ঢাকা: মোহাম্মদ জুম্মান সিদ্দিকী নামের একজনকে হাইকোর্ট বিভাগের আইনজীবী হিসেবে তালিকাভুক্ত করে বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের জারি করা গেজেট বৈধ বলে হাইকোর্টের দেওয়া রায়ের বিরুদ্ধে আপিলের অনুমতি দিয়েছেন আপিল বিভাগ।
রোববার (আগস্ট) প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর নেতৃত্বে ৫ বিচারপতির আপিল বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
আদালতে রিট আবেদনকারীদের পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার অনীক আর হক। মোহাম্মদ জুম্মান সিদ্দিকীর পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার তানিয়া আমীর।
পরে ব্যারিস্টার অনীক আর হক বলেন, হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আপিলের অনুমতি দিয়েছেন সর্বোচ্চ আদালত। একই সঙ্গে ৪ সপ্তাহের মধ্যে আপিলের সার সংক্ষেপ দিতে বলেছেন। পাশাপাশি আপিলটি শুনানির জন্য ৬ ডিসেম্বর কার্যতালিকায় আসবে। আর আপিল নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত রায় স্থগিত থাকবে।
আইনে ডিগ্রীধারী জুম্মান সিদ্দিকী নিউজিল্যান্ডের হাইকোর্টের প্র্যাকটিশনার।
বাংলাদেশে আইনজীবী হিসেবে পেশা পরিচালনা করতে হলে আইন বিষয়ে ডিগ্রী অর্জনের পর বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের এনরোলমেন্ট (আইনজীবী হিসেবে তালিকাভুক্ত) পরীক্ষায় (এমসিকিউ-লিখিত-মৌখিক) উত্তীর্ণ হতে হয়।
কিন্তু কাউন্সিলের বিধান (বার কাউন্সিল অর্ডার অ্যান্ড রুলস ১৯৭২) অনুসারে বিদেশি হাইকোর্টে আইনজীবী হিসেবে প্র্যাকটিস করেন এমন ব্যক্তিরা বাংলাদেশের হাইকোর্টে সরাসরি আইনজীবী হিসেবে সরকারের দেওয়া গেজেটে প্র্যাকটিস করতে পারবেন। আইনের এই সুযোগ নিয়ে ২০১৯ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর ব্যারিস্টার জুম্মান সিদ্দিকীকে সরাসরি হাইকোর্টের আইনজীবী হিসাবে তালিকাভুক্ত করে বার কাউন্সিল। এ অনুমতির গেজেট (বেসরকারি ব্যক্তি এবং করপোরেশন কর্তৃক অর্থের বিনিময়ে জারীকৃত বিজ্ঞাপন ও নোটিশ সমূহ) ৩১ অক্টোবর জারি করা হয়।
এই গেজেট চ্যালেঞ্জ করে রিট আবেদন করা হয়। রিট আবেদনে সরাসরি হাইকোর্টের আইনজীবী হিসেবে তালিকাভুক্তিতে বার কাউন্সিলের বিধানও চ্যালেঞ্জ করেছেন।
রিট আবেদনটি দায়ের করেন সুপ্রিম কোর্টের দুই আইনজীবী ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন ও অ্যাডভোকেট ইশরাত হাসান।
এরপর প্রাথমিক শুনানি নিয়ে গেজেটের কার্যকারিতা স্থগিত করে চেয়ে রুল জারি করেন হাইকোর্ট। পরে শুনানি শেষে ২০২০ সালের ৮ নভেম্বর রুল খারিজ করে রায় ঘোষণা করেন উচ্চ আদালত।
রায়ে রিটকারী আইনজীবী সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন ও ইশরাত হাসানকে ১০০ টাকা করে জরিমানা করা হয়। হাইকোর্টের দেওয়া ওই রায়ের বিরুদ্ধে ২০২০ সালের ৯ নভেম্বর আপিল বিভাগে আবেদন করেন রিটকারী দুই আইনজীবী।
২০২০ সালের ১১ নভেম্বর হাইকোর্টের রায় স্থগিত করেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। পরে তারা লিভ টু আপিল (আপিলের অনুমতি চেয়ে) করেন। শুনানি শেষে রোববার লিভ টু আপিল মঞ্জুর করেন।
বাংলাদেশ সময়: ১০৫৬ ঘণ্টা, আগস্ট ২১, ২০২২
ইএস/কেএআর