কুয়ালালামপুর থেকে: মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশি স্টুডেন্ট নাইটের দ্বিতীয় পারফরম্যান্স। চার সদস্যের ব্যান্ডদল মিডনাইট চিলড্রেন মঞ্চে।
গ্যালারির দর্শক-শ্রোতা হা করে গান দেখলেন-শুনলেন। মঞ্চ থেকে নামতেই ধরে ফেললাম। নাম হায়দার আখমেদি। জন্ম রাশিয়ার তাতারাস্তান প্রদেশে। মুচকি হাসিতে বাংলায় বললেন, ‘আপনি কেমন আছেন? এরপর আমার সেই বড় জিজ্ঞাসা তার কাছে, কীভাবে তার বাংলার প্রতি এতো ভালোবাসা, বাংলাদেশের প্রতি টান?
হায়দার জানান, প্রথমে মালয়েশিয়ায় বিশ্ববিদ্যালয়ে যখন তিনি পড়তে আসেন, তার সঙ্গে বাংলাদেশি বেশ কিছু সহপাঠীর পরিচয় হয়। তিনি আশ্চর্য হন বাংলাদেশিরা রাশিয়া সম্পর্কে অনেক কিছু জানেন। এমনকি তার প্রদেশের ব্যপারেও বাংলাদেশি বন্ধুদের অনেক জ্ঞান।
তবে নিজের বেলায় ব্যপারটা ছিল বেশ উল্টো। বাংলাদেশ বলে যে একটি দেশ আছে তিনি সেটা জানতেন, তবে পৃথিবীর মানচিত্রে কোথায় তার অবস্থা তা মোটেই জানা ছিল না। অট্টহাসিতে হায়দার বলেন, আমি মনে করেছিলাম এই দেশটি ভুটানের কোলঘেঁষে হিমালয়ের কাছাকাছি হবে। আস্তে আস্তে নিজ থেকে বাংলাদেশের প্রতি মনোযোগ বাড়তে থাকে।
রাশিয়ায় হায়দার সংগীতের উপর পড়াশোনাসঙ্গে পরিচয় হয় তিনি মুগ্ধ হতে থাকেন। বাংলানিউজকে তিনি বলেন, প্রতিটি গান বেশ অর্থবহুল, যা আমাকে ভীষণভাবে আকৃষ্ট করে। গানগুলো ভারতের বলিউডের গানের মতো অর্থহীন নয়। আর সুরগুলো মাথায় গেঁথে থাকার মতো।
বাংলাদেশের প্রতি ভালোবাসা কয়েক মাস আগে তাকে টেনে নিয়েছিলো বাংলাদেশে। ঢাকার রাস্তায় ঘুরে বেড়িয়েছেন। ঘুরে বেড়িয়েছেন যশোর ও খুলনায়। রসমালাইর কথা তিনি এখনো ভুলতে পারেননি।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের সবাই সংগীত ভালোবাসে। আমি যখন বাংলায় গান শোনাতাম তারা খুশি হয়ে আমাকে রান্না করে খাওয়াতেন।
তিনি জানান, বাংলাদেশের ফোক সংগীতের সঙ্গে তার প্রদেশ তাতারাস্তানের সংগীতের বেশ মিল রয়েছে। হায়দারের মায়ের এখন পছন্দের একটি গান হলো ‘পুরানো সেই দিনের কথা...’
হাস্যোজ্জ্বল এই যুবকের মুখে বাংলাদশের প্রশংসা শুনতে বেশ ভালো লাগলো।
আগামীতে আবার বাংলাদেশি গান নিয়ে মঞ্চে উঠবেন বলে কথা দিলেন হায়দার। বর্তমানে তিনি মালয়েশিয়ার আন্তর্জাতিক ইসলামিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ব্যাংকিং ও ফাইন্যান্স বিষয়ে পড়ছেন।
বাংলাদেশ সময়: ২০৪০ ঘণ্টা, নভেম্বর ০৩, ২০১৫
এএ