অন্তর্বর্তী সরকারের মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক উপদেষ্টা ফারুক-ই-আজম বলেছেন, ইতিমধ্যে জুলাই গণঅভ্যুত্থান আন্দোলনের আহত-নিহতদের তালিকায় কিছু অসঙ্গতি পাওয়া গেছে। জুলাই আন্দোলনে সম্পৃক্ততা না হয়েও সেসময় যারা মারা গেছে, এরকম অনেকের নাম আমরা পেয়েছি।
বুধবার(৩০ জুলাই) জহুর হোসেন চৌধুরী হলে পেনিনসুলা ডেভেলপমেন্ট'র উদ্যোগে আয়োজিত মুগ্ধতার আলো সব শিশুর মাঝে ছড়িয়ে দিতে, ছোটদের মাসিক পত্রিকা মুগ্ধ জুলাই বিশেষ সংখার প্রকাশনা উৎসবে তিনি এসব কথা বলেন।
ফারুক-ই-আজম বলেন, জুলাইয়ের স্মৃতি যাতে অম্লান থাকে সরকার এ বিষয়ে কাজ করছে। জুলাই যোদ্ধাদের জন্য একটি অধ্যাদেশ করার জন্য সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ডিসেম্বরের শেষে এসে। সেই অধিদপ্তরটি গঠিত হবে মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয়ে। জানুয়ারির প্রথম দিকে এরকম পরিপত্র জারি করেছে কেবিনেট সচিবালয় থেকে। জানুয়ারির মাঝামাঝি সময়ে আমরা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে জুলাই শহীদদের একটি তালিকা পেয়েছি এবং রাত তিনটায় এটাকে গ্যাজেট করা হয়েছে। এটা অনেক গুরুত্ব দিয়ে আমরা বিবেচনায় নিয়েছি। একইভাবে ফেব্রুয়ারি মাসের মাঝামাঝি সময়ে আমরা জুলাই আহতদের তালিকা পেয়েছি। যেদিন আমরা তালিকা পেয়েছি ওইদিনই সেটিকে গ্যাজেট আকারে প্রকাশ করেছি।
তিনি আরও বলেন, জুলাইেয় আহতদের মাসিক ভাতার বিষয়টি নিয়ে কাজ করছি। একইভাবে তাদের পুনর্বাসনের বিষয়টিও যুক্ত হয়েছে। সে গুলো লিপিবদ্ধ ভাবে সরকারি প্রচেষ্টায় আমরা নিচ্ছি। আমরা আগে বাহির থেকে যেরকম বুঝতাম সচিবালয় কী জিনিস মন্ত্রণালয় কী জিনিস। কিন্তু দায়িত্বে এসে মনে হচ্ছে এগুলোর অতিদ্রুত পরিবর্তন দরকার। এগুলোর কোনোটাই সাধারণ মানুষের উপকারের জন্য করা হয়নি। এগুলো সংস্কার করতে পারলে মানুষ তাদের অধিকার ফিরে পাবে।
জুলাই আন্দোলনে শহীদ মীর মুগ্ধের পিতা মীর মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ১৮ জুলাই ২০২৪ আমরা পরিবারের সবাই মিলে কথা বলছিলাম, তখন মুগ্ধ আমাকে বলে বাবা ছাত্রদের আন্দোলন কি যৌক্তিক? আমি বললাম অবশ্যই। স্বাধীনতা যুদ্ধে অংশগ্রহণের সময় যদি আমার বয়স থাকতো তাহলে আমি যু্দ্ধে যোগ দিতাম। আমার একথা শোনার পরই মুগ্ধ তার মাকে বলে আমিও ছাত্রদের যৌক্তিক আন্দোলনে যোগ দিব। এরপরই সে আন্দোলনে অংশ নেয়। জুলাই আন্দোলনকারীদের মাঝে পানি ও বিস্কুট বিতরণ করতে গিয়ে মুগ্ধ শহীদ হন। সে আমাদের দেশের সবাইকে একটি বার্তা দিয়ে গেছে, মানুষ মানুষের জন্য। সবার উপরে মানুষ সত্য, তাহার উপরে নাই।
জুলাই গণঅভ্যুত্থানের শহীদ ও আহতদের রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি ও সম্মাননার জন্য হাইকোর্টে রিটকারী ও এডিটর ইমেরিটাস এম এ এন শাহীন বলেন, যারা সরকারের দায়িত্বে আছেন তাদের বলবো, যাদের কারণে আমরা মুক্ত ভাবে কথা বলতে পারছি তাদের যেন রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি ও সম্মাননা দেওয়া হয় সেই বিষয়ে কাজ করছি। ৭১ দেখিনি। কিন্তু পরবর্তীতে যারা এদেশের পতাকা আগলে রাখার কথা ছিলো তারাই দেশটাকে ধ্বংস করে গিয়েছে।
জুলাই আন্দোলেনে আহত শিক্ষার্থী কামরুল আহসান বলেন, শুধু জুলাই আন্দোলনের কারণে আজ আমরা স্বাধীন ভাবে কথা বলতে পারছি। বিগত ১৫ বছরের ফ্যাসিস্ট সরকারের আমলে কথা বলতে গেলেই গুম করা হতো, হত্যা করা হতো। আমরা কোনো রাজনৈতিক দলের না। আমরা দেশের সম্পদ। দেশের স্বার্থে আমরা আন্দোলন করেছি। আবারও কোনো সময় দরকার হলে আবারও মাঠে নেমে যাবো। বাংলাদেশ থেকে সকল রকমের দুর্নীতি,অপকর্মের মূলোৎপাটন জন্য লড়াই করে যাবো।
এমএম