ঢাকা, শনিবার, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

পাঠ্যপুস্তক সংস্কারে ইসলামপন্থী শিক্ষাবিদ রাখার দাবি

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭১২ ঘণ্টা, অক্টোবর ২, ২০২৪
পাঠ্যপুস্তক সংস্কারে ইসলামপন্থী শিক্ষাবিদ রাখার দাবি

ঢাকা: পাঠ্যপুস্তক সংস্কারে ইসলামপন্থী শিক্ষাবিদ রাখার দাবি জানিয়েছে সচেতন নাগরিক সমাজ নামে একটি সংগঠন।  

বুধবার (২ অক্টোবর) জাতীয় প্রেসক্লাবের মাওলানা আকরাম খাঁ হলে আয়োজিত এক সংবাদ সন্মেলনে এক বিবৃতিতে এ দাবি জানানো হয়।

সংবাদ সন্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সংগঠনের আহবায়ক মুফতি সাইফুল ইসলাম।

লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, আমাদের পাঠ্যপুস্তকের অনেক কনটেন্টই ইসলামের সঙ্গে সরাসরি সাংঘর্ষিক ছিলো। ইতিহাসে ছিলো অখণ্ড ভারতের বয়ান। তাছাড়া মুসলিম শাসন আমলকে সচেতনভাবে বিকৃত ও নেতিবাচকভাবে উপস্থাপন করার প্রচেষ্টাও পরিলক্ষিত হয়। এছাড়া শিল্প ও সংস্কৃতি বইটা বাধ্যতামূলক করার মাধ্যমে, মুসলিম সন্তানদের নাচগানে বাধ্য করার মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়। অন্যদিকে সপ্তম শ্রেণীর ইতিহাস এবং সামাজিক বিজ্ঞান বইয়ের শরিফার গল্প তীব্র বিতর্কের জন্ম দেয়। এই গল্পের মাধ্যমে বাংলাদেশে শিক্ষা ব্যবস্থায় বিকৃত পশ্চিমা এলজিবিটি মতাদর্শের প্রবেশ ঘটে।  

তিনি বলেন, বর্তমানে গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী বাংলাদেশের শিক্ষা বাবস্থা কেমন হবে সেটা নিয়ে নানা জল্পনা কল্পনা চলছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হওয়া পাঠ্যপুস্তক সমন্বয় কমিটি জনসম্মুখে প্রকাশ হবার পর থেকে আবারও বিতর্ক শুরু হয়। কমিটির কয়েকজন সদস্য এলজিবিটি মতাদর্শের সমর্থক এবং গভীর ইসলামবিদ্বেষ লালন করেন। আমরা দাবি জানাই, এই বাস্তবতায় ধর্ম উপদেষ্টার নেতৃত্বে শিক্ষাবিদদের উপযুক্ত টিম কর্তৃক পাঠ্যপুস্তকগুলো রিভিউ করা জরুরি, যারা ধর্মীয় ও সামাজিক দৃষ্টিকোণ থেকে সংবেদনশীল যে কোনো বিষয়বস্তু চিহ্নিত করবেন এবং সংশোধন করবেন, প্রয়োজনে বাদ দেবেন।

তিনি আরও বলেন, শিক্ষা উপদেষ্টার বরাতে জানা গেছে, পাঠ্যপুস্তক সংশোধন ও পরিমার্জনের কাজ শেষের দিকে এবং মধ্য অক্টোবরে বই প্রেসে যাবার পরিকল্পনা আছে। সঙ্গত কারণেই বইগুলো রিভিউ করা জরুরি।  তাছাড়া বই ছাপানোর পর বাতিল করতে হলে সরকারের কোটি কোটি টাকা গচ্চাও যাবে।  

তিনি আরও বলেন, শব্দের মারপ্যাচে এলজিবিটি মতাদর্শের কোন কন্টেন্ট অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে কিনা সেটা নিয়ে জনমনে সংশয় দেখা দিয়েছে। তাছাড়া ইসলাম শিক্ষা বইয়ের কাজ করেছেন আবু সাঈদ খান নামক একজন ঘোষিত হাদিস অস্বীকারকারী। এ নিয়েও গণপরিসরে ব্যাপক ক্ষোভ দেখা যাচ্ছে।

সংবাদ সন্মেলনে নিন্মলিখিত পাঁচ দফা দাবি তুলে ধরা হয়

১। পাঠ্যপুস্তক চূড়ান্ত এবং ছাপানোর আগে তা অবশ্যই একদল শিক্ষাবিদের দ্বারা পর্যালোচনা করাতে হবে যারা ধর্মীয় ও সামাজিক দৃষ্টিকোণ থেকে সংবেদনশীল যে কোনো বিষয়বস্তু চিহ্নিত করবেন এবং সংশোধন করবেন, প্রয়োজনে বাদ দেবেন। এই টিমে অবশ্যই আলিমদের অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।

২। পাঠ্যপুস্তকে এমন কোনো ভিনদেশি মতাদর্শ প্রচার করা যাবে না যা দেশের সাংস্কৃতিক, নৈতিক এবং ইমানি মূল্যবোধের সঙ্গে বিরোধপূর্ণ। বিশেষ করে এলজিবিটি এবং জেন্ডার আইডিওলজিসহ ইসলামের সঙ্গে সাংঘর্ষিক কোনো কনটেন্ট বইতে থাকা যাবে না।

৩। পাঠ্যপুস্তক থেকে অখণ্ড ভারতের বয়ান বাদ দিয়ে সঠিক ইতিহাস তুলে আনতে হবে। ইতিহাস পাঠে অবশ্যই মুসলিম শাসনের সোনালি ইতিহাস ও অবদানের আলোচনা নিশ্চিত করতে হবে, যা পূর্বে ইচ্ছাকৃতভাবে বাদ দেওয়া হয়েছে।

৪। কিসের ভিত্তিতে এই সমন্বয় কমিটি এবং সংশোধন ও পরিমার্জন টিম গঠিত হলো ও সদস্যদের নিয়োগ দেয়া হল, এবং কেন সেখানে কোন শিক্ষাবিদ ও কারিকুলাম বিশেষজ্ঞ নেই সেটা জাতির কাছে স্পষ্ট করতে হবে।

৫। গণমানুষের চাহিদাকে আমলে নিয়ে নতুন কারিকুলাম প্রণয়ন করতে হবে যেখানে সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলিম সমাজের ধর্মীয় অনুভূতির প্রতিফলন থাকতে হবে।

এসময় সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, মাওলানা আব্দুল হাই মোহাম্মদ সাইফুল্লাহ, ডা. মেহেদী হাসান, প্রফেসর মুখতার আহমেদ, আজিজুল হক ইসলামাবাদী, লুৎফর রহমান ফরায়েজি, সাইমুম সাদী, রেজাউল করিম আবরার, শরিফ আবু হায়াত অপু প্রমুখ।

বাংলাদেশ সময়: ১৭০৮ ঘণ্টা, অক্টোবর ০২, ২০২৪
ইএসএস/এমএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।