খুলনা: বিদ্যুতের অযৌক্তিক মিটার রেন্ট ও ডিমান্ড চার্জ অবিলম্বে প্রত্যাহার না করলে কঠোর কর্মসূচির হুঁশিয়ারি দিয়েছে খুলনা নাগরিক সমাজ।
এ দাবিতে অনুষ্ঠিত মানববন্ধন ও সমাবেশ থেকে হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়।
সংগঠনের আহ্বায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা অ্যাডভোকেট আ ফ ম মহসীনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত কর্মসূচিতে স্বাগত বক্তব্য দেন সংগঠনের সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট মো. বাবুল হাওলাদার। এতে খুলনা ডেভেলপমেন্ট সোসাইটি (কেডিএস) ব্যানার সহকারে সংহতি প্রকাশ করে।
সংগঠনের সদস্য আফজাল হোসেন রাজুর সঞ্চালনায় সংহতি প্রকাশ করে মানববন্ধনে বক্তব্য দেন বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির মহানগর সভাপতি শেখ মফিদুল ইসলাম, জেলা সাধারণ সম্পাদক দেলোয়ার উদ্দিন দিলু, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সাবেক মহানগর সভাপতি মিজানুর রহমান বাবু, বীর মুক্তিযোদ্ধা শিক্ষক নিতাই পাল, দক্ষিণ অঞ্চল উন্নয়ন পরিষদের মহাসচিব ইঞ্জিনিয়ার রুহুল আমিন হাওলাদার, উন্নয়ন সংগঠক ও সমাজসেবক এম এ কাশেম, খুলনা ডেভেলপমেন্ট সোসাইটির (কেডিএস) সভাপতি আব্দুস সালাম শিমুল, অবসরপ্রাপ্ত ব্যাংক কর্মকর্তা এফ এম মনিরুজ্জামান, সাবেক ছাত্র নেতা এস এম চন্দন, খুলনা উন্নয়ন আন্দোলনের চেয়ারম্যান শেখ মো. নাসির উদ্দিন, খুলনা অঞ্চল পরিবেশ রক্ষা কমিটির চেয়ারম্যান মো. মোসলেহউদ্দিন (তুহিন), নিরাপদ সড়ক চাইয়ের (নিসচা) সাবেক খুলনা জেলা সভাপতি হাবিবুর রহমান হাসিব, আয়কর উপদেষ্টা এম হানিফ হোসেন, অ্যাডভোকেট মোমিনুল ইসলাম, নিসচার মহানগর সাধারণ সম্পাদক সাংবাদিক মাহবুবুর রহমান মুন্না, সমাজসেবক খ ম শাহীন হোসেন, কবি নাজমুল তারেক তুষার, শাহ অহিদুজ্জামান জাহাঙ্গীর, অধ্যাপক সঞ্জয় সাহা, এস এম রহিম, অ্যাডভোকেট মেহেদী হাসান, গোলাম রব্বানি ভূঁইয়া, নতুন তারার প্রতিষ্ঠাতা সাইফুর রহমান মিনা, চিত্রশিল্পী মিলন বিশ্বাস, প্রধান শিক্ষক সাঈদা পারভীন, কবি অ্যাড. মিজানুর রহমান, মল্লিক আরাফাত হোসেন, কাজী কামরুল ইসলাম, এস এম নাজমুল হাসান, মো. চুন্নু খন্দকার, শেখ ইয়াসিন, মো. ওয়াসিফ খান, জাকারিয়া হোসেন, অনিক দত্ত প্রমুখ।
বক্তারা বলেন, ২০১৪ সালে প্রি-পেইড মিটার স্থাপনের একটি পাইলট প্রকল্প গ্রহণ করে ওয়েস্ট জোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড (ওজোপাডিকো)। যার অধীন খুলনায় ২০১৫ সালে প্রিপেইড মিটার স্থাপনের কাজ শুরু হয়। প্রিপেইড মিটার স্থাপন কালে ওজোপাডিকোর পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল, বিনামূল্যে এ মিটার স্থাপন করা হচ্ছে। এ বাবদ কোনো মূল্য নেওয়া হবে না। কিন্তু অত্যন্ত দুঃখের সাথে আমরা লক্ষ্য করলাম যে, কিছুদিন যেতে না যেতেই সংস্থাটি মিটার প্রতি আবাসিক মিটারে মাসে ৪০ টাকা এবং বাণিজ্যিক মিটারে ২৫০ টাকা হারে ভাড়া গ্রহণ করা শুরু করলো, যা গ্রাহকদের সাথে রীতিমত মিথ্যাচার ও প্রতারণা।
খুলনা নাগরিক সমাজসহ অন্যান্যদের আন্দোলনের মুখে তৎকালীন ব্যবস্থাপনা পরিচালক সংবাদ সম্মেলন করে অন্যান্য প্রতিশ্রুতি দিয়ে ঘোষণা করেছিলেন, মিটারের মূল্য সমন্বয় হওয়ার পর আর কোনো মিটার ভাড়া নেওয়া হবে না। আমাদের জানা মতে, মিটার স্থাপনের সময় আবাসিক মিটারের ক্রয়মূল্য ছিল ৩ হাজার ২০০ টাকা এবং বাণিজ্যিক মিটারের মূল্য ছিল ১৪ হাজার টাকার মতো। অথচ, গত ৮ বছর ধরে উপরোল্লিখিত হারে মিটার ভাড়া নেয়া হচ্ছে, যা ক্রয়মূল্যের চেয়ে অনেক বেশি নেওয়া হয়েছে।
সংস্থাটি ইতোপূর্বে খুলনায় ৬১ হাজার আবাসিক ও ২ হাজার বাণিজ্যিক মিটার স্থাপন করেছে। এই বিশাল সংখ্যার মিটার থেকে লাগাতারভাবে অতিরিক্ত মিটার ভাড়া গ্রহণ করা হচ্ছে, যা শুধুমাত্র বাড়ির মালিকদেরই নয় সিংহভাগ ক্ষেত্রে ভাড়াটিয়াদের ঘাড়ে এসে পড়ছে। ফলশ্রুতিতে স্বল্প আয়ের মানুষকেই এর দায় ভার নিতে হচ্ছে। অন্যদিকে প্রি-পেইড মিটার স্থাপনের সময় সংস্থাটি পূর্বের অ্যানালগ মিটার খুলে নিলেও তার জামানত/মূল্য সমন্বয় করা হয়নি। পরিতাপের বিষয়, এ ব্যাপারে সংস্থাটি নির্বিকার। একদিকে গ্রাহক ব্যবহৃত বিদ্যুতের ওপর ভ্যাট দিচ্ছে, যা সংবিধিবদ্ধ। অন্যদিকে বিদ্যুতের চার্জ বাবদ মোট চার্জ হিসেবে অর্থ নেওয়ার পরও ডিমান্ড চার্জের নামে একটি বিশাল অংকের টাকা গ্রহণ করছে সংস্থাটি। যে বিষয়টি আমাদের বোধগম্য বা গ্রহণযোগ্য নয়।
বাংলাদেশ সময়: ১৭১৫ ঘণ্টা, অক্টোবর ১২, ২০২৪
এমআরএম/এমজে