বরগুনা: ঝালকাঠির সুগন্ধা নদীতে এমভি অভিযান-১০ লঞ্চে অগ্নিকাণ্ডের এক বছর পরে নিহত ১৪ জন স্বজনদের দেড় লাখ টাকা করে মোট ২১ লাখ টাকার চেক হস্তান্তর করা হয়।
মঙ্গলবার (২৭ ডিসেম্বর) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সুবর্ণজয়ন্তী সম্মেলন কক্ষে নৌ-দুর্যোগ তহবিল ট্রাস্টি বোর্ডের সহযোগিতায় ও জেলা প্রশাসনের আয়োজনে এ চেক বিতরণ করা হয়।
ডিএনএ টেস্টে শনাক্ত হওয়া নিহত ১৪ পরিবারের মধ্যে দেড় লাখ টাকা করে মোট ২১ লাখ টাকার চেক হাতে তুলে দেন জেলা প্রশাসক হাবিবুর রহমান। চেক বিতরণ অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (এডিএম) শুভ্রা দাস।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন, বিআইডব্লিউটিএ এর বরগুনা বন্দর কর্মকর্তা নিয়াজ মোহাম্মদ খান, হিসাব কর্মকর্তা আসাদুল হক, হিসাব সহকারী আমিনুর রহমান।
জেলা প্রশাসক হাবিবুর রহমান বলেন, চাকরি জীবনে এমন মর্মান্তিক দৃশ্য আমি দেখিনি। এমন মর্মান্তিক ঘটনায় সংশ্লিষ্টরা ছাড়া আর কেউ অনুভব করতে পারবে না। এরই অংশ হিসেবে এই পরিবারগুলোকে ক্ষতিপূরণ দিয়ে সাথে থাকার ক্ষুদ্র প্রয়াস মাত্র। লঞ্চ দুর্ঘটনা থেকে এড়াতে ত্রুটিপূর্ণ যান চলাচল নিশ্চিত করতে জেলা প্রশাসন সব ধরনের ব্যবস্থা নিবে। প্রয়োজনের মোবাইল কোর্ট অব্যাহত থাকবে।
এ সময় নিহতদের স্বরণে পোটকাখালী গণকবরে স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণের দাবি জানান উপস্থিত সাংবাদিকরা।
উল্লেখ্য, গত বছরের ২৩ ডিসেম্বর দিবাগত রাতে ঝালকাঠির সুগন্ধা নদীতে ঢাকা থেকে বরগুনাগামী এমভি অভিযান-১০ লঞ্চে ইঞ্জিন রুমে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। মুহূর্তের মধ্যেই আগুন ছড়িয়ে পড়ে পুরো লঞ্চে। আগুনে দগ্ধ হয়ে মারা যান ৪৯ যাত্রী।
তাদের মধ্য থেকে ২৬ যাত্রীর মরদেহের পরিচয় শনাক্ত করে স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়। আরও ২৩ মরদেহের নমুনা সংগ্রহ করা হয়। শনাক্ত না হওয়া মরদেহগুলোর নমুনা সংগ্রহ করে বরগুনার পোটকাখালী গণকবরে অজ্ঞাত পরিচয়ে দাফন করা হয়। দাফন করা ২৩ মরদেহের ডিএনএ পরীক্ষার মাধ্যমে পরিচয় শনাক্তের জন্য ৪৭ জন স্বজনের নমুনা সংগ্রহ করে সিআইডি। ডিএনএ টেস্টের মাধ্যমে চলতি বছরের জুলাই মাসে অজ্ঞাত পরিচয় দাফন হওয়া ১৪ মরদেহের পরিচয় শনাক্ত করা হয়েছে। এই ১৪ জনের প্রত্যেকের পরিবারকে আজ দেড় লাখ টাকার চেক হস্তান্তর করা হয়।
এর আগে শনাক্ত করে নিয়ে যাওয়া ১৮ মরদেহর পরিবারকে নৌ পরিবহন তহবিল ট্রাস্টি বোর্ড হতে দেড় লাখ টাকার চেক হস্তান্তর করা হয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৪২৩ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৭, ২০২২
এসএম