ঢাকা, শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

ঈশ্বরদীর পার্কে অসামাজিক কার্যকলাপ, যোগ দেয় রাশিয়ানরাও

উপজেলা করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮৫১ ঘণ্টা, জুন ৯, ২০২৩
ঈশ্বরদীর পার্কে অসামাজিক কার্যকলাপ, যোগ দেয় রাশিয়ানরাও

পাবনা: ঈশ্বরদীর দাশুড়িয়া ইউনিয়নের ভবানীপুর গ্রামে ‘জে অ্যান্ড জে’ নামে একটি পার্ক আছে, যেটির স্বত্বাধিকারী স্থানীয় বাসিন্দা ও ব্যবসায়ী আফজাল হোসেন রতন। অভিযোগ আছে, তিনি এ ব্যবসার আড়ালে পার্কে বিভিন্নরকম ‘অসামাজিক কার্যকলাপ করান’।

দেহ ব্যবসা ও মাদক কারবার পার্কটিতে এখন ‘ডালভাত’। রূপপুর প্রকল্পে কাজ করা ‘রাশিয়ান নাগরিকরাও’ পার্কে এসে এসবে জড়ান, যা মানতে পারছেন না স্থানীয়রা। এমন অপকর্মের প্রতিবাদে তারা মানববন্ধন করেছেন। দেখিয়েছেন ঝাড়ু, জুতা।

শুক্রবার (৯ জুন) বেলা ১১টায় পাবনা-ঈশ্বরদী মহাসড়কের পাশে ব্যানার, ফেস্টুন নিয়ে এ মানববন্ধনে অংশ নেন বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার নারী-পুরুষ। পার্ক ব্যবসার আড়ালে অশ্লীল ও অসামাজিক কার্যকলাপের প্রতিবাদে তারা বিভিন্ন স্লোগান দেন।

স্থানীয়দের অভিযোগ, দুই বছর আগে ভবানীপুর গ্রামে ‘জে অ্যান্ড জে’ নামে একটি বিনোদন পার্ক নির্মাণ করেন স্থানীয় ব্যবসায়ী আফজাল হোসেন রতন। এতে রয়েছে পার্ক ও বসার স্থান। কয়েকদিন পর পর এসব জায়গায় বিশেষ করে পার্কে নারী নিয়ে আসেন, তাদের দিয়ে দেহ ব্যবসা করান। তা ছাড়া মাদক ব্যবসাও চালান তিনি।  

রূপপুর প্রকল্পে যেসব রাশিয়ান নাগরিক কাজ করেন, তারা রতনের পার্কের বিশেষ খদ্দের। শুক্র ও শনিবার সাপ্তাহিক ছুটি থাকায় তারা জে অ্যান্ড জে পার্কে গিয়ে ছুটি উপভোগ করেন। পার্কে রতনের সরবরাহ করা নারীদের সঙ্গে একান্তে সময় কাটান রাশিয়ানরা। এমন পরিস্থিতিতে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে এলাকাবাসী। তারা এসবের বিহিত চান।  

স্থানীয় বাসিন্দা আকুব্বর হোসেন ও আনিসুর রহমান অভিযোগ করে বলেন, আফজাল হোসেন রতনের কারণে এলাকার পরিবেশ ও যুব সমাজ নষ্ট হচ্ছে। তার কর্মকাণ্ডের নেতিবাচক দিক সম্পর্কে তাকে বার বার বোঝানো হলেও তিনি কথা শোনেন না। বিষয়গুলো সম্পর্কে পুলিশকেও জানানো হয়েছে। কিন্তু কোনো ফলাফল পাওয়া যায়নি। তাই বাধ্য হয়ে আমরা রাস্তায় প্রতিবাদে নেমেছি।  

মানববন্ধনে অংশ নেওয়া নারীরা জানান, তারা ভবানীপুর গ্রাম দিয়ে লজ্জায় চলাফেরা করতে পারেন না। গ্রামের ছেলে-মেয়েরা শান্তিপূর্ণ পরিবেশে চলাচল করতে পারছেন না। আমরা অতি দ্রুত অশ্লীলতা ও অসামাজিক কাজ বন্ধে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।

মানববন্ধনকারীরা পুলিশের বিরুদ্ধেও অভিযোগ করেন। তারা বলেন, পুলিশকে আমরা বিভিন্নসময় এ ব্যাপারে জানিয়েছি। কিন্তু তারা কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নেয় না। যে কারণে রতন কাউকে পরোয়া করে না। তিনি তার মতোই ব্যবসা পরিচালনা করছেন।  

এসব বিষয়ে কথা বলতে জে অ্যান্ড জে পার্কের স্বত্বাধিকারী আফজাল হোসেন রতনের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হয়। কিন্তু তাকে পাওয়া যায়নি। বন্ধ পাওয়া গেছে তার মোবাইল নম্বরও।  

পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগ অস্বীকার করেছেন ঈশ্বরদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) অরবিন্দ সরকার। তিনি বলেন, পার্ক হলো সাধারণ মানুষের বিনোদনের জায়গা। কিন্তু সেখানে অবৈধ, অশ্লীল, অসামাজিক কাজ মেনে নেওয়া হয় না, হবেও না। ওই পার্কের অসামাজিক কর্মকাণ্ড সম্পর্কে অভিযোগ আসেনি। কেউ লিখিত দিলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।  

বাংলাদেশ সময়: ১৮৫১ ঘণ্টা, জুন ৯, ২০২৩
এসএম/এমজে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।