সাতক্ষীরা: বাংলাদেশ-ভারতের আন্তঃসীমান্ত নদী ইছামতিতে স্ব স্ব কিনারায় অবস্থান নিয়ে প্রতিমা বিসর্জন দিয়েছে সনাতন ধর্মাবলম্বীরা। তবে বিগত বছরগুলোর মতো এবছরও ইছামতিতে ভাসেনি মিলন মেলার তরী।
স্থানীয়রা জানান, একটা সময় সাতক্ষীরার দেবহাটা উপজেলার ইছামতি নদীর টাউনশ্রীপুর এবং ভারতের টাকি পৌরসভা এলাকায় প্রায় ১০ কিলোমিটার জুড়ে বিজয়া দশমীর মেলা বসতো। এতে অংশ নিতো দুই বাংলার লাখও মানুষ। দেশ বিভাগের অনেক আগে থেকেই ছিল এর প্রচলন। ফলে দেশের দক্ষিণাঞ্চলের সবচেয়ে বড় ও ঐতিহ্যবাহী প্রতিমা বিসর্জনাস্থলের পরিচিতি পেয়েছিল দেবহাটার ইছামতি নদী। তবে বিগত কয়েক বছর ধরে আইনশৃংখলার অজুহাতে ইছামতির প্রতিমা বিসর্জন অনুষ্ঠানে নানা শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়। ফলে বন্ধ হয়ে যায় দু’বাংলার মিলনমেলা।
রোববার (১৩ অক্টোবর) দু’দেশের মধ্যে মিলনমেলা দেখতে পাওয়া না গেলেও নিজ নিজ সীমারেখার মধ্যে প্রতিমা বিসর্জন দেন বাংলাদেশ ও ভারতের মানুষ। এসময় নদীর জিরো পয়েন্টে ডিঙি নৌকায় লাল ফ্লাগ উড়িয়ে দু’দেশের সীমানা নির্ধারণ করতে দেখা যায় বিএসএফকে।
এদিকে, বেলা গড়ার সাথে সাথে নদীর দেবহাটার টাউন শ্রীপুর ও ভারতের টাকির দু’পারে জড়ো হতে থাকে অসংখ্য মানুষ। একই সাথে বিভিন্ন এলাকার দুর্গা প্রতিমাকে বিসর্জনের জন্য নিয়ে আসা হয় সীমান্ত নদীর পাড়ে। অপরদিকে ভারতের উত্তর ২৪ পরগনা জেলার হাসনাবাদ, টাকী ও হিঙ্গলগঞ্জসহ বিভিন্ন এলাকার প্রতিমাও নিয়ে আসা হয়। তবে ভারতের সীমানায় আনন্দের তরী নামলেও বাংলাদেশের পাড়ে কাউকে নামতে দেয়নি আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
নীলডুমুর ১৭ ব্যাটালিয়নের সহকারী অধিনায়ক (এডি) শাহ মোহাম্মদ খালেদের নেতৃত্বে বিজিবি সদস্যরা সীমান্তের বেড়িবাঁধে কঠোর অবস্থান নেয়। বাংলাদেশের কোনো মানুষ যাতে ইছামতি নদীতে নামতে না পারে সে বিষয়ে টহলও জোরদার করা হয়।
এসময় বাংলাদেশ সীমান্তপাড়ে উপস্থিত ছিলেন দেবহাটা উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. আসাদুজ্জামান, দেবহাটা থানার ওসি ইদ্রিসুর রহমান, দেবহাটা সদর ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল মতিন বকুল প্রমুখ।
বাংলাদেশ সময়: ২১৪৫ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৩, ২০২৪
নিউজ ডেস্ক