ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

বিশ্ব সম্প্রদায়কে একাত্তরের ‘গণহত্যার’ আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি দিতে হবে: ঢাবি উপাচার্য

ইউনিভার্সিটি করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০০৪৯ ঘণ্টা, মার্চ ২৬, ২০২৪
বিশ্ব সম্প্রদায়কে একাত্তরের ‘গণহত্যার’ আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি দিতে হবে: ঢাবি উপাচার্য

ঢাকা: ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চসহ মুক্তিযুদ্ধের গণহত্যাকে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি দিতে জাতিসংঘসহ বিশ্ব সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল।

সোমবার (২৫ মার্চ) সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের স্মৃতি চিরন্তন চত্বরে আয়োজিত আলোচনায় সভায় উপাচার্য এ আহ্বান জানান।

এর আগে ‘গণহত্যা দিবস’ উপলক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে একই চত্বরে মোমবাতি প্রজ্বলন ও শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করা হয়।  

আলোচনা সভায় উপাচার্য মাকসুদ কামাল বলেন, ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাতে বর্বর পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী এদেশে নিরস্ত্র ও নিরীহ মানুষের ওপর যে গণহত্যা চালিয়েছিল তা ছিল পরিকল্পিত। পাকিস্তানি শাষকগোষ্ঠী বুঝে গিয়েছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এদেশের স্বাধীনতার জন্য জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে গণআন্দোলন গড়ে উঠবে। এ আন্দোলন তারা দমিয়ে রাখতে পারবে না। ‘একারণেই ২৫ মার্চ রাতে হানাদার বাহিনীর অন্যতম টার্গেট ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জগন্নাথ হল, রোকেয়া হল, শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হল (তৎকালীন ইকবাল হল), ঐতিহাসিক বটতলা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্লাব, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিটি স্থাপনাসহ বিভিন্ন স্থানে শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা, কর্মচারীসহ নিরস্ত্র সাধারণ মানুষের ওপর নৃশংসতম ‘গণহত্যা’ চালায়। এ ধরনের ‘গণহত্যা’ পৃথিবীর ইতিহাসে অন্যকোনো দেশে কখনও ঘটেনি।

উপাচার্য আরও বলেন, ১৯৭১ সালে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী এদেশে যে হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছে আন্তর্জাতিক গণহত্যার সংজ্ঞা অনুযায়ী সেটি বৈশ্বিক স্বীকৃতির দাবি রাখে। এ গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি দেওয়া হলে পৃথিবীর বিভিন্ন স্থানে এখনও যারা গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী কর্মকাণ্ড চালাচ্ছে তারা সতর্ক হবে।  

‘অপারেশন সার্চলাইট’ অভিযানের নামে পাকিস্তানি বর্বর হানাদার বাহিনী পরিচালিত এ নারকীয় গণহত্যা আন্তর্জাতিক পর্যায়ে ‘গণহত্যা দিবস’ হিসেবে অতি দ্রুত স্বীকৃতি দেওয়ার জন্য জাতিসংঘসহ বিশ্ব সম্প্রদায়ের প্রতি উপাচার্য আহ্বান জানান।

সভায় উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ সামাদ বলেন, ১৯৭১ সালে পাকিস্তানিরা এদেশের মানুষের ওপর যে নিষ্ঠুর, নির্মম অত্যাচার ও হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছে, এ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় তার অন্যতম সাক্ষী।  

এ গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি দাবি করে তিনি বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে দীর্ঘ আন্দোলন, সংগ্রাম ও ত্যাগের মধ্যে দিয়ে আমরা যে স্বাধীনতা পেয়েছি তার ইতিহাস প্রজন্ম থেকে প্রজন্মের কাছে তুলে ধরতে হবে।

সভা শেষে বিশ্ববিদ্যালয়ের জগন্নাথ হল গণসমাধিতে মোমবাতি প্রজ্বলন ও শহিদদের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করা হয়।  

মোমবাতি প্রজ্বলন ও শ্রদ্ধা জ্ঞাপনে আরও উপস্থিত ছিলেন উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. সীতেশ চন্দ্র বাছার, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক মমতাজ উদ্দিন আহমেদ, শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. নিজামুল হক ভূইয়া, সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. জিনাত হুদাসহ শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা।  

দিবসটি উপলক্ষে এক মিনিট পর্যন্ত জরুরি স্থাপনা ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সব জায়গায় এক মিনিট ‘ব্লাক-আউট’ কর্মসূচি পালন করা হয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ০০৫০ ঘণ্টা, মার্চ ২৬, ২০২৪
আরআইএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।