ঢাকা, শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

পাটগ্রামে বীর মুক্তিযোদ্ধা হত্যার ঘটনায় যুবক গ্রেফতার

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭২৩ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৩, ২০২৩
পাটগ্রামে বীর মুক্তিযোদ্ধা হত্যার ঘটনায় যুবক গ্রেফতার

লালমনিরহাট: লালমনিরহাটের পাটগ্রাম মহিলা কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ বীর মুক্তিযোদ্ধা এম ওয়াজেদ আলী হত্যা মামলায় আলমগীর হোসেন আব্দুল্লাহ (২৮) নামে এক যুবককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

সোমবার (২৩ জানুয়ারি) সকালে পাটগ্রাম পৌরসভার সাহেবডাঙ্গা এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।

এর আগে শুক্রবার (২০ জানুয়ারি) রাতে পাটগ্রাম পৌরসভার নিউ পূর্বপাড়ায় নিজ বাসার গেটের সামনে এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। পরে শনিবার (২১ জারুয়ারি) রাতে নিহতের ছেলে রিফাত হাসান বাদি হয়ে একজনের নামসহ কয়েকজনকে অজ্ঞাত অভিযুক্ত করে পাটগ্রাম থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন।

নিহত বীর মুক্তিযোদ্ধা এম ওয়াজেদ আলী পাটগ্রাম পৌরসভার নিউ পূর্বপাড়া এলাকার বাসিন্দা। তিনি পাটগ্রাম মহিলা কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ ও লালমনিরহাট-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আবেদ আলীর ছোট ভাই। তিনি জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক উপ কমান্ডার ছিলেন।

গ্রেফতার যুবক আলমগীর হোসেন আব্দুল্লাহ পাটগ্রাম পৌরসভার রসুলগঞ্জ নিউপুর্বপাড়া এলাকার মৃত আব্দুল মতিনের ছেলে। তিনি এ মামলার প্রধান অভিযুক্ত নাহিদুজ্জামান প্রধান বাবুর ঘনিষ্ট বন্ধু।

মামলায় উল্লেখিত একমাত্র অভিযুক্ত নাহিদুজ্জামান প্রধান ওরফে বাবু (২৫) পাটগ্রাম পৌরসভার রসুলগঞ্জ নিউপুর্বপাড়া এলাকার আব্দুস সামাদ প্রধানের ছেলে। তিনি স্থানীয় ফাতেমা প্রি ক্যাডেট কিন্ডার গার্টেন স্কুলের চাকুরীচ্যুত সহকারী শিক্ষক।

মামলার এজাহার, পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, পাটগ্রাম মহিলা কলেজের প্রতিষ্ঠা অধ্যক্ষ হিসেবে অবসর গ্রহণের পর এলাকায় ফাতেমা প্রি ক্যাডেট কিন্ডার গার্টেন স্কুল নামে একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা করেন বীর মুক্তিযোদ্ধা এম ওয়াজেদ আলী। এ প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ ও পরিচালক পদে দায়িত্ব পালন করেন তিনি। সেই প্রতিষ্ঠানের সহকারী শিক্ষক নাহিদুজ্জামান প্রধান বাবুকে গুরুতর অপরাধে সহকারী শিক্ষক পদ থেকে চাকুরীচ্যুত করা হয়। বিষয়টি বেশ বিতর্ক ও সমালোচনা সৃষ্টি হয়। এতে এম ওয়াজেদ আলীর বিরুদ্ধে ক্ষেপে যান নাহিদুজ্জামান প্রধান বাবু।

এরই জের ধরে শুক্রবার রাতে অজ্ঞাত সন্ত্রাসীদের নিয়ে এম ওয়াজেদ আলীর বাসার সামনে গোপনে অবস্থান নেন নাহিদুজ্জামান প্রধান। রাত ১০টার দিকে শহরের কাজ শেষে বাসার সামনে পৌছলে নাহিদুজ্জামান প্রধানসহ বাকি অভিযুক্তরা ধারালো অস্ত্র দিয়ে এম ওয়াজেদ আলীকে কুপিয়ে হত্যা করে পালিয়ে যান। তার আত্নচিৎকার স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে পাটগ্রাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিলে সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।

খবর পেয়ে পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে লালমনিরহাট সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠায়। ঘটনা অনুসন্ধানে মাঠে নামে পুলিশ। শনিবার (২১ জানুয়ারি) পাটগ্রাম টিএন উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে নামাজে জানাজা শেষে জগতবেড় ইউনিয়নে নিহতের গ্রামের বাড়ির পারিবারিক কবরস্থানে এম ওয়াজেদ আলীকে রাস্ট্রিয় মর্যদায় দাফন করা হয়।

ঘটনার একদিন পর শনিবার (২১ জানুয়ারি) রাতে নাহিদুজ্জামান প্রধানের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতদের বিরুদ্ধে পাটগ্রাম থানায় একটি হত্যা মামলা (নং-১৪; তারিখ ২২-০১-২০২৩) দায়ের করেন নিহতের ছেলে রিফাত হাসান।

গোপন সংবাদের ভিত্তিতে সোমবার সকালে আলোচিত এ মামলার প্রধান অভিযুক্ত নাহিদুজ্জামান প্রধান বাবুর ঘনিষ্ট বন্ধু আলমগীর হোসেন আব্দুল্লাহকে গ্রেফতার করে পাটগ্রাম থানা পুলিশ।

পাটগ্রাম থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ওমর ফারুক বাংলানিউজকে বলেন, প্রধান অভিযুক্ত নাহিদুজ্জামান প্রধান বাবুর ঘনিষ্ট বন্ধু এ মামলার অজ্ঞাত অভিযুক্ত আলমগীর হোসেন আব্দুল্লাহকে গ্রেফতার করা হয়েছে। রিমান্ডের আবেদনসহ তাকে আদালতে পাঠানো হচ্ছে। একই সঙ্গে এ মামলার প্রধান অভিযুক্তকেও গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।

আরও পড়ুন >>> চাকরি হারানোর ক্ষোভে বীর মুক্তিযোদ্ধাকে কুপিয়ে হত্যা!

বাংলাদেশ সময়: ১৭২২ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৩, ২০২৩
এফআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।