ঢাকা, বুধবার, ২৬ ফাল্গুন ১৪৩১, ১২ মার্চ ২০২৫, ১১ রমজান ১৪৪৬

জাতীয়

খাদ্যে ভেজাল মেশানো নৈতিকতা ধসের ফল: ভোক্তার ডিজি

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮৩৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৩, ২০২৪
খাদ্যে ভেজাল মেশানো নৈতিকতা ধসের ফল: ভোক্তার ডিজি

ঢাকা: খাদ্যে ভেজাল মেশানো নৈতিকতা ধসের ফল বলে বলে মন্তব্য করেছেন  ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি) মোহাম্মদ আলীম আখতার খান।

সেমবার (২৩ ডিসেম্বর) পুরানা পল্টনে ‘ইফেক্ট অব কাউন্টারফিট প্রাডাক্টস ইন বাংলাদেশি মার্কেট অ্যান্ড দেয়ার ইম্প্যাক্ট অন হিউম্যান হেল্থ’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন।

যৌথভাবে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরাম (ইআরএফ) ও বাংলাদেশ ফুডস্টাফ ইম্পোটার্স অ্যান্ড সাপ্লার্য়ার্স অ্যাসেসিয়েশন (বাফিসা)।

আলোচনা সভায় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের ডিজি আলীম আখতার খান বলেন, আমরা দুইশ বছরের বেশি সময় ধরে উন্নত সভ্যতার (ব্রিটিশ অধীনে) সাথে যুক্ত ছিলাম। তারা শোষণ করলেও বুদ্ধিবৃত্তিক ও ভৌত অবকাঠামোগত সম্পদ যেমন দিয়ে গেছে, সভ্যতাও দিয়ে গেছে। কিন্তু আমরা তা ধারণ করতে পারিনি। যে কারণে স্বাধীনতার ৫২ বছরেও খাদ্যে ভেজাল না মেশানোর মতো নৈতিকতার শিক্ষা অর্জন করতে পারিনি।

বাফিসার সভাপতি মোহাম্মদ বোরহান ই সুলতান বলেন, ভালো মানের পণ্যের দাম বেশি। এই সুযোগে কিছু অসাধু লোক নকল ও ভেজাল মিশিয়ে বাজারে বিক্রি করছে। এতে মানুষের শরীরের জন্য ক্ষতির কারণ হচ্ছে।

তিনি বলেন, বিএসটিআই কর্মকর্তারা আগের মতো বাজারে গিয়ে পণ্যের মান তদারকি করেন না। এ কারণে বিএসটিআইয়ের অনুমোদনহীন পণ্য বিক্রি  হচ্ছে, যা স্বাস্থের জন্য ক্ষতির কারণ হচ্ছে। ভিনেগার ও সসের ক্ষেত্রে স্থানীয়ভাবে ভেজাল পণ্য তৈরি করে জাপান, থাইল্যান্ড ও যুক্তরাষ্ট্রের ব্র্যান্ড লেবেল লাগিয়ে বিক্রি করছে। কোনো কোনো ক্ষেত্রে মানহীন এসব পণ্য আমদানিও করা হচ্ছে। আর তা বড় বড় হোটেলে ব্যবহার হচ্ছে।

বাফিসার সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন বলেন, ভিনেগার, ছয়া, মধু, অলিভঅয়েল ও সসের মতো পণ্য নকল হচ্ছে। এতে ক্যানসার পর্যন্ত হতে পারে। এগুলো ফল বা বিশেষ প্রাকৃতিক উৎস থেকে সংগৃহীত কাঁচামাল দিয়ে তৈরি হয়। এজন্য এসব পণ্যের দাম বেশি। আর দাম বেশি হওয়ার কারণে  অহরহ নকল হচ্ছে। এই বিপদ থেকে বাঁচতে হলে ভোক্তা অধিদপ্তরকে সচেতন হবে। পাশাপাশি সরকারের নিয়ন্ত্রক সংস্থাকেও সচেতন হতে হবে।

বিএসটিআইয়ের ডেপুটি পরিচালক মোহাম্মদ আরাফাত হোসেন বলেন, কম ক্রয় ক্ষমতার কারণে অনেকে মানের দিকে খারাপ হলেও কেনে। তবে খাদ্য গ্রহণের ক্ষেত্রে মানুষ আপসে করে না। সব ক্ষেত্রে ভোক্তা অধিদপ্তরকে সতর্ক হতে হবে, যাতে ভেজালকারী টাকা নিয়ে নকল পণ্য না দেয়।

কিছু পণ্য নকল হচ্ছে। কিছু পণ্য অনৈতিক পথে বাজারে আসছে। আইনি ও নৈতিকতার কোনো না কোনো ফাঁক-ফোকরের কারণে এটা করা হচ্ছে। আর এটা রোধ করতে হলে ব্যবসায়ী, ভোক্তা ও সরকারি নিয়ন্ত্রক সংস্থা সবাই মিলে এটা করতে হবে, বলেন বিএসটিআইয়ের এই কর্মকর্তা।

নিরাপদ খাদ্য অধিদপ্তরের প্রধান সদস্য ড. মোহাম্মদ মোস্তফা বলেন, আগে মুদি দোকানের সংখ্যা বেশি ছিল। এখন ওষুধের দোকান বেড়েছে। এটা হয়েছে নিরাপদ খাদ্যের অভাবে।  

ইআরএফ সভাপতি রেফায়েত উল্লাহ মীরধা বলেন, এখন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ  বিষয়টি হলো নিরাপদ খাদ্য পাওয়া। কিন্তু এটার এখন গুরুত্ব কম। নিয়ন্ত্রক সংস্থার পর্যবেক্ষণ কম, ব্যবস্থাপনাতে ত্রুটি রয়েছে।

অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন ইআরএফ-এর সাধারণ সম্পাদক আবুল কাশেম ও সাংবাদিক আ. হান্নান।

বাংলাদেশ সময়: ১৮৩১ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৩, ২০২৪
জেডএ/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।