গাজীপুর: গাজীপুরের শ্রীপুরে পঞ্চম শ্রেণির এক শিক্ষার্থীকে বাল্যবিয়ের হাত থেকে রক্ষা করলো ‘শিশু সুরক্ষা দল’।
বৃহস্পতিবার (১২ নভেম্বর) রাতে উপজেলার সিংগারদিঘী গ্রামে নীলিমা (১১) নামে ওই শিক্ষার্থীকে বিয়ে থেকে রক্ষা করে তারা।
নীলিমা সিংগারদিঘী গ্রামের আবু সাঈদের কন্যা। সে সিংগারদিঘী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সমাপনী পরীক্ষার্থী। নীলিমার সঙ্গে সিংগারদিঘী গ্রামের ফজলুল হকের ছেলে সাদির (২৩) বিয়ের আয়োজন চলছিল।
প্ল্যান ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ ও ঢাকা আহসানিয়া মিশন পরিচালিত মাওনা ইউনিয়ন শিশু ফোরামের উপদেষ্টা এবং সিংগারদিঘী গ্রামের বাসিন্দা কলেজশিক্ষার্থী সাহিদা আক্তার স্বর্ণার উদ্যোগে এ বাল্যবিয়ে বন্ধ করে ‘শিশু সুরক্ষা দল’।
স্বর্ণা বাংলানিউজকে জানান, বৃহস্পতিবার তিনি নীলিমাকে বিয়ে দেওয়ার প্রক্রিয়ার কথা জানতে পারেন। খবরের সত্যতা যাচাইয়ের জন্য তিনি ওই গ্রামের শিশু সুরক্ষা দলের সদস্য মেহেদী হাসানসহ কয়েকজনের সহযোগিতা নেন। পরে এলাকাবাসীর কাছ থেকেও খবরের সত্যতা পান তিনি। ওইদিন সিংগারদিঘী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সিরাজুল ইসলাম, বিদ্যালয় ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্য শহিদুল ইসলাম, উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা বিলকিস নাহারসহ সংশ্লিষ্ট সকলকে বিষয়টি অবহিত করেন তিনি।
সিংগারদিঘী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সিরাজুল ইসলাম জানান, খবর পেয়ে বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে স্থানীয় শিশু সুরক্ষা দলের উপদেষ্টা স্বর্ণাসহ কয়েকজন কমিউনিটি নেতা নীলিমাদের বাড়িতে যান। সেখানে বিয়ের সকল আয়োজন তারা দেখতে পান। এর আগেই তাদের আগমনের খবর শুনে বরপক্ষের লোকজন পালিয়ে যায়।
এরপর কমিউনিটি নেতাদের পক্ষ থেকে শিশু নীলিমার বাবা আবু সাঈদ, মা জরিনা বেগমকে বাল্যবিয়ের কুফল সম্পর্কে বোঝানো হয়। বিষয়টি বুঝতে পেরে তারাও তাদের কন্যাকে বিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করেন।
বাল্যবিয়ে থেকে রক্ষা পাওয়া শিশু নীলিমা জানায়, সে উচ্চ শিক্ষিত হয়ে ভাল মানুষ হিসেবে প্রতিষ্ঠা পেতে চায়।
ভাওয়াল বদরে আলম সরকারি কলেজের সম্মান দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী স্বর্ণা শিশুকালে নিজের বিয়েসহ ৩০টি বাল্যবিয়ে বন্ধে ভূমিকা রাখায় নরওয়ে থেকে পুরস্কৃত হন।
বাংলাদেশ সময়: ২০৪৯ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৩, ২০১৫
এইচএ/