ঢাকা, শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

যেমন ছিল আগের ২০ রাষ্ট্রপতির বিদায়

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬০১ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৪, ২০২৩
যেমন ছিল আগের ২০ রাষ্ট্রপতির বিদায়

ঢাকা: বিদায় বেলায় সর্বোচ্চ সম্মানের সঙ্গে বঙ্গভবনে রাজসিক সংবর্ধনা পেয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। স্বাধীনতার ৫২ বছরের ইতিহাসে আবদুল হামিদের আগে দেশে ২০ জন রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব পালন করলেও তাদের কেউ কার্যত আনুষ্ঠানিক বিদায় পাননি।

নতুন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের কাছে দায়িত্ব হস্তান্তরের পর সোমবার (২৪ এপ্রিল) দুপুরে বিদায়ী সংবর্ধনা দেওয়া হয় আবদুল হামিদকে।  

আগের রাষ্ট্রপতিদের মধ্যে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান খুন হন। বাকিদের মধ্যে অনেকে মেয়াদ পূর্ণ করতে পারেননি। আবার কেউ কেউ মেয়াদ পূর্ণ করতে পারলেও আনুষ্ঠানিক সংবর্ধনা পাননি।

দেশের প্রথম রাষ্ট্রপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট সপরিবারে নির্মম নিহত হন।

দেশের দ্বিতীয় রাষ্ট্রপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম বঙ্গবন্ধুর অবর্তমানে ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ থেকে ১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারি পর্যন্ত অস্থায়ী রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব পালন করেন।

১৯৭৩ সালের ২৪ ডিসেম্বর মেয়াদ শেষ না করেই বিদায় নেন তৃতীয় রাষ্ট্রপতি আবু সাঈদ চৌধুরী। চতুর্থ রাষ্ট্রপতি মুহম্মদউল্লাহও ১৯৭৫ সালের ২৫ জানুয়ারি মেয়াদ শেষ না করেই বিদায় নেন এবং সে সময় আবারও রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব নেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।

১৯৭৫ সালে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর ক্ষমতায় আসেন খন্দকার মোশতাক আহমদ। অভ্যুত্থান, পাল্টা অভ্যুত্থানের মধ্যে ৬ নভেম্বর বিদায় নিতে হয় তাকে।

এরপর রাষ্ট্রপতি হন বিচারপতি আবু সাদত মোহাম্মদ সায়েম। ১৯৭৭ সালের ২১ এপ্রিল তাকে সরিয়ে দিয়ে ক্ষমতায় বসেন সেনা শাসক জিয়াউর রহমান। ১৯৮১ সালের ৩০ মে নিহত হন তিনি।

জিয়ার পর ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব নেন বিচারপতি আব্দুস সাত্তার এবং ১৯৮১ সালের ২০ নভেম্বর রাষ্ট্রপতি হন।

১৯৮২ সালের ২৪ মার্চ আব্দুস সাত্তারকে সরিয়ে এএফএম আহসান উদ্দিন চৌধুরীকে রাষ্ট্রপতির পদে বসান তৎকালীন সেনাপ্রধান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ। পরে তাকে সরিয়ে ১৯৮৩ সালের ১১ ডিসেম্বর নিজেই দেশের রাষ্ট্রপতি পদ দখল করেন। গণআন্দোলনে ১৯৯০ সালের ৬ ডিসেম্বর ক্ষমতা ছাড়তে বাধ্য হন এরশাদ।

এরশাদের পতনের পর অস্থায়ী রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব আসেন বিচারপতি সাহাবুদ্দীন আহমদ। নির্বাচন দিয়ে ১৯৯১ সালের ৯ অক্টোবর রাষ্ট্রপতির পদ ছেড়ে প্রধান বিচারপতির দায়িত্বে ফিরে যান তিনি।

১৯৯১ সালের ৯ অক্টোবর থেকে ১৯৯৬ সালের ৯ অক্টোবর রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব পালন করেন আবদুর রহমান বিশ্বাস।

আবদুর রহমান বিশ্বাসের পর সাহাবুদ্দীন আহমদকে আবারও রাষ্ট্রপতির পদে বসায় আওয়ামী লীগ সরকার। পাঁচ বছর রাষ্ট্রপ্রধানের দায়িত্ব সামলে ২০০১ সালের ১৪ নভেম্বর তিনি বিদায় নেন তিনি।  

সাহাবুদ্দীনের পর বিএনপি আমলে রাষ্ট্রপতি হন একিউএম বদরুদ্দোজা চৌধুরী। বিএনপি সরকারের সঙ্গে বিরোধে জড়িয়ে ২০০২ সালের ২১ জুন পদত্যাগ করে বঙ্গভবন ছাড়েন তিনি।

বদরুদ্দোজার বিদায়ের পর আসেন মো. জমিরউদ্দিন সরকার। ৬ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব পালন করেন তিনি। তারপর রাষ্ট্রপতি করা হয় ইয়াজউদ্দিন আহম্মেদকে। মেয়াদ শেষে ২০০৯ সালের ফেব্রুয়ারিতে বিদায় নেন তিনি।

আবদুর রহমান বিশ্বাস, সাহাবুদ্দীন আহমদ ও ইয়াজউদ্দিন আহম্মেদ তাদের মেয়াদ পূর্ণ করলেও কোনো রকম বিদায়ী আনুষ্ঠানিকতা ছাড়া অনেকটা নীরবেই বঙ্গভবন ছাড়তে হয তাদের।

২০০৯ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব নেন জিল্লুর রহমান। চার বছরের মাথায় তিনি মারা যান।

এরপর রাষ্ট্রপতি হন আবদুল হামিদ। তিনি সাবেক রাষ্ট্রপতি মো. জিল্লুর রহমানের মৃত্যুর পর ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রপতি হিসেবে ৪১ দিনসহ টানা দুই মেয়াদে রাষ্ট্রপতি হিসেবে ১০ বছর ৪১ দিন রাষ্ট্রপতির চেয়ারে ছিলেন। সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতার কারণে টানা দুই মেয়াদে দায়িত্ব পালন শেষে আজ আনুষ্ঠানিকভাবে বিদায় নিয়েছেন তিনি।

বাংলাদেশ সময়: ১৬০১ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৪, ২০২৩
এমইউএম/এমএমজেড

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।