ঢাকা: স্কুলে প্রবেশে চলছে কড়াকড়ি। তাই ইতিউতি করছে দুই বালক।
বুধবার সকালে উত্তরা মাইলস্টোন স্কুলে গিয়ে এমন দৃশ্যের দেখা মিলল। সকাল থেকেই প্রশাসন থেকে প্রবেশাধিকার সংরক্ষিত করা হয়েছে৷ ভেতরে চলছে স্কুল কর্তৃপক্ষের মিটিং। শিক্ষক, কর্মকর্তাদের গাড়ি আসছে, কখনো বা বের হচ্ছে। তবে বিমান দুর্ঘটনায় নিহত, আহতদের স্বজন, উৎসুক জনতা কাউকে আর আগের মতো ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না। দেশি-বিদেশি গণমাধ্যমকর্মীরাও বাইরে বিবর্ণ।
বিমানটা যেখানে পড়ছে, সেখানে আমরা দাঁড়িয়ে ছিলাম। খেলা ছিল। ইংলিশ ভার্সনের সঙ্গে ফাইট দিতে গিয়েছিলাম৷ একটা ফ্রেন্ড ডাক দিসে, আইসা পড়ছি। একটু সামনে গেছি। এক মিনিট বা ৫০ সেকেন্ড হবে। তখনই বিকট আওয়াজে কিছু একটা পড়ছে। পেছনে তাকিয়ে দেখি ধোয়া, আগুন। তখন বন্ধুরা সব পাশেই ছিল।
এভাবেই নিজের চোখের সামনে ঘটে যাওয়া দুর্ঘটনার বর্ণনা দিলেন মারুফ সরকার আদিব। বলেন, চোখের সামনে দেখলাম ফুয়াদের হাত, এখানে সেখানে রক্ত।
মাইলস্টোনের বাংলা ভার্সনের অষ্টম শ্রেণির এ শিক্ষার্থী বলেন, শানকে খুঁজে পাচ্ছিলাম না। তবে পরে জানতে পেরেছি। ও বার্ন ইনস্টিটিউটে আছে।
ফুয়াদের খোঁজ এখনো মেলেনি। কোথাও নেই। কেউ বলতে পারে না। অর বাবা-মার নাম নম্বরও জানি না। স্যারদের সঙ্গেও কথা বলতে পারছি না। ওর খবর কেউ বলতে পারেনি।
আদিব তবু কিছু বলতে পারছে। রেজোয়ান আমিন নাবিলের মুখ থেকে যেন কথাই বের হচ্ছিল না। বন্ধুর খোঁজ না মেলার স্পষ্ট ছাপ তার চোখে মুখে। বললেন, কেউ যদি একটু খোঁজ দিতে পারতো। সেদিন আমাদের সঙ্গেই ছিল ফুয়াদ। ও তো হোস্টেলে থাকতো। তাই বাবা-মা কারো সঙ্গে যোগাযোগ নেই আমাদের। পরিবার সম্পর্কে তেমন কিছু জানিও না।
দিয়াবাড়ীর আকাশে আজ হালকা রোদ। ভ্যাপসা গরম। নাবিলের চোখে ঘাম, না অশ্রু ঠিক বোঝা গেল না৷
গত সোমবার দুপুর ১টা ৬ মিনিটে রাজধানীর তেজগাঁও বিমান ঘাঁটি থেকে উড্ডয়ন করা একটি প্রশিক্ষণ বিমান উত্তরার মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজ চত্বরে বিধ্বস্ত হয়। এ দুর্ঘটনায় এখন পর্যন্ত ৩১ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে, আহত হয়েছেন আরও ১৬৪ জন।
ইইউডি/এসআইএস