ঢাকা, রবিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

মালয়েশিয়া

এবার রাষ্ট্রদূতের বাসার সামনে মারামারি

বাংলানিউজ পলিটিক্যাল ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭৩২ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ৩০, ২০১৫
এবার রাষ্ট্রদূতের বাসার সামনে মারামারি

ঢাকা: এবার দেশের নাম ডুবালেন তারা মারামারি করে। ঈদের পর দিন কুয়ালালামপুরে নিযুক্ত ঢাকার রাষ্ট্রদূত শহীদুল ইসলামের বাসার সামনে আওয়ামী লীগের নাম ভাঙ্গানো দুটি গ্রুপের এই মারামারির ঘটনা ঘটে।



গত শুক্রবার (২৫ সেপ্টেম্বর) বিকেলে মালয়েশিয়ায় প্রবাসী ব্যবসায়ী ও কমিউনিটি নেতাদের নিমন্ত্রণ জানান শহীদুল ইসলাম। এ সময় সেখানে মালয়েশিয়া আওয়ামী লীগ বলে পরিচয় দেয়া কিছু ব্যক্তিও উপস্থিত ছিলেন।

প্রত্যক্ষদর্শীরা বাংলানিউজকে জান‍ান, সন্ধ্যায় খাবার শেষে রাষ্ট্রদূতের বাসভবন থেকে ফিরে যাওয়ার সময় ‘মালয়েশিয়া আওয়ামী লীগ’এর আব্দুল করিম ও মিনহাজউদ্দিন মিরান হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়েন। পরে ঘটনাস্থলে উপস্থিত অন্যরা পরিস্থিতি সামাল দেন।  

আওয়ামী লীগের গঠনতন্ত্রকে বৃদ্ধাঙ্গুল দেখিয়ে কতিপয় ব্যক্তি মালয়েশিয়াতে দলটির সুনাম ক্ষুন্ন করছে বলে অভিযোগ আছে। সূত্র জানায়, বর্তমানে দুটি গ্রুপে বিভক্ত রয়েছে ‘মালয়েশিয়া আওয়ামী লীগ’। আর এই গ্রুপিংয়ের জের ধরেই মারামারির সূত্রপাত।

প্রত্যক্ষদর্শীরা ঢাকায় বাংলানিউজের পলিটিক্যাল করেসপন্ডেন্টকে জানান, হাতাহাতিতে লিপ্ত হওয়া দুজনেই কথিত ‘মালয়েশিয়া আওয়ামী লীগ’এর আহবায়ক কমিটির সদস্য। ইউনিভার্সিটি মালায়াতে আইন বিভাগের শিক্ষার্থী বাংলাদেশি ছাত্র মিনহাজ উদ্দিন মিরানের বাড়ি কক্সবাজার। তিনি এই আহবায়ক কমিটির ২১তম সদস্য। অন্যদিকে তার ওপরে হামলাকারী কুমিল্লার আব্দুল করিম কমিটির নবম সদস্য।

মিনহাজ উদ্দিন মিরান বলেন, রাষ্ট্রদূত শহীদুল ইসলামের একান্ত আমন্ত্রণে তার বাসভবনে যান অনেক প্রবাসী। সেখান থেকে ফেরার পথে আব্দুল করিম ও তার সহযোগীরা অতর্কিতভাবে আমার উপর হামলা চালায়।

সূত্র জানান, মালয়েশিয়াতে স্থানীয় নারীকে বিয়ে করেছেন আব্দুল করিম। ওই এলাকায় বেশ প্রভাবশালী তিনি। এ কারণে সেরদাংয়ের কমিটি দেয়ার বিষয়ে তিনি নিজের পছন্দের প্রার্থী ঘোষণা দিয়েছেন। অন্যদিকে মিরান ‘মালয়েশিয়া আওয়ামী লীগ’এর কেন্দ্রীয় কমিটির বিভিন্ন নেতাদের নিয়ে কমিটিকে প্রভাবিত করতে চান। এসব বিষয়ের রেশ ধরেই মারামারির সূত্রপাত।

এদিকে মিরান অভিযোগ জানিয়েছেন, ঘটনার প্রতিবাদে স্থানীয় থানায় এ নিয়ে পুলিশ রিপোর্ট করতে চাইলে নানাভাবে তাকে হুমকি দেয়া হচ্ছে। একই অভিযোগ পাওয়া গেছে করিমের সহচরদের কাছ থেকেও।

‘মালয়েশিয়ায় আওয়ামী লীগ’এর আহবায়ক কমিটির একজন নেতা বাংলানিউজকে বলেন, ঘটনাস্থলে মিরানও কয়েকজন নিয়ে আব্দুল করিমের ওপর পাল্টা হামলায় উদ্যত হয়।

তিনি জানান, মিরান ছাত্র হিসেবে মালয়েশিয়াতে এলেও পরবর্তীতে এখানে রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়েন। এছাড়াও আদম ব্যবসায়ও জড়িত তিনি।

অন্যদিকে আব্দুল করিম কুয়ালালামপুরে বেশ কয়েকটি নাইট ক্লাবের মালিক। বাংলাদেশ থেকে কম বয়সী মেয়েদের পর্যটক ভিসায় এনে বিভিন্ন ক্লাবে অনৈতিক কাজে বাধ্য করাই তার প্রধান ব্যবসা। অভিযোগের বিষয়ে জানতে বেশ কয়েকবার ফোন দিয়েও পাওয়া যায়নি আব্দুল করিমকে।

২৫ সেপ্টেম্বর এ ঘটনার পর গত ২৮ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্মদিনও দুভাগে পালন করে তথাকথিত এই ‘মালয়েশিয়া আওয়ামী লীগ’।

শুক্রবারের দাওয়াতে বেশ কয়েকজন বাংলাদেশি চিকিৎসক, শিক্ষক ও প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ীও উপস্থিত ছিলেন। তারা বলেন, কিছু দালাল ধরনের লোক মালয়েশিয়াতে আওয়ামী লীগ, বিএনপি্র রাজনীতি করে। দেশে মূল দলের নাম ভাঙ্গিয়ে এখানে প্রবাসীদের সঙ্গে তারা স্রেফ মাস্তানি করে। এরা মালয়েশিয়াতে দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করছে বলে অভিযোগ সুশিক্ষিত বাংলাদেশিদের।

এদিকে দূতাবাস সূত্র জানিয়েছেন, এমন ঘটনায় রাষ্ট্রদূত শহীদুল ইসলাম হতচকিত হয়ে পড়েন। প্রবাসীদের বন্ধু বলে পরিচিত শহীদুল ইসলাম তার বাসা থেকে বের হয়ে এমন ঘটনায় দু:খ প্রকাশ করেন।  

বাংলাদেশ সময়: ১৭৩২ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ৩০, ২০১৫
জেডএম/

** আ’ লীগের নাম ভাঙ্গিয়ে প্রতারণা মালয়েশিয়ায়

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

মালয়েশিয়া এর সর্বশেষ