ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

চাকরি স্থায়ীকরণের দাবি লাইভস্টক সার্ভিস প্রোভাইডারদের

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬২৮ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৮, ২০২৪
চাকরি স্থায়ীকরণের দাবি লাইভস্টক সার্ভিস প্রোভাইডারদের

ঢাকা: ন্যূনতম গ্রেডে বেতন-ভাতা ও চাকরি রাজস্বকরণের দাবি জানিয়েছেন প্রাণিসম্পদ ও ডেইরি উন্নয়ন প্রকল্পের (এলডিডিপি) আওতাধীন লাইভস্টক সার্ভিস প্রোভাইডাররা (এলএসপি)।

শুক্রবার (১৮ অক্টোবর) জাতীয় প্রেসক্লাবের মাওলানা আকরম খাঁ হলে এলএসপি কল্যাণ পরিষদের ব্যানারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তারা অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে এই দাবি জানান।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে এলএসপি কল্যাণ পরিষদের সাধারণ সম্পাদক এস এম জামান বলেন, প্রাণিসম্পদ ও ডেইরি উন্নয়ন প্রকল্পের পরিকল্পনা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে দেশের ৬১টি জেলায় ৪ হাজার ২০০ জন (ইউনিয়ন ভিত্তিক) এলএসপি দিন-রাত নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। প্রকল্পের কর্মকর্তাদের দুরদর্শী নেতৃত্ব, সময়োপযোগী পরিকল্পনা ও গবেষণার ফলশ্রুতিতে দেশের প্রাণিসম্পদ খাত প্রান্তিক খামারিদের কাছে হয়ে উঠেছে ব্যাপক আলোচিত ও সম্ভাবনাময়ী। এলডিডিপি প্রকল্পের আওতায় বিভিন্ন সময় অনুষ্ঠিত প্রশিক্ষণ ৪ হাজার ২০০ জন এলএসপিকে রূপান্তরিত করেছে দক্ষ ও প্রশিক্ষিত মানবসম্পদে। সেই দক্ষতাকে কাজে লাগিয়ে আমরা কোভিড-১৯ চলাকালীন প্রকল্প থেকে দেওয়া আর্থিক প্রণোদনা স্বচ্ছতার সঙ্গে সম্পূর্ণ করেছি।

তিনি আরও বলেন, প্রাণিসম্পদ খাতে আমরাই বাংলাদেশে প্রথম খামারিদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে ডিজিটাল ফিল্ড সার্ভে সফলভাবে তথ্য সংগ্রহ করতে সক্ষম হয়েছি। সেই সাথে বিভিন্ন ভ্যাক্সিনেশন কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করেছি। আমরা ন্যায্যমূল্যে দুধ, ডিম, মাংস, বিক্রয় কার্যক্রমে সহায়তা করেছি। আমরা নিয়মিত খামারিদের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপনের মাধ্যমে প্রাকৃতিক দুর্যোগ, বন্যা শীতকালীন, গ্রীষ্মকালীন প্রাণীর চিকিৎসা ও যত্ন বিষয়ে সুপরামর্শ দিয়ে আসছি। এ ছাড়া প্রচলিত খামার ব্যবস্থাপনার ধারণাকে বদলে দিয়ে প্রতিনিয়ত প্রান্তিক খামারিদের আধুনিক, মানসম্মত ও প্রযুক্তি সম্বলিত খামার গঠনে নানা প্রকার পরামর্শ দেওয়ার মাধ্যমে তাদের উৎসাহিত করে যাচ্ছি, যার ফলে এলডিডিপি প্রকল্প ও প্রাণিসম্পদের কার্যক্রম প্রান্তিক খামারিদের মধ্যে অত্যন্ত জনপ্রিয় ও গ্রহণযোগ্য হয়ে উঠেছে। কিন্তু অতি দুঃখজনক ও পরিতাপের বিষয় এই যে, স্থায়ীভাবে খামারিদের জন্য ইউনিয়ন ভিত্তিক প্রাণিসম্পদ সেবা বা পরামর্শ কেন্দ্র না থাকায় প্রান্তিক খামারিদের সুদূর উপজেলা ভেটেরিনারি হাসপাতালে জরুরি অবস্থায় অসুস্থ প্রাণীকে চিকিৎসা সেবার জন্য নিয়ে যাওয়া সম্ভব হয়ে ওঠে না। ফলে খামারিরা প্রাথমিক চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। এতে করে দেশ ও খামারি আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।

তাই দুধ, ডিম ও মাংসের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের লক্ষ্যে ইউনিয়ন ভিত্তিক এলএসপিদের স্থায়ী নিয়োগের মাধ্যমে দেশের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি ও খামারিদের স্বার্থে চলমান কার্যক্রম অব্যাহত রাখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। প্রাণিসম্পদকে অধিকতর যুগোপযোগী করে তোলা হলে দেশের অর্থনীতিতে ব্যাপক ভূমিকা রাখবে বলে আমরা মনে করছি।

এস এম জামান আরও বলেন,  এলডিডিপির মেয়াদ শেষের দিকে। প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হলে আমরা ৪২০০ জন দক্ষ ও প্রশিক্ষিত জনবল তথা পরিবার পরিজন নিয়ে বেকারত্বের অভিশাপ নিয়ে পথে নামতে হবে। এ অবস্থায়, অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা এবং মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টার কাছে আকুল আবেদন এলডিডিপি প্রকল্পের আওতায় ৪২০০ জন দক্ষ ও প্রশিক্ষিত জনবলের অসহায়ত্বের কথা বিবেচনা করে এলএসপিদের ইউনিয়ন ভিত্তিক প্রাণিসম্পদ সেবাকেন্দ্র চালু করে সরাসরি নিয়োগের মাধ্যমে ন্যূনতম গ্রেডে বেতন ভাতা ও চাকরি রাজস্বকরণ করার জোর দাবি জানাচ্ছি। অন্যথায় খুব শিগগিরই বৃহৎ আকারে কর্মসূচি পালন করা হবে।

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন এলএসপি কল্যাণ পরিষদের সভাপতি মো. শাহদাত হোসেন, সিনিয়র সহ-সভাপতি মো. জয়নাল আবেদীন, সহ-সভাপতি মো. মোখলেছুর রহমান, মো. সাইফুল ইসলাম, মো. আব্দুল মতিন প্রমুখ।

বাংলাদেশ সময়: ১৬২৮ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৮, ২০২৪
এসসি/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।