বগুড়া: রাজশাহী বিভাগে অনির্দিষ্টকালের পরিবহন ধর্মঘটের প্রথম দিনে বগুড়া থেকে সব রুটে বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১ ডিসেম্বর) সকাল থেকে শুরু হওয়া এ ধর্মঘটে ঢাকাসহ সব রুটে যোগাযোগ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।
মহাসড়কে অবৈধ যানবাহন চলাচল বন্ধসহ ১১ দফা দাবিতে রাজশাহী বিভাগীয় ধর্মঘট চলায় সকাল থেকেই জেলার অভ্যন্তরীণ ও দূরপাল্লার কোনো যানবাহন বগুড়া ছেড়ে যাচ্ছে না। ধর্মঘটের কারণে বগুড়া থেকে সব রুটের বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে। এতে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন যাত্রীরা। যাত্রীদের এ দুর্ভোগের সুযোগ নিয়ে সিএনজিচালিত অটোরিকশার চালকরা দুই থেকে তিন গুণ বেশি ভাড়া দাবি করছেন।
সরেজমিনে দেখা যায়, বগুড়া থেকে বিভিন্ন গন্তব্যে যাওয়ার উদ্দেশে বগুড়ার চারমাথা, ঠনঠনিয়া ও বনানী বাসস্ট্যান্ডে আসেন যাত্রীরা। তবে বাস টার্মিনালে সব বাস সারিবদ্ধভাবে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়। ব্যস্ততা না থাকায় পরিবহন শ্রমিকরা সড়কের পাশে আড্ডায় মেতে ওঠে। সড়কে পণ্যবাহী বাহনের ব্যস্ততা ছিল প্রতিদিনের মতোই স্বাভাবিক। তুলনামূলক অন্যদিনের চাইতে মূল সড়কগুলো ফাঁকাই ছিল। এদিকে সড়কে ছিল পর্যাপ্ত যাত্রী। অনেকেই দূরপাল্লার যানের জন্য অপেক্ষা করেন। অনেকেই ফিরেও যান। আবার কেউ কেউ ঝুঁকি নিয়ে ট্রাক যাত্রা বেছে নেন। অন্যদিকে ধর্মঘটের ফলে চাপ পড়েছে ট্রেনে। বিভিন্ন রুটের ট্রেনের টিকিট ইতোমধ্যে শেষ হয়েছে। টিকিট না পেয়ে অনেকে দাঁড়িয়েই রওনা দিচ্ছেন।
নাটোরের উদ্দেশে যাত্রা করা ব্যবসায়ী মিরাজ আহমেদ জানান, ব্যবসায়িক কাজে জরুরি ভিত্তিতে তার নাটোর যাওয়া প্রয়োজন। শহরের খান্দার এলাকায় বসবাস করেন তিনি। দুপুরে তিনি শহরের তিনমাথায় আসেন বাসে করে নাটোরের উদ্দেশে যাবেন বলে। কিন্তু এসে দেখেন ও জানতে পারেন বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে। তিনি বিকল্পভাবে সিএনজিতে যাওয়ার চেষ্টা করলেও অতিরিক্ত ভাড়া তাতে বাধ সাধে। জরুরি কাজ থাকা সত্ত্বেও যাত্রা করতে না পারায় তিনি নিরুপায় হয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছেন।
শহরের বনানী মোড়ে অপেক্ষা করা সিরাজগঞ্জের যাত্রী হান্নান মিয়া ও আবু সাঈদ জানান, অনেক সময় অপেক্ষা করেও কোনো যানবাহন পাননি তারা। কয়েক দিন পর পর পরিবহন শ্রমিক ও মালিকরা ধর্মঘটের ডাক দেন। এতে অন্য কারও কিছু না হলেও যাত্রীদের হয়রানি ও ভোগান্তির শিকার হতে হয়। পরিবহন শ্রমিক ও মালিকদের কাছে যাত্রীরা জিম্মি হয়ে পড়েছেন বলেও মন্তব্য করেন তারা ৷
রাজশাহী বিভাগীয় পরিবহন মালিক শ্রমিক যৌথ কমিটির সাধারণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম জানান, মহাসড়কে নছিমন, করিমন, ভটভটিসহ অবৈধ যানবাহন চলাচল বন্ধসহ কয়েক দফা দাবিতে আল্টিমেটাম দিয়ে ধর্মঘটের কথা বলা হয়েছিল। কিন্তু বেঁধে দেওয়া সময়ে দাবি পূরণ হয়নি। এ কারণে বৃহস্পতিবার সকাল ৬টা থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য ধর্মঘট চলছে। ধর্মঘটের আওতায় থাকবে সব যাত্রী ও পণ্যবাহী পরিবহন। এরইমধ্যে যদি দাবির পক্ষে আশ্বাস পাওয়া যায় তাহলে ধর্মঘট প্রত্যাহার করা হবে। নয়তোবা দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত এ ধর্মঘট চলবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৬১৪ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০১, ২০২২
কেইউএ/আরবি