কুমারখালী থানার বাড়াদি গ্রামে প্রতিবেশী ব্যবসায়ী বিয়াজুল (৫৫) কে উচ্চশব্দে সাউন্ড বক্স বাজানোকে কেন্দ্র করে সৃষ্ট দ্বন্দ্বের জেরে প্রতিবেশীকে হামলা ও ধারালো চাকুর আঘাতে ঘটনাস্থলেই হত্যা করা হয়। এঘটনায় নিহতের ছেলে শহিদুল ইসলাম বাদি হয়ে ২৪ এপ্রিল কুমারখালী থানায় ৯জনের নামোল্লেখসহ হত্যা মামলা করেন। মামলাটি তদন্ত শেষে কুমারখালী থানা পুলিশের উপ পুলিশ পরিদর্শক দীলিপ কুমার বিশ্বাস ২০১৭ সালে ১০ সেপ্টেম্বর আসামিদের বিরুদ্ধে হত্যাকাণ্ডে জড়িত বলে অভিযোগ পত্র দাখিল করেন আদালতে। বিষয়টি নিশ্চিত করে কুষ্টিয়া জেলা ও দায়রা জজ বিশেষ আদালতের সরকারি কৌসুলি অ্যাড. রফিকুল ইসলাম জানান, ব্যবসায়ী রিয়াজুল হত্যা মামলায় সাক্ষ্য শুনানি শেষে দুই আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় তাদের যাবজ্জীবন কারাদণ্ডসহ ১০হাজার টাকা অর্থদণ্ড অনাদায়ে আরও ৬মাসের কারাবাসের আদেশ দিয়েছেন আদালত।

কুষ্টিয়া জেলা ও দায়রা জজ আদালতের পিপি অ্যাড. অনুপ কুমার নন্দী জানান, কুষ্টিয়া সদর উপজেলার হোমিও ডাক্তার সানাউর রহমান হত্যা মামলায়  পুলিশের দেওয়া তদন্ত প্রতিবেদনে দীর্ঘ সাক্ষ্য শুনানি শেষে ৪ আসামির বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় তাদের যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ডসহ প্রত্যেকের পৃথকভাবে ২৫হাজার টাকা করে অর্থ দণ্ডাদেশ অনাদায়ে আরও ১বছরের সাজা দণ্ডাদেশ দিয়েছেন আদালত।

বাংলাদেশ সময়: ১৫৫৫ ঘণ্টা, আগস্ট ১১, ২০২২
এসআইএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।