ঢাকা: সিম কার্ড ও রিচার্জ কার্ড প্রাপ্তির মতো টেলিটকের ছোট ছোট সমস্যা সমাধানে দু’এক মাসের মধ্যে একটি দৃশ্যমান পরিবর্তন দেখতে চান ডাক ও টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম।
একই সঙ্গে কাস্টমার কেয়ার সেন্টারগুলোতে লোকবল বাড়ানো ও অদক্ষদের সরিয়ে দিতেও নির্দেশ দিয়েছেন প্রতিমন্ত্রী।
এতোদিনে সমস্যাগুলো সমাধান না হওয়ায় কড়া হুঁশিয়ারি ও সমালোচনা করে প্রতিমন্ত্রী প্রতিষ্ঠানটির এমডিকে একটি ছক তৈরি করতে নির্দেশ দিয়েছেন।
বুধবার (১৮ নভেম্বর) গুলশানে টেলিটকের করপোরেট অফিসে অপারেটরটির কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকের পর সাংবাদিকদের সামনে প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) গিয়াস উদ্দিন আহমেদকে এসব নির্দেশনা দেন তারানা হালিম।
সকাল ১০টার দিকে টেলিটকের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকে বসেন প্রতিমন্ত্রী। দু’দিন আগে থেকে নিজের ফেসবুক ওয়ালে নেওয়া টেলিটকের বিরুদ্ধে অভিযোগ ও তা সমাধানে পরামর্শগুলো নিয়ে কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করেন তিনি।
সাংবাদিকদের সামনে প্রতিমন্ত্রী এমডিকে প্রশ্ন করেন, টেলিটকের সিম বাজারে নেই কেন, কেন থাকবে না? এগুলো খুব সহজ জিনিস, এগুলো এতোদিনে হয়নি কেন?
অধিক সংখ্যক ব্যবহারের জন্য টেলিটকের সিমকার্ড, টপআপ, রিচার্জ কার্ড সরবরাহ নিশ্চিত করার মতো ছোট ছোট সমস্যাগুলো নিজেরাই সমাধান করা যেতে পারে বলে মনে করেন তারানা।
তিনি বলেন, আগে এসব ছোট ছোট সমস্যাগুলোর উপর গুরুত্বারোপ করতে চাই। নিজস্ব অর্থায়নে এসব করা সম্ভব। আশা করি টেলিটকের কর্মকর্তারা এসব সমস্যা সমাধানে সাহায্য করবেন।
টেলিটকের কাস্টমার কেয়ার সেন্টার নিয়ে অনেক অভিযোগ উল্লেখ করে তারানা হালিম বলেন, কাস্টমার কেয়ারের লোকজন ঠিকমতো কথা বলতে পারছেন না, এতে কাস্টমাররা ফেডআপ হয়ে যায়। নিজেকে সাকসেস দেখতে হলে সেবা দিতে হবে। এগুলো কি খুব কঠিন কাজ?
‘কাস্টমার কেয়ারে যারা আছে তাদের শিফট করেন, রিপ্লেস করেন। অদল বদল করেন, নতুন লোক দিয়ে দেন। ’
গ্রাহকদের অভিযোগ নিয়ে তারানা হালিম বলেন, থ্রি-জি’র জায়গায় টু-জি সেবা পায় না গ্রাহক। এসময় টেলিটক এমডি জানান, আগামী ২/৩ মাসের মধ্যে ইউনিয়ন পর্যায়ে ফাইবার অপটিক্যাল নিতে পারবো।
টেলিটককে নিজের পায়ে দাঁড়ানোর সুযোগটি কাজে লাগাতে বলেন প্রতিমন্ত্রী।
সরকারি কাজে প্রকিউরমেন্ট দেরিতে হয় জানালে প্রতিমন্ত্রী বলেন, স্পিড আপ করার জন্য একটি আলাদা ইউনিট করেন।
‘কতো দিনের মধ্যে এগুলো করতে পারবেন, তার একটা ছক কাটেন। দুই মাসের বেশি সময় নেবেন না। ছোট ছোট সমস্যা সমাধানে এক-দুই মাসের মধ্যে দৃশ্যমান পরিবর্তন দেখতে চাই। ’
টেলিটকের ‘রি-ব্র্যান্ডিং’ ফেব্রুয়ারিতে করার কথা থাকলেও তা দ্রুত করার নির্দেশ দেন প্রতিমন্ত্রী।
অন্য অপারেটরের সঙ্গে তুলনা করে এমডি জানান, টেলিটকের বিনিয়োগ তাদের দশ ভাগের মাত্র এক ভাগ। বর্তমানে সব মিলিয়ে প্রায় ৩২-৩৩শ’ কোটি টাকা বিনিয়োগ রয়েছে বলে জানান এমডি।
টেলিটক দীর্ঘদিন অবহেলিত ছিলো জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী ই অপারেটরটির বিনিয়োগের জন্য নিজেও বিনিয়োগকারী খুঁজছেন জানিয়ে বলেন, আমরা টেলিটকের জন্য সফট লোন চাই।
টেলিটককে প্রতিযোগিতায় অবতীর্ণ করার জন্য ভবিষতে টাওয়ার শেয়ারিং হলে সমস্যা অনেকটা কেটে যাবে বলে মনে করেন প্রতিমন্ত্রী। তবে টাওয়ার করাটাও চ্যালেঞ্জ। এছাড়া এমএনপি (মোবাইল নম্বর পোর্টেবিলিটি) হলে সমস্যাগুলো থাকবে না।
রাষ্ট্রায়ত্ত মোবাইল অপারেটরটির অভ্যন্তরীণ দুর্নীতি, অবৈধ ভিওআইপি কারবারি তদন্ত করে স্থবিরতা কাটিয়ে উঠতে একটি উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে বলেও জানিয়েছেন প্রতিমন্ত্রী।
ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের সচিব ফয়জুর রহমান চৌধুরী ছাড়াও টেলিটকের কর্মকর্তারা এসময় উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৬৪৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৮, ২০১৫
এমআইএইচ/এএ