ঢাকা, শুক্রবার, ১৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

বৌদ্ধবিহারে জলাবদ্ধতায় পর্যটকদের বিড়ম্বনা

তৌহিদ ইসলাম, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৫৪ ঘণ্টা, অক্টোবর ৬, ২০২৪
বৌদ্ধবিহারে জলাবদ্ধতায় পর্যটকদের বিড়ম্বনা

নওগাঁ: নওগাঁর সোমপুর বিহার। পাল বংশের রাজা ধর্মপাল অষ্টম শতকের শেষের দিকে নির্মাণ করেন এ বিহারটি।

যা আজ ঐতিহাসিক পাহাড়পুর বৌদ্ধবিহার নামে পরিচিত। দেশীয় পর্যটকের পাশাপাশি বছরজুড়ে বিদেশি পর্যটকদের পদচারণায় মুখর থাকে বিহার প্রাঙ্গণ। তবে বেশ কয়েক বছর ধরে বিহারের চারপাশে সৃষ্টি হচ্ছে জলাবদ্ধতা। ফলে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে দর্শনার্থীদের। অন্যদিকে তৈরি হয়েছে বিহার দেবে যাওয়ার আশঙ্কা।

বছরজুড়েই পাহাড়পুর দেখতে ভিড় জমে দেশি বিদেশি পর্যটকদের। তবে বিহার প্রাঙ্গণে জলাবদ্ধতায় তৈরি হয়েছে বিড়ম্বনা। কাছে এসেও বিহারের সৌন্দর্য দেখতে হচ্ছে অনেক দূর থেকে। বর্ষা মৌসুমে সামান্য বৃষ্টিতে বিহার এলাকায় জমে থাকে পানি। ফলে তৈরি হয়েছে দেবে যাওয়ার আশঙ্কা। ঐতিহাসিক স্থানের এমন দশায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন পর্যটকরা।

পাহাড়পুর দর্শনে আসা বগুড়া জেলার শিক্ষার্থী মো. মাহাবুব আলম বাংলানিউজকে বলেন, এর আগেও দুইবার পাহাড়পুরে আসা হয়েছিল। তবে এবার পাহাড়পুরের মূল বিহারের চারিপাশের জলাবদ্ধতায় ভিন্ন অভিজ্ঞতা হয়েছে। বিহারের এলাকার ঘুরে দেখতে কাদা লেগে পোশাক নষ্ট হচ্ছে। আবার অনেকেই ত দূর থেকেই দেখে চলে যাচ্ছে। এটা কোনোভাবেই কাম্য নয়। এত দূর থেকে এসে যদি কাছে থেকে পাহাড়পুরকে দেখতে না পায় তাহলে ত এসে লাভ নেই।

দিনাজপুর জেলার শিক্ষক মোজাহার আলী পরিবারসহ দেখতে এসেছেন পাহাড়পুর বৌদ্ধবিহার। প্রথমবার পাহাড়পুরে দেখতে এসে বিড়ম্বনার শিকার হয়েছেন তিনি। মোজাহার আলী বাংলানিউজকে জানান, এতদিন বই আর টেলিভিশনে পাহাড়পুরের সৌন্দর্য দেখেছেন তিনি। তবে কাছ থেকে দেখে পাহাড়পুরকে আরো সুন্দর লাগছে। তবে জলাবদ্ধতা অনেক বড় একটা সমস্যা। ভালোভাবে বিহার পরিদর্শন করা যাচ্ছে না। কাদা পানিতে একাকার হয়ে নষ্ট হচ্ছে জামা-কাপড়। এসব সমস্যা সমাধানে কর্তৃপক্ষের কাছে দ্রুত কার্যকরী পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন তিনি।

পাহাড়পুরে রাজস্ব আদায়ের তথ্য অনুযায়ী, গেলো ২০২১-২২ অর্থ বছরের রাজস্ব আদায় হয়েছে প্রায় ৭৬ লাখ ৭১ হাজার টাকা, ২০২২-২৩ অর্থ বছরে  রাজস্ব আদায় হয়েছে ১ কোটি ৯ লাখ ৭০ হাজার টাকা, এবং সর্বশেষ ২০২৩-২৪ অর্থবছরে রাজস্ব আদায় হয়েছে ১ কোটি ৩৫ লাখ টাকা।

যেখানে প্রতিবছর কোটি টাকা রাজস্ব আদায় হয়, এমন ঐতিহাসিক স্থানের বেহাল পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা ভাবিয়ে তুলছে সচেতনকে। পাহাড়পুর নিয়ে যারা গবেষণা করেন তাদের মতে এমন জলাবদ্ধতা দীর্ঘস্থায়ী হলে ক্ষতির মুখে পড়বে পাহাড়পুর বৌদ্ধবিহার। রয়েছে বিহার দেবে যাওয়ার আশঙ্কাও।  

পাহাড়পুর জাদুঘরের কাস্টোডিয়ান মুহাম্মদ ফজলুল করিম বাংলানিউজকে জানান, জলাবদ্ধতা একটা বড় সমস্যা পাহাড়পুরের জন্য। বছরের ৩ মাস এ জলাবদ্ধতা থাকে। আমরা চেষ্টা করি বিহার এলাকায় পানি জমলে বের করে দেওয়ার। তবে এসব সমস্যা স্থানীয় সমাধানে কার্যকরী উদ্যোগ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। আশা করি খুব দ্রুত এসব সমস্যার সমাধান হবে। তবে আমরা চেষ্টা করছি পাহাড়পুর থেকে পাশের একটি নদী পর্যন্ত যদি ক্যানেল করে পানি বের করা যায়, তাহলে এর স্থায়ী সমাধান হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৪৫৪ ঘণ্টা, অক্টোবর ৬, ২০২৪
জেএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।