ঢাকা, শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

সেতু নির্মাণে বাঁধ, কৃষকের মাথায় হাত

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০৩৩ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ৫, ২০২৩
সেতু নির্মাণে বাঁধ, কৃষকের মাথায় হাত

ফেনী: ফেনীর ফুলগাজীতে একটি সেতু নির্মাণে অব্যবস্থাপনার কারণে বিপদে পড়েছেন শতাধিক কৃষক। ফসলহীন হয়ে পড়েছে তাদের আবাদি জমি।

এতে মাথায় হাত দিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন তারা।  

উপজেলার গতিয়া খাল (স্থানীয়ভাবে বামন আলী খাল নামে পরিচিত) উপর ৩ কোটি টাকা ব্যয়ে একটি সেতু নির্মাণ কাজ চলছে।  
সেজন্য চলতি বছরের ২০ জানুয়ারি মাসে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে খারের পানি প্রবাহ। ফলে চলতি বোরো মৌসুমে ধানচাষ মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে বলে আক্ষেপ করছেন কৃষকেরা।

স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগের উপজেলা প্রকৌশলী ও ঠিকাদার বলছেন, পানিপ্রবাহ বন্ধ না করে সেতুর কাজ এগিয়ে নেওয়া সম্ভব নয়। এটি বন্ধ থাকবে আরও ১০/১২ দিন।  

অন্যদিকে কৃষক বলছেন বিকল্প ব্যবস্থা রেখেও চলতে পারত সেতু নির্মাণ কাজ।  

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, দরবারপুর ইউনিয়নে স্থানীয় ‘পান্না পাথর’ শুকিয়ে গেছে। খালের মাঝে বাঁধ দিয়ে পানি আটকে চলছে সেতুর গার্ডার ও টপ স্ল্যাপের ঢালাই। নির্মাণাধীন সেতুর ডানদিকে বিকল্প চলাচলের পথ করা হয়েছে।

কৃষকদের অভিযোগ, বিকল্প সড়ক নির্মাণের সময় দেওয়া হয়নি পানি প্রবাহে উপযুক্ত পাইপ।  

মুহুরী সেচ প্রকল্পের ফুলগাজী উপজেলা কৃষক সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক গিয়াস উদ্দিন বলেন, ডাইভারশনের নিচে বসানো পাইপ সরু হওয়ায় বর্ষায় পানিপ্রবাহ রোধ হয়ে জলাবদ্ধতা তৈরি হয়। এতে কৃষকের জমি পানিতে নিমজ্জিত হয়ে খালের দক্ষিণাংশের ২৫ একর আমন আবাদ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এখন শুষ্ক মৌসুমে সেচের পানি না পেয়ে উত্তরাংশে আধুনিক প্রিপেইড মিটারচালিত সেচযন্ত্রগুলো কাজে লাগছে না। খালের উত্তরাংশে পানি না থাকায় ৩০০ একর জমি অনাবাদি থাকছে। যারা ইতোপূর্বে ধান লাগিয়েছিল তাদের সকল আবাদ নষ্ট হয়েছে।
 
 নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন কৃষি কর্মকর্তা জানান, কৃষকদের  বোরো চাষে পানি সেচ, হালচাষ, সার প্রয়োগ, বীজ উঠানো ও প্রস্তুতকৃত জমিতে চারা রোপণ করার বিভিন্ন কার্যক্রমে যে সময়ের প্রয়োজন তা খুবই কম। সময়মত পানি না পেলে আবাদে ব্যাপক ক্ষতি হবে।
 
উপজেলা প্রকৌশলী সৈয়দ আসিফ মোহাম্মদ বলেন, এখনই খালের প্রবাহ উন্মুক্ত করলে সেতু ক্ষতিগ্রস্ত হবে। একটি সাধারণ ভবনের ছাদ ঢালাই করলেও তা জমাট বাধতে ২০/২৫ দিন সময় লাগে। উন্নয়নের স্বার্থে কৃষকদের ধৈর্য ধারণ করতে হবে।
 
কৃষির স্বার্থে পানি প্রবাহে বিকল্প কোন ব্যবস্থা নেই উল্লেখ করে উপজেলা প্রকৌশলী বলেন, বিকল্প ব্যবস্থা হিসেবে ডাইভারশনের নিচ দিয়ে চোঙ বসানো হয়েছে। সেতুর চলমান কাজের সময় তা বন্ধ করা হয়েছে। কিন্তু ব্রিজের কাজ ঠিক রেখে বিকল্প কোন ব্যবস্থা প্রকল্পে উল্লেখ নেই।

কৃষকদের ক্ষতি প্রসঙ্গে সেতু নির্মাণে কার্যাদেশপ্রাপ্ত ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এলাহি এন্টারপ্রাইজের মালিক বিএনপি নেতা বাবুল বলেন, দ্রুত সময়ের মধ্যে পানি প্রবাহ নিশ্চিতে বাঁধ সরিয়ে নেওয়া হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১০২৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০৫, ২০২৩
এসএইচডি/এসএএইচ 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।