খুলনা: খুলনা মেডিকেল কলেজ (খুমেক) হাসপাতালের গেট থেকে নবজাতক চুরি হওয়ার ঘটনার একদিন পার হয়ে গেলেও উদ্ধার হয়নি নবজাতক।
মঙ্গলবার (২৪ জানুয়ারি) বিকেলে হাসপাতালের জরুরি বিভাগের গেটের সামনে থেকে নবজাতক চুরি হওয়ার পর থেকে জরুরি বিভাগের সামনে অবস্থান করছেন নবজাতকের মা-বাবাসহ পরিবারের সদস্যরা।
এদিকে এ ঘটনায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে।
খুমেক হাসপাতালের পরিচালক মো. রবিউল হাসান বলেন, নবজাতক চুরির ঘটনায় আবাসিক কর্মকর্তা সুহাস রঞ্জন হালদারকে প্রধান করে তিন সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্তে যদি কারও কর্তব্যে কোনো গাফিলতি পাওয়া যায় তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। নবজাতকের খোঁজ নেওয়ার ব্যাপারে প্রশাসনকে সবধরনের সহযোগিতা করা হচ্ছে।
নবজাতকের বাবা তোরাব আলী বলেন, আমার গ্রামের বাড়ি বাগেরহাটের ফকিরহাটের পিলজঙ্গে। সকাল সাড়ে ১০টার দিকে খুমেক হাসপাতালে আমার স্ত্রীকে নিয়ে আসি। দুপুর ১টা ৪০ মিনিটের দিকে আমার ছেলের জন্ম হয়। বিকেলে হাসপাতাল থেকে নবজাতক নিয়ে গ্রামের বাড়ি যাওয়ার জন্য অ্যাম্বুলেন্স ঠিক করতে যাই। তখন চালকের সঙ্গে ভাড়া নিয়ে কথা কাটাকাটি হয়। পরে সেই চালক অ্যাম্বুলেন্স নিয়ে এসে আমাদের নিয়ে যেতে চায়। কিন্তু তিনি আমাদের যে অ্যাম্বুলেন্স দেখিয়েছেন সেটা না এনে ছোট গাড়ি নিয়ে আসেন। তখন আমার শ্বশুর বলেন আপনার গাড়ি ছোট এতে আমাদের হবে না। আমরা অন্য গাড়ি নিয়ে যাব। কিন্তু অ্যাম্বুলেন্সের চালক তা শুনতে রাজি নয়। তিনি বলেন যেমন টাকা দেবেন তেমন গাড়ি পাবেন। এ নিয়ে আমাদের সঙ্গে ওই চালক ও তার লোকদের সঙ্গে কথা কাটাকাটি হতে হতে মারামারি শুরু হয়ে যায়। আমার স্ত্রীর বোনের কাছে বাচ্চা ছিল। সে যখন দেখে আমাদের মারছে তখন অস্থির হয়ে যায়। তার পাশে থাকা এক নারী তাকে বলেন আমার কাছে বাচ্চা দিয়ে ওদের ঠেকান। আমার স্ত্রীর বোন ওই নারীকে তার ভাবি মনে করে বাচ্চা দিয়ে মারামারি ঠেকাতে যান। মারামারি শেষে এসে দেখি বাচ্চাসহ সেই নারী আর নেই।
তিনি বলেন, পুলিশ, র্যাবের কাছে গিয়েছি আমরা। একদিনেও কেউ আমাদের সন্তান ফিরিয়ে দিতে পারেনি। ১১ বছর পর আমাদের ছেলেটি হয়েছে। আমরা জানি না সে বেঁচে আছে কিনা মরে গেছে। আমরা আর এ কষ্ট সহ্য করতে পারছি না।
বুধবার (২৫ জানুয়ারি) সন্ধ্যা ৬টা ১০ মিনিটে নবজাতকের মামা মোস্তফা বাংলানিউজকে বলেন, প্রশাসনের দ্বারে দ্বারে ঘুরেও আমরা শিশুটিকে পাইনি। কাঁদতে কাঁদতে আমার বোন ও দুলা ভাই শক্তি হারিয়ে ফেলেছেন।
এ ঘটনায় নবজাতকের নানা বেলায়েত হোসেন বাদী হয়ে সোনাডাঙ্গা মডেল থানায় মামলা করার জন্য অবস্থান করছেন।
সোনাডাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মমতাজুল হক বাংলানিউজকে বলেন, বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে নিয়ে নবজাতক উদ্ধারের
জন্য পুলিশের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৯১৭ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৫, ২০২৩
এমআরএম/আরআইএস