ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

চাকরির প্রলোভনে ফাঁদে ফেলে অর্থ আদায়, প্রতারক চক্রের ৭ সদস্য গ্রেপ্তার

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯২১ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৫, ২০২৪
চাকরির প্রলোভনে ফাঁদে ফেলে অর্থ আদায়, প্রতারক চক্রের ৭ সদস্য গ্রেপ্তার

ঢাকা: ফেসবুকে চাকরির লোভনীয় বিজ্ঞাপন দিয়ে সাধারণ মানুষদের ফাঁদে ফেলতো একটি চক্র। পরে ভুক্তভোগীদের জিম্মি করে আদায় করা হতো অর্থ।

এমন এক প্রতারক চক্রের সাত সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) খিলগাঁও থানা।

গত বুধবার (৯ অক্টোবর) ও সোমবার (১৪ অক্টোবর) বিকারে রাজধানী খিলগাঁও এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।

গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- নাসির উদ্দিন ওরফে পিটার নাসির (২৮), আনোয়ার ওরফে তন্ময় ওরফে আকতারুজ্জামান (২৬), রোকসানা রহমান ওরফে রোকসানা (৩৫), সীমা ওরফে রোকসানা আক্তার(৩২), জেসমিন ওরফে জেসমিন বেগম (২০), লিজা (২৫) ও শাহানাজ আক্তার (২০)।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ডিএমপির মিডিয়া অ্যান্প পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) মুহাম্মদ তালেবুর রহমান।

তিনি জানান, গত বুধবার (৯ অক্টোবর) খিলগাঁও থানায় এই প্রতারক চক্রের বিরুদ্ধে একটি মামলা করেন এক ভুক্তভোগী মো. নাসির উদ্দীন। তিনি ঢাকার নবাবগঞ্জের বাসিন্দা।

মামলার সূত্রে জানা যায়, গত ৪ অক্টোবর মো. নাসির উদ্দীন ফেসবুকে সিকিউরিটি গার্ডের একটি চাকরির বিজ্ঞাপন দেখেন। পরে ওই চাকরির বিষয়ে কথা বলতে ৬ অক্টোবর দুপুরে সীমা ওরফে রোকসানা আক্তার নামের একজনের সাথে হোয়াটসঅ্যাপে যোগাযোগ করেন। ওইদিন সন্ধ্যায় সীমার কথা মতো নাসির উদ্দীন খিলগাঁও থানার টেম্পুস্ট্যান্ডের ১৩৬ দক্ষিণ গোড়ানের একটি বাসায় যান। কিছুক্ষণ পর সীমা ওরফে রোকসানা আক্তার ও আনোয়ার ওরফে তন্ময়সহ আরো কয়েকজন ওই বাসায় আসেন। এ সময় মামলার বাদী নাসির উদ্দীন কিছু বুঝে ওঠার আগেই তাকে বিবস্ত্র করে মারধর ও মোবাইলে ভিডিও ধারণ করেন ওই প্রতারক চক্রের সদস্যরা। এবং ধারণকৃত ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দেয়।

পরে সীমা ওরফে রোকসানা আক্তার নিজেকে ডিবি পুলিশের ইন্সপেক্টর পরিচয় দিয়ে ভুক্তোভোগীর মায়ের কাছে মোবাইলের মাধ্যমে এক লক্ষ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। বাদীর মা তৎক্ষণিক তাদের দেওয়া বিকাশ নাম্বারে পাঁচ হাজার টাকা প্রেরণ করে। এরপর তারা ভুক্তভোগীর কাছে থাকা দুটি স্বর্ণের আংটি, একটি এন্ড্রয়েড মোবাইল ফোন ও নগদ ৩২ হাজার ৫০০ টাকা নিয়ে নেয়। পরবর্তীতে রাত সাড়ে এগারটার দিকে আনোয়ার ওরফে তন্ময় ভিকটিমের চোখ বেঁধে মোটরসাইকেলে করে খিলগাঁও ফ্লাইওভারের উপর ফেলে যায়।

পুলিশ জানায়, ৯ অক্টোবর ভুক্তভোগী খিলগাঁও থানায় মামলা করার পরপরই তার দেখানো মতে ওইদিন খিলগাঁও এলাকা থেকে ঘটনার সাথে সংশ্লিষ্ট নাসির উদ্দিন ওরফে পিটার নাসির, আনোয়ার ওরফে তন্ময় ওরফে আকতারুজ্জামান, রোকসানা রহমান ওরফে রোকসানা, সীমা ওরফে রোকসানা আক্তার, জেসমিন ওরফে জেসমিন বেগম ও লিজা নামের ছয়জনকে গ্রেপ্তার করে আদালতে পাঠানো হয়। তদন্তাধীন এই মামলায় গতকাল সোমবার (১৪ অক্টোবর) বিকেলে খিলগাঁও থানা এলাকায় অভিযান চালিয়ে শাহানাজ আক্তার নামে আরো একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ নিয়ে এই মামলায়  এখন পর্যন্ত সাতজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

গ্রেপ্তারকৃতদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, তারা দীর্ঘদিন ধরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভিন্ন চাকরির বিজ্ঞাপন দিয়ে, বিশেষজ্ঞ ডাক্তার সেজে বা প্রেমের প্রস্তাব দেওয়ার মতো বিভিন্ন উপায়ে মানুষকে প্রলুদ্ধ করতো। তাদের এসব লোভনীয় বিজ্ঞাপন দেখে কেউ ফাঁদে পা দিলে তাকে জিম্মি করে অর্থ ও মূল্যবান দ্রবাদি হাতিয়ে নিত। গ্রেপ্তারকৃত নাসির উদ্দিন ওরফে পিটার নাসিরের নামে হত্যা, চাঁদাবাজিসহ আটটি মামলার তথ্য পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

বাংলাদেশ সময়: ১৯২০ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৫, ২০২৪
এসসি/এমএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।