ঢাকা, শনিবার, ২৫ শ্রাবণ ১৪৩২, ০৯ আগস্ট ২০২৫, ১৪ সফর ১৪৪৭

জাতীয়

নির্বাচনে আওয়ামী লীগ থাকলে গণরোষ সৃষ্টি হবে: মঞ্জু

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬:০৭, আগস্ট ৯, ২০২৫
নির্বাচনে আওয়ামী লীগ থাকলে গণরোষ সৃষ্টি হবে: মঞ্জু

আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টির চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান মঞ্জু বলেছেন, পতিত আওয়ামী লীগের অধিকাংশ নেতাই গণহত্যায় যুক্ত ও গণধিকৃত। তারা নির্বাচনে এলে গণরোষ সৃষ্টি হবে, এতে পরিস্থিতি সামাল দেওয়া যাবে না।

কাজেই তাদের নির্বাচনে অংশগ্রহণ সম্ভব নয়।

শনিবার (৯ আগস্ট) বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন কর্পোরেশনে (বিএফডিসি) সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য নির্বাচন কমিশন, প্রার্থী ও ভোটারদের ভূমিকা নিয়ে আয়োজিত ছায়া সংসদে তিনি এসব কথা বলেন। সভাপতিত্ব করেন ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ।

এবি পার্টির চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান মঞ্জু বলেন, আগামী নির্বাচনকে কেন্দ্র করে গৃহযুদ্ধের কোনো আশংকা নেই। নির্বাচনের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হবে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি করা। নির্বাচনের সুষ্ঠু পরিবেশ তৈরি করতে না পারলে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে দায়িত্ব থেকে সরে যাওয়া উচিত। নির্বাচনে অনিয়ম হলে নির্বাচন বন্ধ করে দেওয়ার ক্ষমতা প্রয়োগ করতে না পারলে নির্বাচন কমিশন ব্যর্থ হবে। একটি দল ক্ষমতায় আসছে— এমন প্রচারণা সামনে একটি ভয়াবহ পরিস্থিতি সৃষ্টি হতে পারে। ফ্যাসিস্ট হাসিনার আমলে নির্বাচনের টোটাল সিস্টেমই করাপ্ট করা হয়েছে। প্রচলিত আসন কেন্দ্রিক ভোট পদ্ধতি দুর্নীতির কারণে ফেল করেছে। আবার পিআর পদ্ধতি সমর্থন যোগ্য হলেও তাতে ঝুলন্ত পার্লামেন্ট হওয়ার আশংকা রয়েছে। তাই এবারের নির্বাচনে মিশ্র পদ্ধতি বেছে নেওয়া যায়। আগামীতে সরকারি দল ও বিরোধী দল মিলে নির্বাচন কমিশন গঠন করবে— এটি ঐকমত্য কমিশনের একটি বড় অর্জন। এতে নির্বাচন কমিশন শক্তিশালী হবে এবং তাদের সক্ষমতা বাড়বে।  

সভাপতির বক্তব্যে ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ বলেন, ফ্যাসিবাদ ফিরে আসার আশঙ্কা দূর করতে প্রধান উপদেষ্টার ঘোষিত আগামী রোজার আগেই নির্বাচন সম্পন্ন করতে হবে। পরাজিত ফ্যাসিবাদী গোষ্ঠী পাশের দেশে অফিস খুলে দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে করছে। নির্বাচন বানচাল করতে গণঅভ্যুত্থানের পক্ষের শক্তিগুলোর মধ্যে ফাটল ধরানোর অপচেষ্টায় লিপ্ত রয়েছে। কেউ কেউ ১/১১ সৃষ্টির বা গৃহযুদ্ধের জুজুর ভয় দেখাচ্ছে— এটা অমূলক। এ জন্য অবশ্যই ফ্যাসিবাদ বিরোধী ঐক্য জরুরি। কোনো পদ্ধতিতে নির্বাচন হবে তা নিয়ে এখনো রাজনৈতিক দলগুলো ঐক্যমত্যে আসতে পারেনি। শীঘ্রই জুলাই সনদে সব দলগুলোর স্বাক্ষরের কথা রয়েছে। কিন্তু এখনো যে অনৈক্য বিরাজ করছে তাতে আমি শীর্ষ রাজনৈতিক দলগুলোর জুলাই সনদে স্বাক্ষর করা নিয়ে শঙ্কিত হচ্ছি। তবে গণতন্ত্র, দেশ ও জাতীর স্বার্থে সব পক্ষকে যার যার অবস্থান থেকে কিছুটা ছাড় দিয়ে হলেও জুলাই সনদে স্বাক্ষর করা উচিত।  

তিনি আরও বলেন, স্বৈরাচারবিরোধী দলগুলোর মধ্যে দূরত্ব কমিয়ে আনতে হবে। জনগণের আকাঙ্ক্ষা পূরণে সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের লক্ষ্যে সবাইকে ভূমিকা রাখতে হবে। এর জন্য নির্বাচন কমিশন, দল, প্রার্থী ও ভোটারদের দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করা আবশ্যক। পাল্টাপাল্টি দোষারোপের রাজনীতি বর্জন করে নেতাদের বক্তব্যে শালীনতা বজায় রাখা উচিত। যাতে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে অভ্যুত্থানে অংশগ্রহণকারী দলগুলোর মধ্যে কোনো বিভেদ তৈরি না হয়। রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে এখনো যে কাদা ছোড়াছুড়ির অপসংস্কৃতি বিরাজ করছে তা আমাদের ব্যথিত করে। যাতে আসন্ন জাতীয় নির্বাচনের মাধ্যমে মানুষের ভোটের অধিকার বাস্তবায়ন হয়। যে ভোট প্রদান থেকে দেশের মানুষ ১৫ বছর বঞ্চিত ছিল। সেই ভোট যাতে উৎসবমুখর হয়। প্রত্যেক নাগরিক যাতে নির্বিঘ্নে তার পছন্দের প্রার্থীকে নির্ভয়ে ভোট দিতে পারে তার জন্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করতে হবে।

ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির আয়োজনে ‘সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য নির্বাচন কমিশনের চেয়ে প্রার্থীসহ ভোটারদের ভূমিকাই প্রধান’ শীর্ষক ছায়া সংসদে ঢাকা কমার্স কলেজের বিতার্কিকদের পরাজিত করে ঢাকা কলেজের বিতার্কিকরা বিজয়ী হওয়ার গৌরব অর্জন করে। প্রতিযোগিতায় বিচারক ছিলেন, অধ্যাপক আবু মুহাম্মদ রইস, সাংবাদিক মাঈনুল আলম, সাংবাদিক কাজী জেবেল, সাংবাদিক সাইদুর রহমান ও শিরিনা খাতুন বীথি। প্রতিযোগিতা শেষে অংশগ্রহণকারী দলকে ট্রফি, ক্রেস্ট ও সনদপত্র দেওয়া হয়।

এমএমআই/এমজে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।