ঢাকা, শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

নড়াইলে সুলতান মেলায় শিশুদের চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট     | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০৪০ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৩, ২০২৩
নড়াইলে সুলতান মেলায় শিশুদের চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা

নড়াইল: নড়াইলে বিশ্ব বরেণ্য চিত্রশিল্পী এসএম সুলতানের ৯৯তম জন্মজয়ন্তী উপলক্ষে চার দিনব্যাপী সুলতান উৎসবের তৃতীয় দিনে শিশু-কিশোরদের চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়েছে।  

শুক্রবার (১৩ অক্টোবর) সকাল ১১টার দিকে নড়াইল সরকারি ভিক্টোরিয়া কলেজের সুলতান মঞ্চে এ চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়।

এতে পাঁচ শতাধিক শিশু অংশ নেয়।

এর আগে গত বুধবার (১১ অক্টোবর) সন্ধ্যায় ছবি এঁকে সুলতান উৎসবের উদ্বোধন করেন নড়াইল জেলা প্রশাসক (ডিসি) ও এস এম সুলতান ফাউন্ডেশনের সভাপতি মোহাম্মদ আশফাকুল হক চৌধুরী।

চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতায় শিশুরা এঁকেছে সুলতানের ছবি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি, কেউ চিত্রা নদীতে নৌকাবাইচ আবার কেউ প্রাকৃতিক দৃশ্য। সুলতান উৎসবে আঁকা প্রতিযোগিতা যেন শিশুদের মহামিলন মেলা।  

এক ঘণ্টার এই প্রতিযোগিতা চারটি গ্রুপে ভাগ হয়ে অনুষ্ঠিত হয়। চারটি গ্রুপ হচ্ছে- শূন্য থেকে প্রথম শ্রেণি ‘ক’ গ্রুপ; দ্বিতীয় থেকে চতুর্থ শ্রেণি ‘খ’ গ্রুপ; পঞ্চম থেকে সপ্তম শ্রেণি ‘গ’ গ্রুপ ও অষ্টম থেকে দশম ‘ঘ’ গ্রুপ।

শিশু শ্রেণি ও দ্বিতীয় শ্রেণির দুই কন্যাকে নিয়ে এসছেন গৃহবধূ তাসলিমা। বাংলানিউজকে তিনি বলেন, আমার এলাকায় এত বড় আয়োজনে আমার বাচ্চারা অংশ নিয়েছে, এটাই আমাদের গর্বের আর আনন্দের বিষয়।

সাত বছরের শিশু অর্পা এঁকেছে প্রাকৃতিক দৃশ্য, ১২ বছরের মিলন এঁকেছে চিত্রা নদীতে নৌকাবাইচ আর নদীর পাড়ে বসে বাঁশি বাজাচ্ছেন শিল্পী সুলতান।  

আয়োজক লিজা হাসান বাংলানিউজকে বলেন, প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়া প্রতি গ্রুপ থেকে ১০ জনসহ মোট ৪০ জনকে সেরার পুরস্কার দেওয়া হবে। কেননা, এ প্রতিযোগিতায় প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় হয় না।  

প্রতিবছরই সুলতান উৎসবের মূল আয়োজনই থাকে শিশুদের ছবি আঁকা প্রতিযোগিতা। ২০০৬ সাল থেকে নড়াইলে এস এম সুলতান উৎসবের আয়োজন করা হয়। এটা শিশু চিত্রশিল্পীদের এক মিলন মেলা।

এস এম সুলতান চারু ও কারুকলা ফাউন্ডেশনের সভাপতি শেখ আবু হানিফ বাংলানিউজকে বলেন, শিশুদের নিয়েই সুলতানের স্বপ্ন ছিল। আমরা তাই এটি করে আসছি। এখান থেকে শিশু সুলতান তৈরি হচ্ছে।

উল্লেখ্য, চিত্রাঙ্কনের পাশাপাশি বাঁশি বাজাতেন সুলতান। তার হাতে প্রায়ই বাঁশি দেখা যেত। পুষতেন সাপ, ভাল্লুক, বানর, খরগোশ, মদনটাক, ময়না, গিনিপিক, মুনিয়া, ষাঁড়সহ বিভিন্ন পশু-পাখি। তিনি বাড়িতে একটি মিনি চিড়িয়াখানা প্রতিষ্ঠা করেছিলেন।

বরেণ্য চিত্রশিল্পী এস এম সুলতান ১৯৮২ সালে একুশে পদক ও ১৯৯৩ সালে স্বাধীনতা পদক পান। ১৯৮৪ সালে বাংলাদেশ সরকারের রেসিডেন্ট আর্টিস্ট এবং ১৯৮৬ সালে বাংলাদেশ চারুশিল্পী সম্মাননা পান তিনি।

দীর্ঘদিন শ্বাসকষ্টে ভোগার পর ১৯৯৪ সালের ১০ অক্টোবর চিরকুমার এই শিল্পী যশোর সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। পরে নড়াইলের নিজ বাড়ির আঙিনায় তাকে সমাহিত করা হয়। সুলতানের স্মৃতিকে ধরে রাখার জন্য তার নিজ বাড়িতে নির্মিত হয়েছে এসএম সুলতান স্মৃতি সংগ্রহশালা।

বাংলাদেশ সময়: ২০৩৮ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৩, ২০২৩
এসআরএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।