এস. আলম গ্রুপের সম্পদ মূল্যায়ন নিয়ে চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসককে (ডিসি) উদ্বৃত করে ডেইলি স্টারে প্রকাশিত সংবাদে বিস্ময় প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ড. আহমদ কায়কাউস ও চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক (ডিসি) মোহাম্মদ মমিনুর রহমান। তারা পৃথকভাবে বলেছেন, ডেইলি স্টারের মতো পত্রিকার কাছে এরকম অসত্য সংবাদ প্রত্যাশিত ছিল না।
মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ড. আহমদ কায়কাউস বলেন, ডেইলি স্টারের সংবাদ পড়ে ‘আই অ্যাম সারপ্রাইজড’। আমি বিস্মিত। এ ধরনের কোনো নির্দেশনা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আমাকে দেননি। আমিও চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসককে (ডিসি) কোনো কথা বলিনি। কোনোভাবেই ডেইলি স্টারের মতো একটি পত্রিকার কাছে এমন অসত্য সংবাদ প্রত্যাশিত ছিল না।
ওই সংবাদের প্রতিবাদ জানিয়ে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের প্রেস উইং থেকে ডেইলি স্টারে একটি চিঠি (ইংরেজিতে) পাঠানো হয়। সম্পাদক বরাবর পাঠানো ওই চিঠিতে বলা হয়, ৬ ডিসেম্বর ডেইলি স্টারে এস আলম গ্রুপের সম্পদের তদন্ত বিষয়ক একটি সংবাদ আমাদের নজরে এসেছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তাঁর মুখ্য সচিব আহমদ কায়কাউসের নাম জড়িয়ে প্রকাশিত সংবাদটি সম্পূর্ণ অসত্য ও অতিরঞ্জিত; কারণ এস আলম গ্রুপের সম্পদ খতিয়ে দেখার জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ থেকে চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসককে কোনো নির্দেশনা দেওয়া হয়নি। সংবাদটি প্রকাশের আগে ডেইলি স্টার মুখ্য সচিবের সঙ্গে যোগাযোগ করেনি। চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসকের সঙ্গে ডেইলি স্টার যোগাযোগ করলে তিনি সুস্পষ্টভাবে জানিয়ে দেন যে, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে তিনি ওরকম কোনো নির্দেশনা পাননি। এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক তাঁর অধস্তনদেরও কোনো নির্দেশনা দেননি। তা সত্ত্বেও আপনার পত্রিকা মিথ্যা সংবাদটি ছেপেছে যা খুবই শংকাজনক ও অসদুদ্দেশ্যপ্রণোদিত। মনে হয় তথাকথিত সূত্রগুলোর কল্পনা ও বক্তব্যের ভিত্তিতে ইচ্ছাকৃতভাবে সংবাদটি তৈরি করা হয়েছে। আপনার পত্রিকার এ ধরনের মিথ্যা ও অতিরঞ্জিত সংবাদ প্রকাশনার আমরা তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি। আমরা আশা করি, ডেইলি স্টার ভবিষ্যতে কোনো সংবাদ প্রকাশের সময় নির্ভুল ও বিশ্বাসযোগ্য তথ্য ব্যবহার করবে। মেহেরবানী করে প্রতিবাদলিপিটি আগামীকাল ৭ ডিসেম্বর যথাযথভাবে প্রকাশ করুন। ধন্যবাদ। ’
এদিকে কোন শিল্প গ্রুপের সম্পত্তি বা জায়গা জমির খোঁজ নেওয়ার জন্য কাউকে লিখিত কিংবা মৌখিক নির্দেশনা দেওয়া হয়নি বলে জানিয়েছেন চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক (ডিসি) মোহাম্মদ মমিনুর রহমান। মঙ্গলবার বিকেলে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, গতকাল চিফ রিপোর্টার অব ডেইলি স্টার মি পার্থ আমাকে ফোন করেন। আমি তাকে ক্লিয়ারলি বলেছি, এস আলম কেন, কোনো শিল্প প্রতিষ্ঠান, ব্যবসায়ী বা ব্যবসায়ী সম্পর্কে কোনো ধরনের খোঁজ-খবর নেওয়া হচ্ছে না। সেটা জমিজমা হোক, সম্পত্তি হোক। খোঁজ-খবর নেওয়ার জন্য লিখিত বা মৌখিক হোক কোনো নির্দেশনা আমাদের কাছে আসেনি। কেউ দেননি, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে কেউ বলেননি। ভূমি মন্ত্রণালয় থেকেও কেউ বলেননি। কিংবা সরকারি অন্য কোনো দপ্তর থেকেও কোনো গ্রুপের সম্পদ বা কোনো কিছুর বিষয় নিয়ে খোঁজখবর নিতে বলা হয়নি। এ বিষয় নিয়ে লিখিত কিংবা মৌখিক কোনো আদেশ আমাদের কাছে আসেনি। আমরাও কাউকে এ ধরনের আদেশ নির্দেশ দেইনি। এটি ডেইলি স্টার কিভাবে লিখেছে, তারা ভালো জানে। আমাদের পক্ষ থেকেও লিখিত বা মৌখিক নির্দেশনা দেওয়া হয়নি।
বাংলাদেশ সময়: ২১২৮ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০৬, ২০২২
নিউজ ডেস্ক