ঢাকা, শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

প্রত্যন্ত গ্রামে প্রতীক্ষিত সুপেয় পানি, কষ্ট লাঘব পাহাড়িদের

অপু দত্ত, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০৩৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৩, ২০২৩
প্রত্যন্ত গ্রামে প্রতীক্ষিত সুপেয় পানি, কষ্ট লাঘব পাহাড়িদের

খাগড়াছড়ি: শুষ্ক মৌসুমে পানির তীব্র সংকটে পড়তে হয় খাগড়াছড়ির দীঘিনালা উপজেলার বেশ কয়েকটি গ্রামের বাসিন্দাদের। এতদিন পাহাড়ি ঝিরি-ঝরনা ও কুয়ার পানিই ছিল একমাত্র অবলম্বন।

যা আনতে হতো বহুদূরের দুর্গম পথ পেরিয়ে। তবে স্বাধীনতার এতগুলো বছর পর সুপেয় পানির সেই কষ্ট লাঘব হয়েছে পাহাড়িদের।

অস্বাস্থ্যকর, দূষিত পানি পান করে নানা রোগে আক্রান্ত হতেন গ্রামের বাসিন্দারা। এছাড়া শুস্ক মৌসুমে খাবার পানি তো দূরে থাক; ব্যবহারের পানিও আনতে কষ্টের সীমা ছিলো না। উঁচু পাহাড় থেকে নেমে দূর পাহাড়ের তলদেশ থেকে পানি তুলে নিয়ে আসা ছিল যথেষ্ঠ কষ্টসাধ্য।

সেই দিন এখন অতীত। সুদীর্ঘ বছর পর সুপেয় পানি পেল দীঘিনালার নয় মাইল এলাকার ত্রিপুরা পাড়ার বাসিন্দারা। খাবার পানি পেয়ে যারপরনাই আনন্দিত গ্রামবাসী। এর মধ্য দিয়ে লাঘব হলো গ্রামটির প্রায় আড়াইশ পরিবারের সুপেয় পানির কষ্ট। রুরাল পাইপড ওয়াটার সাপ্লাাই স্কীমের আওয়াতায় এ সুপেয় পানির ব্যবস্থা করে দিয়েছে খাগড়াছড়ি জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর।

স্থানীয় নয় মাইল ত্রিপুরা পাড়া নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক তপু ত্রিপুরা বলেন, এলাকায় দীর্ঘ বছর ধরে সুপেয় পানির সমস্যা ছিল। সুপেয় পানির অভাবে ডায়রিয়াসহ নানা রোগে আক্রান্ত হতো গ্রামবাসী। সেখান থেকে স্থানীয়রা মুক্তি পেয়েছে। এখন আর দুর্গম এলাকায় গিয়ে ঝিরি-ঝরনার পানি সংগ্রহ করতে হবে না।

দীঘিনালার ১নং মেরুং ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মাহমুদা আক্তার লাকি বলেন, নয় মাইলের আশপাশের গ্রামগুলোতে প্রতি বছর শুষ্ক মৌসুমে সুপেয় পানির সংকট দেখা দেয়। অনেকে এই সময় অন্যত্র গিয়ে বসবাস করেন। এখন সেই পরিস্থিতি থেকে স্থানীয়রা মুক্তি পেয়েছেন। এমন প্রকল্প অন্যসব প্রত্যন্ত এলাকায় নেওয়া গেলে পানির সমস্যা থেকে মুক্তি ঘটবে।

জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, ২০ হাজার লিটার ধারণ ক্ষমতার একটি জলাধারে ৭ হাজার ৭৮৫ মিটার পাইপ সংযোগের মাধ্যমে পুরো নয় মাইল ত্রিপুরাপাড়া এলাকায় পানির ব্যবস্থা করা হয়েছে। এতে এক কোটি টাকা ব্যয় হয়েছে।

খাগড়াছড়ি জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী রেবেকা আহসান বলেন, স্বাধীনতার পর থেকে স্থানীয়রা সুপেয় পানির সমস্যায় ভুগছেন। এই সমস্যা সমাধান করতে পেরে নিজেদের কাছে ভালো লাগছে। প্রকল্পের আওতায় প্রায় আড়াইশ পরিবার সুপেয় পানির সুবিধা পাবে।  

পর্যায়ক্রমে অন্যান্য প্রত্যন্ত এলাকাতেও এমন প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হবে বলেও জানান তিনি।

স্থানীয় সংসদ সদস্য কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা বলেন, এলাকার জনগণের দীর্ঘদিনের প্রত্যাশা পূরণ হয়েছে। এই প্রকল্পের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি। পাহাড়ের মানুষের সমস্যা সমাধানে সরকার আন্তরিক। এটা তারই ফসল।  

পাহাড়ের প্রত্যন্ত এলাকায় সুপেয় পানির এমন সুব্যবস্থা বাস্তবায়নের ধারা অব্যাহত থাকবে বলেও জানান এই জনপ্রতিনিধি।

বাংলাদেশ সময়: ১০০৭ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৩, ২০২৩
এনএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।