নারায়ণগঞ্জ: নারায়ণগঞ্জে খেলাফত মজলিসের নেতা মো. জাহিদ হাসানকে হত্যাচেষ্টার ঘটনায় মাওলানা ফেরদাউসুর রহমানকে প্রধান আসামি করে ২৪ জনের নামে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
সোমবার (৩০ সেপ্টেম্বর) রাতে হামলায় গুরুতর আহত জাহিদ নিজে এ অভিযোগ দায়ের করেন।
অভিযুক্ত হেফাজতে ইসলামের নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিলুপ্ত কমিটির সভাপতি ফেরদাউসুর রহমান (৪৫), মীর আহমদ উল্লাহ (৩৬), মুফতি হরুন উর রশিদ (৪২), কামাল উদ্দিন দায়েমীসহ (৪৫) নয়জনের নামোল্লেখ করা হয়েছে। এছাড়া অজ্ঞাত আরও ১৫ জনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে।
এর আগে সোমবার রাতে শহীদ মিনারের সামনে দিয়ে যাওয়ার সময় হঠাৎ একদল সন্ত্রাসী জাহিদের ওপর হামলা চালায়। এ সময় হামলা থেকে বাঁচতে দৌড় দিলে তার পিছু নেয় হামলাকারীরা। পরে চাষাঢ়া বালুরমাঠ এলাকার পপুলার হসপিটালের তৃতীয় তলায় আশ্রয় নেন জাহিদ। পরে হামলার খবর পেয়ে পপুলার হসপিটাল থেকে জাহিদকে উদ্ধার করে নগরীর খানপুর ৩০০ শয্যা হাসপাতালে নিয়ে যান খেলাফত মজলিসের নেতাকর্মীরা।
জাহিদ জানান, আমাকে হত্যার উদ্দেশে এ হামলা চালানো হয়। এর আগেও একাধিকবার আমাকে নানাভাবে হুমকি দেওয়া হয়েছে।
হামলার ঘটনায় মহানগর হেফাজতে ইসলামের সাবেক আমীর মাওলানা ফেরদৌসুর রহমানকে দায়ী করে জাহিদ বলেন, নারায়ণগঞ্জ মহানগর হেফাজতের বিলুপ্ত কমিটির নেতা মাওলানা ফেরদাউসুর রহমানের গুন্ডা বাহিনী আমার ওপর অতর্কিত হামলা চালিয়েছেন। আজ রাত ৮টায় আমাকে মারতে মারতে চাষাঢ়া শহীদ মিনার থেকে পপুলার হাসপাতাল পর্যন্ত নিয়ে যাওয়া হয়, এ সময় প্রাণ বাঁচাতে আমি পপুলার হাসপাতালের তৃতীয় তলায় আশ্রয় নেই। মাথা থেকে পা পর্যন্ত পুরো শরীরে আমাকে আঘাত করা হয়, কিল-ঘুষি ও লাথি মারা হয়, তীব্র আক্রমণে আমার বমি চলে আসে। এ হামলার কঠিন জবাব দেওয়া হবে।
এর আগেও নানা সময়ে ফেরদৌসুর বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের সমালোচনা করায় ফোন কলে একাধিকবার ফেরদৌসুর ও তার অনুসারীরা হুমকি ধামকি দিয়ে আসছিল বলে জানিয়েছেন জাহিদ।
গত শুক্রবার নারায়ণগঞ্জের ইসলামিক দলগুলো জুমার নামাজের পর ভারতে মহানবীকে (সা.) কটূক্তির প্রতিবাদে মিছিলের ডাক দিলে ঘটনাস্থলে সন্ত্রাসীদের নিয়ে উপস্থিত হন মাওলানা ফেরদৌসুর। এ সময় প্রভাব বিস্তারকে কেন্দ্র করে বিক্ষোভ মিছিল পূর্ব সমাবেশে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে থাকেন। এ সময় হেফাজতে ইসলামের নায়েবে আমীর মাওলানা আব্দুল আউয়ালের ওপর হামলা ও তাকে লাঞ্ছিত করার চেষ্টা করেন ফেরদৌস ও তার অনুসারীরা। ফলে কর্মসূচিটি পণ্ড হয়ে যায় সেদিন।
এ ঘটনার প্রতিবাদে সমাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এক পোস্টে জাহিদ বলেছিলেন, নারায়ণগঞ্জের সর্বজন শ্রদ্ধেয় আলেমেদ্বীন, হেফাজতের কেন্দ্রীয় নায়েবে আমীর এবং ডিআইটি মসজিদের খতিব আল্লামা আবদুল আউয়াল সাহেব এবং নারায়ণগঞ্জ ওলামা পরিষদের সেক্রেটারি মুফতি জাকির কাসেমী সাহেব এর সঙ্গে চরম বেয়াদবি এবং ধৃষ্টতাপূর্ণ আচরণের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। সমাবেশে বিশৃঙ্খলা এবং আলেম-ওলামাদের মারধরের মতো ঘৃণ্য আচরণে জড়িত সবার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।
বাংলাদেশ সময়: ১৪৫২ ঘণ্টা, অক্টোবর ০১, ২০২৪
এমআরপি/আরআইএস