ঢাকার উত্তরার দিয়াবাড়ি এলাকায় মাইলস্টোন স্কুলে বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর একটি প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্ত হয়েছে। এ ঘটনায় বড় ধরনের হতাহতের খবর পাওয়া যাচ্ছে, যা আবারও দেশের প্রশিক্ষণ বিমানের নিরাপত্তা নিয়ে জনমনে তীব্র উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে।
২০১০ সাল থেকে এ পর্যন্ত আটটি বড় দুর্ঘটনা ঘটেছে, যেখানে বহু মূল্যবান প্রাণহানি হয়েছে এবং রাষ্ট্রীয় সম্পদের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। আজকের এই দুর্ঘটনা অতীতের সেইসব করুণ স্মৃতিকে নতুন করে সামনে নিয়ে এসেছে।
উল্লেখযোগ্য প্রশিক্ষণ বিমান দুর্ঘটনাগুলো হলো:
২০১০ সালের ২০ ডিসেম্বর বরিশালের আকাশে দুটি প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্ত হয়। এতে দুইজন স্কোয়াড্রন লিডার নিহত হন।
২০১২ সালের মধুপুরে প্রশিক্ষণ চলাকালীন একটি বিমান দুর্ঘটনায় পড়ে। এ ঘটনায় একজন পাইলট মারা যান এবং অপরজন গুরুতর আহত হন।
২০১৭ সালের ১১ জুলাই চট্টগ্রামের লোহাগড়ায় একটি ওয়াইএকে-১৩০ প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্ত হয়। সৌভাগ্যবশত, পাইলট ইজেকশন করে প্রাণে বেঁচে যান।
২০১৭ সালের ২৭ ডিসেম্বর কক্সবাজারের মহেশখালীতে দুটি ওয়াইএকে-১৩০ প্রশিক্ষণ বিমান মুখোমুখি সংঘর্ষে বিধ্বস্ত হয়। ওই ঘটনায় চারজন পাইলটই সফলভাবে বেরিয়ে আসতে সক্ষম হওয়ায় বড় ধরনের প্রাণহানি এড়ানো সম্ভব হয়।
২০১৮ সালের ৫ জুলাই যশোরের একটি কে-৮ডব্লিউ প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্ত হয়। এতে দুইজন স্কোয়াড্রন লিডার প্রাণ হারান।
২০১৮ সালের ২৩ নভেম্বর টাঙ্গাইলের মধুপুরে একটি এফ-৭বিজে প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্ত হয়, যখন জ্বালানি ট্যাংকে আগুন ধরে যায়। ঘটনাস্থলেই উইং কমান্ডার আরিফ আহমেদ নিহত হন।
২০২৪ সালের ৯ মে চট্টগ্রামের পতেঙ্গায় কর্ণফুলী নদীতে বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর একটি ওয়াইকে প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্ত হয়। দুইজন পাইলট প্যারাসুট ব্যবহার করে নদীতে পড়েন, তবে স্কোয়াড্রন লিডার অসীম জাওয়াদ মৃত্যুবরণ করেন। এই ঘটনা দেশব্যাপী ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করে।
সবশেষ ২০২৫ সালের ২১ জুলাই ঢাকার উত্তরার দিয়াবাড়ি এলাকায় মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজ ক্যাম্পাসে বিমানবাহিনীর একটি প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্ত হয়ে বড় ধরনের হতাহতের ঘটনা ঘটলো।
এ দুর্ঘটনা আবারও প্রশিক্ষণ বিমানের রক্ষণাবেক্ষণ, পাইলটদের প্রশিক্ষণ পদ্ধতি এবং সামগ্রিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে গুরুতর প্রশ্ন হাজির করেছে।
ইএসএস/এমজেএফ