ঢাকা, শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

৮ মাসেও চালু হয়নি ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ রেলরুট

নিশাত বিজয়, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭৫৮ ঘণ্টা, জুলাই ১০, ২০২৩
৮ মাসেও চালু হয়নি ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ রেলরুট কমলাপুর রেলস্টেশন অংশে চলমান ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ রেললাইন প্রকল্পের কাজ

ঢাকা: ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ রুটে ট্রেন চলাচল গত বছরের ৪ ডিসেম্বর বন্ধ ঘোষণা করে বলা হয়েছিল ৩ মাস পর পুনরায় চলবে ট্রেন।

সে সময় রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন জানান, ৩ মাসের মাসের মধ্যে পুনরায় চালু করা হবে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ রেল যোগাযোগ।

সে সময় রেল কর্তৃপক্ষও বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছিল একই কথা।

পদ্মা রেল সংযোগ প্রকল্প ও ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ রেললাইনকে ডাবল লাইনে উন্নীত করতে বন্ধ করা হয় গুরুত্বপূর্ণ এ রেলরুট। এরপর নারায়ণগঞ্জ থেকে কোনো ট্রেন ঢাকা কিংবা ঢাকা থেকে নারায়ণগঞ্জেও আসেনি কোনো ট্রেন।

তবে ৩ মাস পেরিয়ে ৮ মাসের মাথায়ও চালু হয়নি দেশের যাত্রী চলাচলের অন্যতম ব্যস্ততম রুটটি। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন এ রুটের সাধারণ যাত্রীরা। কারণ সড়ক পথে এ রুটে চলতে যানজটে ঘণ্টার পর ঘণ্টা সময় লাগে।

চলতি বছরের ৪ মার্চ থেকে পুনরায় ট্রেন চালুর কথা থাকলেও কবে নাগাদ পুনরায় ট্রেন চলাচল শুরু হবে সেটি জানাতে পারেনি রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। ফলে সাধারণ যাত্রীদের ভোগান্তি আরও দীর্ঘয়িত হচ্ছে।

সোমবার ( ১০ জুলাই) এ বিষয়ে বাংলানিউজ প্রতিবেদকের সঙ্গে কথা হয় ঢাকা-নারায়নগঞ্জ ডাবল লাইনের প্রকল্প পরিচালক সেলিম রউফ ও বাংলাদেশ রেলওয়ের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপারেশন) সরদার শাহাদাত আলীর।

প্রকল্প পরিচালক সেলিম রউফ বলেন, ঢাকা থেকে নারায়ণগঞ্জ পুরো প্রকল্পের অগ্রগতি হয়েছে ৮২ শতাংশ। তবে সিগন্যালিংয়ের কাজ এখনও শুরু হয়নি। ২০২৪ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে এ প্রকল্প শেষ হবে।

তাহলে কবে চালু হবে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ রেললাইন চালু হবে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, একটি লাইন প্রস্তুত রয়েছে যেটি দিয়ে আগে ট্রেন চলতো। এটি অপারেশন বিভাগ জানতে পারে কবে এ রুটে ট্রেন চলবে।

তবে বাংলাদেশ রেলওয়ের অপারেশন বিভাগ বলছে ভিন্ন কথা। বাংলাদেশ রেলওয়ের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপারেশন) সরদার শাহাদাত আলী বলেন, ঢাকা থেকে যশোর পর্যন্ত চলমান পদ্মা রেল সংযোগ প্রকল্প ও ঢাকা - নারায়ণগঞ্জ ডাবল লাইন প্রকল্পের পরিচালকদ্বয় আনুষ্ঠানিক চিঠি দিয়ে জানালেই আমরা ট্রেন চালু করবো।

প্রকল্পে কেটেছে জট

প্রকল্প পরিচালক সেলিম রউফ বলেন, ঢাকা নারায়ণগঞ্জ রেলওয়ে প্রকল্পের আওতায় ৫টি রেলস্টেশনের উন্নয়নের কাজ চলছে। স্টেশনগুলো-শ্যামপুর, পাগলা, ফতুল্লা, চাষাড়া ও নারায়ণগঞ্জ স্টেশন। স্টেশনগুলোর ফিনিশিংয়ের কাজ শেষ হয়নি। অন্য কাজগুলোর অগ্রগতি ভালো।

এদিকে পাগলা থেকে নারায়ণগঞ্জ পর্যন্ত অংশে জায়গার অভাবে আটকে ছিল ডাবল লাইন তৈরির কাজ। এদিকে কাজ আটকে ছিল নারায়ণগঞ্জ রেলস্টেশন সম্প্রসারণের কাজও। তবে জটিলতা নিরসন হয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রকল্প পরিচালক সেলিম রউফ।

সেলিম রউফ বাংলানিউজকে বলেন, ভূমি জটিলতায় নারায়ণগঞ্জ রেলস্টেশন ও পাগলা থেকে নারায়ণগঞ্জ পর্যন্ত ২ কিলোমিটার রেলপথের কাজ বন্ধ ছিল। এ নিয়ে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের সঙ্গে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর হয়েছে, তারা পার্শ্ববর্তী রাস্তা আমাদের দেবে।

তবে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের কাছে থেকে এখনও বুঝে পাননি জানিয়ে তিনি বলেন, এ বছরের শেষ কিংবা আগামী বছরের শুরুতে জমি পেয়ে যাবো। সামনের বছরের মধ্যে এ প্রকল্পের কাজ শেষ হবে।  

চরম ভোগান্তিতে যাত্রীরা

ঢাকা ও গেন্ডারিয়া থেকে নারায়ণগঞ্জ কেন্দ্রীয় রেলস্টেশন, চাষাঢ়া, শ্যামপুর, পাগলা  ও ফতুল্লা রেলস্টেশনে চলাচলকারী যাত্রীরা পড়েছেন বিপাকে। একই অবস্থা যারা নারায়ণগঞ্জ থেকে ঢাকায় প্রবেশ করেন সেসব যাত্রীদেরও।

এ রুটের চলাচলকারী যাত্রীদের বড় অংশ নিম্ন আয়ের, সঙ্গে রয়েছে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের চাকরিজীবীরা। যারা প্রতিদিনই ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ রুটে চলাচল করেন। স্বল্প ব্যয় ও সময় সাশ্রয়ী হওয়ায় যাত্রীদের মধ্যে জনপ্রিয় ছিল এ রুট।

এ রুটের যাত্রীরা বলছেন, ট্রেনে ১৫ টাকায় ঢাকায় গিয়ে আবার ১৫ টাকায় ফিরে যেতেন নিজ গৃহে। তবে তাদের এখন চারগুণের বেশি খরচ হচ্ছে এ রুটের যাত্রীদের।

গেন্ডারিয়া এলাকায় থাকেন বেসরকারি একটি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত ফারজানা রহমান। তিনি গেন্ডারিয়া থেকে নারায়ণগঞ্জে প্রতিদিন অফিস করেন।

তিনি বলেন, আগে গেন্ডারিয়া থেকে ২০ মিনিটে নারায়ণগঞ্জে অফিসে যেতাম, খরচও কম ছিল। কিন্তু বাসে নারায়ণগঞ্জ যেতে ৫০ টাকা শুধু যেতেই লাগে।

বাংলাদেশ সময়: ১৭৫৮ ঘণ্টা, জুলাই ১০, ২০২৩
এনবি/জেএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।