নরসিংদী: ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের নরসিংদীর বাগহাটায় ‘সোনারগাঁও ফিলিং স্টেশন’ নামে একটি সিএনজি ফিলিং স্টেশনে ভাঙচুর এবং এক কর্মচারীকে মারধরের প্রতিবাদে ২২টি ফিলিং স্টেশনে সেবা দেওয়া বন্ধ করে দেয় ফিলিং স্টেশন মালিকরা।
পরে মঙ্গলবার (৪ মার্চ) দুপুর ১টায় নরসিংদী জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রাশেদ হোসেন চৌধুরী ও পুলিশ সুপার আব্দুল হান্নানের আশ্বাসের ভিত্তিতে ধর্মঘট প্রত্যাহার করে নেয় মালিক সমিতি।
সিএনজি পাম্প মালিক সমিতি জানায়, সোমবার সকালে নরসিংদীর সোনারগাঁও ফিলিং স্টেশনে দাবি আদায়ের নামে ভাঙচুর ও ভয়ভীতি প্রদর্শন করেছে রেন্ট এ কারের চালকরা। এসময় তারা মহাসড়কের আরও কয়েকটি ফিলিং স্টেশনে ভাঙচুরের চেষ্টা চালায়। ঘটনার পরই নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে কর্মচারীরা। এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচারের দাবি রেখে সোমবার বিকেল ৫টা থেকে জেলার সিএনজি পাম্পগুলো অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করে মালিকপক্ষ। ফিলিং স্টেশনগুলো বন্ধ হয়ে যাওয়ায় দুর্ভোগে পরে দূরপাল্লার পণ্যবাহী ও যাত্রীবাহী পরিবহনগুলো। এ সময় গ্যাসের জন্য অনেক চালককে সিএনজি স্টেশনগুলোতে অপেক্ষা করতে দেখা যায়।
মালেক নামে এক চালক বলেন, হঠাৎ করে ফিলিং স্টেশনগুলো বন্ধ করে দেওয়ায় আমাদের জ্বালানি শেষ হয়ে যাওয়ায় দুর্ভোগ চরমে পৌঁছেছে। গ্যাসের কারণে গাড়ি না চালাতে পারলে পরিবার পরিজন নিয়ে তাদের কষ্ট করতে হবে।
এদিকে মঙ্গলবার দুপুর ১২টায় নরসিংদী জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রাশেদ হোসেন চৌধুরী ও পুলিশ সুপার আব্দুল হান্নানের সঙ্গে মিটিং এ বসেন জেলার সিএনজি পাম্প মালিক সমিতি। এসময় তারা নিরাপত্তা শঙ্কার কারণে স্টেশন বন্ধ রাখেন বলে জানান। পরে প্রশাসন দায়ীদের আইনের আওতায় আনার ও নিরাপত্তা দেওয়ার আশ্বাস দিলে তারা অবরোধ প্রত্যাহার করে নেন। এরপর দুপুর ১টা থেকে সিএনজি পাম্পগুলো চালুর ঘোষণা দেওয়া হয়।
নরসিংদী ফিলিং স্টেশন পাম্প মালিক সমিতির সভাপতি আব্দুল মোমেন মোল্লা বলেন, আমরা নিরাপত্তাহীনতার কারণে ফিলিং স্টেশন ও পাম্প বন্ধ রেখেছিলাম। কারণ রেন্ট এ কার মালিক চালকরা আমাদের পাম্পগুলোতে গিয়ে ভয়ভীতি দেখিয়েছে। প্রশাসন দোষীদের আইনের আওতায় আনার ও আমাদের নিরাপত্তার আশ্বাস দেওয়ায় আমরা জেলার সব সিএনজি ফিলিং স্টেশন ও পাম্প খুলে দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছি।
তবে সিএনজি স্টেশনে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনা অস্বীকার করেছে রেন্ট এ কার চালকরা। নরসিংদী গ্যাস চালিত রেন্ট এ কার আন্দোলনের আহ্বায়ক আসিফ খান বলেন, আমাদের দাবি ছিল ফিলিং স্টেশনগুলো কন্টিনারে গ্যাস সরবরাহ বন্ধ রাখতে হবে। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে তারা আমাদের দাবি মানছেন না। তাদের কারণে ঘণ্টার পর ঘণ্টা সিএনজি স্টেশনগুলোতে লাইন দিয়ে গ্যাস না পেয়ে আমরা গাড়ি চালাতে পারছি না। এজন্য আমরা সিএনজি স্টেশনগুলোতে গিয়ে মালিক ও ম্যানেজারদের সঙ্গে কথা বলেছি। এসময় আমরা কোনো হামলা ও ভাঙচুর করিনি। ওদেরই এক কর্মচারীর মাধ্যমে একটি গ্লাস ভেঙেছে। আমাদের নামে মিথ্যা অপবাদ ছড়ানো হচ্ছে।
নরসিংদী জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রাশেদ হোসেন চৌধুরী বলেন, ভাঙচুর যারা করছে তাদের আইনের আওতায় নিয়ে আসা হবে। আর তিতাস গ্যাস কর্তৃপক্ষ, মালিক ও চালকের আলোচনার মাধ্যমে সব সমস্যার সমাধান করা হবে। গ্যাস ও তেল ছাড়া কোনো পরিবহন চলতে পারবে না। রমজান মাসে জনদুর্ভোগের বিষয়টি বোঝালে তারা ধর্মঘট প্রত্যাহার করে সিএনজি স্টেশনগুলো চালুর ঘোষণা দেয়।
বাংলাদেশ সময়: ১৯৪৮ ঘণ্টা, মার্চ ০৪, ২০২৫
আরএ