বান্দরবান: বান্দরবানের বসত ভিটার জমি নিয়ে পূর্ব বিরোধের জেরে শাহ আলম নামে এক যুবককে হত্যার দায়ে বাবা, ভাই, ভাবি ও বোনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। সেই সঙ্গে প্রত্যেককে ১০ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে।
সোমবার (২৯ আগস্ট) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে বান্দরবান জেলা ও দায়রা জজ মো. ফজলে এলাহী ভূইয়া এ রায় দেন।
দন্ডপ্রাপ্তরা হলেন- শাহ আলমের বাবা বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার সদর ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের মণ্ডল্যা ঘোনা এলাকার মোজাফ্ফর আহাম্মদ (৬৫), ভাই আরিফ উল্লাহ (৩৫), ভাইয়ের স্ত্রী আছমা ছিদ্দিকা (২৮) ও বোন শাহনাজ বেগম। রায় ঘোষণার সময় আরিফ উল্লাহ ও শাহনাজ আদালতে উপস্থিত ছিলেন। বাকি দু’জন পলাতক।
শাহনাজ কক্সবাজার জেলার রামু উপজেলার কচ্ছপিয়া ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের তুলাতলী এলাকার মো. হোসেন কালুর স্ত্রী।
বান্দরবান জেলা ও দায়রা জজ আদালতের ভারপ্রাপ্ত প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. কামরুল হাসান জানান, ২০১৬ সালের ৯ ডিসেম্বর সকাল ৭টার দিকে বসতভিটা নিয়ে বিরোধের জেরে বাবা, ভাই, ভাবি ও বোন মিলে দা, হাতুড়ি, লোহার রড ও লাঠি নিয়ে শাহ আলমের বসতঘরে ঢুকে তাকে কুপিয়ে ও পিটিয়ে আহত করেন। এসময় ঠেকাতে গেলে শাহ আলমের স্ত্রী আরফাতুন্নেছা আরেফা ও মেয়ে জান্নাতুল নাঈমাকেও পেটানো হয়। গুরুতর অবস্থায় শাহ আলমকে উদ্ধার করে প্রথমে নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ও পরে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয় তাকে। সেখানেই চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১৮ ডিসেম্বর ভোরে মৃত্যু হয় তার।
এ ঘটনায় ১৯ ডিসেম্বর নিহত শাহ আলমের স্ত্রী আরফাতুন্নেছা আরেফা বাদী হয়ে ওই চারজনের নামে নাইক্ষ্যংছড়ি থানায় মামলা করেন। তদন্ত শেষে পুলিশ ২০১৭ সালের ৮ নভেম্বর আরিফ উল্লাহ, আছমা সিদ্দিকা, মোজাফ্ফর আহাম্মদ ও শাহনাজ বেগমের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে।
মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের ১৬ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য নেওয়া হয়। শুনানি ও তথ্য প্রমাণের ভিত্তিতে আসামিরা দোষী সাব্যস্ত হওয়ায় সোমবার এ রায় দেন আদালত।
জেলা ও দায়রা জজ আদালতের পিপি অ্যাডভোকেট মো. ইকবাল করিম বলেন, এ রায়ে আমরা সবাই সন্তুষ্ট।
বাংলাদেশ সময়: ১৭০৩ ঘণ্টা, আগস্ট ২৯, ২০২২
এসআই