ঢাকা, শুক্রবার, ২৪ শ্রাবণ ১৪৩২, ০৮ আগস্ট ২০২৫, ১৩ সফর ১৪৪৭

জাতীয়

দেশের রাজনীতিতে পরিবর্তনের বড় সুযোগ তৈরি হয়েছে: আলী রীয়াজ

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫:১২, আগস্ট ৮, ২০২৫
দেশের রাজনীতিতে পরিবর্তনের বড় সুযোগ তৈরি হয়েছে: আলী রীয়াজ আলী রীয়াজ

জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেছেন, ক্ষমতার ভারসাম্য নিশ্চিত করতে সংবিধান সংস্কার কমিশন থেকে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল। এর মধ্যে কয়েকটি বিষয়ে ইতোমধ্যে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।

শুক্রবার (৮ আগস্ট) জাতীয় সংসদ ভবনের এলডি হলে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি।  

তিনি বলেন, কেবল রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর মধ্যে ক্ষমতার ভারসাম্য আনলেই চলবে না। জাতীয় সংসদের গুরুত্বপূর্ণ কিছু কমিটিতে বিরোধীদলীয় প্রতিনিধিদের সভাপতিত্ব নিশ্চিত করা হলে নির্বাহী বিভাগের ক্ষমতার ওপর কার্যকর ‘চেক অ্যান্ড ব্যালেন্স’ প্রতিষ্ঠা সম্ভব। এছাড়া প্রধানমন্ত্রী পদের মেয়াদ ১০ বছরে সীমিত করার বিষয়েও ঐকমত্য হয়েছে।

অধিকাংশ রাজনৈতিক দল চায় না, প্রধানমন্ত্রী একইসঙ্গে দলীয় প্রধান থাকুক। এই অবস্থান বাস্তবায়িত হলে ক্ষমতার এককেন্দ্রীকরণ রোধ করা সম্ভব হবে বলে মনে করেন অধ্যাপক রীয়াজ।  

তিনি বলেন, কেবল সাংবিধানিক কাঠামো পরিবর্তন করলেই হবে না; বাংলাদেশের রাজনীতিতে এই মুহূর্তে পরিবর্তনের একটি বড় রকমের সুযোগ তৈরি হয়েছে।

স্থানীয় সরকার ব্যবস্থায় সংসদ সদস্যদের অনধিকার হস্তক্ষেপ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, জাতীয় সংসদের সদস্যদের স্থানীয় সরকার কার্যক্রমে জড়িত থাকার কোনো আইনগত ভিত্তি নেই। এ বিষয়ে আদালতের রায়ও রয়েছে। রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে প্রাথমিক পর্যায়ের আলোচনায় ৬২টি বিষয়ে যে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছে, তার মধ্যে স্থানীয় সরকার ব্যবস্থায় সংসদ সদস্যদের প্রভাব নিয়ন্ত্রণের সুস্পষ্ট প্রস্তাব অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।

জাতীয় সনদ চূড়ান্তকরণের সময় যেসব বিষয়ে ‘নোট অব ডিসেন্ট’ রয়েছে, সেগুলোর ভবিষ্যৎ কী-এমন প্রশ্নে অধ্যাপক রীয়াজ বলেন, এ ক্ষেত্রে বৈশ্বিক অভিজ্ঞতা ও বাস্তব প্রক্রিয়া বিবেচনায় বিশেষজ্ঞদের মতামত নেওয়া হবে। পাশাপাশি যেখানে অধিকাংশ রাজনৈতিক দল একমত, তা গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনায় নেওয়া উচিত।

কিছু রাজনৈতিক দল জাতীয় সনদকে ভিত্তি করে আগামী জাতীয় নির্বাচনের কথা বললেও, কমিশনের কাজ নির্বাচন নয় বলে পরিষ্কার করেন অধ্যাপক রীয়াজ।  

তিনি বলেন, ঐকমত্য কমিশনের কাজ রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করে একটি জাতীয় সনদ প্রণয়ন করা। এই সনদ বাস্তবায়নের জন্য কমিশন পর্যায়ক্রমে রাজনৈতিক দল ও বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে আলোচনা করবে। তবে এসব আলোচনা দীর্ঘস্থায়ী হবে না।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন কমিশনের সদস্য বিচারপতি মো. এমদাদুল হক, ড. ইফতেখারুজ্জামান, ড. বদিউল আলম মজুমদার, সফর রাজ হোসেন, ড. মো. আইয়ুব মিয়া এবং প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দার।

উল্লেখ্য, রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠার প্রাথমিক আলোচনায় ৬২টি বিষয়ে ঐকমত্য তৈরি হয়েছে। দ্বিতীয় পর্যায়ের আলোচনায় ২০টি বিষয়ের মধ্যে ১১টি বিষয়ে কোনো ভিন্নমত ছিল না; বাকি নয়টি বিষয়ে 'নোট অব ডিসেন্ট'সহ সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে।

টিএ/এসআইএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।