ঢাকা, রবিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আইন ও আদালত

সাংবাদিকদের সোর্স প্রকাশ না করতে আইন সুরক্ষা দিয়েছে: হাইকোর্ট

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭২৬ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৩, ২০২২
সাংবাদিকদের সোর্স প্রকাশ না করতে আইন সুরক্ষা দিয়েছে: হাইকোর্ট

ঢাকা: সাংবাদিকদের তথ্যের উৎস (সোর্স) প্রকাশ না করার ক্ষেত্রে আইন সুরক্ষা দিয়েছে।

স্বপ্রণোদিত হয়ে জারি করা এক রুলের রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপিতে এমন মতামত দিয়েছেন বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি কাজী মো. ইজারুল হক আকন্দের হাইকোর্ট বেঞ্চ।

 

রায়ে আদালত বলেন, এটা বলতে দ্বিধা নেই যে, সাংবাদিকদের তথ্যের উৎস (সোর্স) প্রকাশ না করার ক্ষেত্রে আইন সুরক্ষা দিয়েছে।  

গত বছরের ২ মার্চ "২০ কোটিতে প্রকৌশলী আশরাফুলের দায়মুক্তি! দুর্নীতি দমনে দুদক স্টাইল" শিরোনামে দৈনিক ইনকিলাবে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।

সেই প্রতিবেদন আদালতের নজরে আনা হলে স্বপ্রণোদিত হয়ে রুল জারি করে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) নথিপত্র তলব করেন হাইকোর্ট। পাশাপাশি প্রতিবেদককে তার তথ্য উপাত্ত দিয়ে সহযোগিতা করতে নির্দেশ দেন।

এ রুলের শুনানিতে চলতি বছরের ২১ জুন দুদকের আইনজীবী খুরশীদ আলম খান ইনকিলাবের প্রতিবেদনকে ‘মাফিয়া জার্নালিজম’ বলে প্রতিবেদকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশনা চান। আর ইনকিলাবের প্রতিবেদকের পক্ষের আইনজীবী শিশির মনির সংবিধানে থাকা সাংবাদিকতার স্বাধীনতা ও বাক স্বাধীনতার বিষয় এবং অনুসন্ধানী সাংবাদিকতায় সোর্স প্রকাশ না করার নীতির কথা তুলে ধরেন।

শুনানিতে হাইকোর্ট বলেন, এটি আদালত অবমাননার মামলা নয়। আর সাংবাদিকের কোনো সংবাদের বিষয়ে অভিযোগ থাকলে আগে প্রেস কাউন্সিলের শরণাপন্ন হতে পারেন। সাংবাদিকের সংবাদের সোর্স আমরা জানতে চাইনি।

শুনানি শেষে উচ্চ আদালত রুল নিষ্পত্তি করে দেন। একইসঙ্গে গণপূর্তের সাবেক প্রধান প্রকৌশলী মো. আশরাফুল আলম ও তার স্ত্রীর জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জন বিষয় অনুসন্ধানে আগের কর্মকর্তাকে বাদ দিয়ে নতুন কর্মকর্তার মাধ্যমে পুনরায় অনুসন্ধানের নির্দেশ দেন।

এ রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি ২৩ অক্টোবর রোববার প্রকাশিত হয়।

রায়ে আদালত বলেন, সংবিধানের ৩৯ অনুচ্ছেদে মত প্রকাশের স্বাধীনতার কথা বলে দেওয়া আছে। গণমাধ্যম রাষ্ট্রের চতুর্থ স্তম্ভ। এটা গণতন্ত্রের অবিচ্ছেদ্য অংশ। আদালত বলেন, আধুনিক বিশ্বে জানার অধিকার সবারই আছে।

রায়ে আদালত আরও বলেন, গণতন্ত্র ও আইনের শাসন রক্ষায় সাংবাদিকদের ভূমিকা অনস্বীকার্য।

গণমাধ্যমের কাজ হলো জগণকে সজাগ করা। বর্তমান সময়ের প্রতিটি ক্ষেত্রে দুর্নীতি ছড়িয়ে পড়ছে। আর এই দুর্নীতির বিরুদ্ধে গণমাধ্যম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।

তবে হলুদ সাংবাদিকতা গ্রহণযোগ্য ও সমর্থনযোগ্য নয় বলেও উল্লেখ করে হাইকোর্ট বলেন, সমাজের প্রকৃত চিত্র তুলে ধরতে গণমাধ্যমের মনোযোগী হওয়া উচিত।

বাংলাদেশ সময়: ১৭২৬ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৩, ২০২২
ইএস/আরআইএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।