ঢাকা: বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ও ভারতের রাজ্যসভার সদস্য প্রফেসর ড. ভালচন্দ্র মুনগেকার বলেছেন, গণতন্ত্র জীবনের পথ। গণতন্ত্রকে রক্ষা করতে হবে ও জীবনের সর্বক্ষেত্রে ছড়িয়ে দিতে হবে।
বুধবার (১৮ নভেম্বর) দুপুর সাড়ে ১২টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) আর সি মজুমদার অডিটরিয়ামে গবেষণা উন্নয়ন কালেকটিভ আয়োজিত ‘বৈষম্য, উন্নয়ন এবং গণতন্ত্র’ শীর্ষক এক গণবক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, প্রতিটি মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠিত করতে গণতন্ত্রের প্রয়োজন। বিশ্বে আজ কোথাও আব্রাহাম লিংকনের গণতন্ত্র নেই। গণতন্ত্র আজ ধনীর জন্য, ধনীদের দ্বারা পরিচালিত। তিনি যে গণতন্ত্রের স্বপ্ন দেখেছেন তা আজ বিলুপ্ত প্রায়।
ড. ভালচন্দ্র বলেন, উন্নয়নের সঙ্গে বৈষম্যের পারস্পরিক সম্পর্ক রয়েছে। কোনো দেশ উন্নয়নের দিকে এগিয়ে গেলে সেখানে বৈষম্যের প্রসঙ্গ আপনা-আপনি চলে আসে।
লিঙ্গীয় বৈষম্য বিষয়ে ভারতীয় এই অর্থনীতিবিদ বলেন, আমাদের পুরুষদের ধারণা নারীরা সবসময় অবহেলিত। পুরুষেরা নিজেরা মনে করে নারীর ওপর আধিপত্য বিস্তার করবে। এভাবেই সমাজে লিঙ্গীয় বৈষম্য তৈরি হয়। অথচ নারী-পুরুষ দুই-ই সমাজের অংশ। শিক্ষা, রাজনীতি, সংস্কৃতি ও অর্থনীতি সবক্ষেত্রে পুরুষের পাশাপাশি নারীরাও সমান ভূমিকা রাখছেন।
বাংলাদেশের প্রেক্ষাপট তুলে ধরে তিনি বলেন, বাংলাদেশের প্রায় অর্ধকোটি জনগোষ্ঠী দলিত। তারা সর্বক্ষেত্রে বঞ্চিত। বাংলাদেশের উন্নয়নের আওতায় যদি এ জনগোষ্ঠীকে অন্তর্ভুক্ত করা না যায়, তাহলে সামগ্রিক উন্নয়ন ব্যাহত হবে।
ইউএনডিপির ২০০৫ একটি তথ্য তুলে ধরে তিনি বলেন, বিশ্বের প্রভাবশালী ৫০০ লোকের যে আয় তা হচ্ছে ৪৫ কোটি আয়ের লোকের আয়ের চেয়ে বেশি। তারা সবাই উন্নত বিশ্বের বাসিন্দা। এ থেকেই বৈষম্যের ধারণা পেতে পারি।
তিনি আরো বলেন, বাংলাদেশের ১৫-২০ শতাংশ মানুষ ৬০ শতাংশ, এমনকি ৭৫-৮০ শতাংশ আয়ের দ্বারা পুরো জনগোষ্ঠীর ওপর প্রভাব বিস্তার করেন। বিশ্বের ৬০ শতাংশ সম্পদ আজ ২০ শতাংশ মানুষের হাতে। তারাই সমাজের সবকিছুতে প্রভাব বিস্তার করে আসছেন।
ঢাবির ইতিহাস বিভাগের চেয়ারম্যান প্রফেসর ড.সোনিয়া নিশাত আমিনের সভাপতিত্বে এতে আরো বক্তব্য রাখেন, বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল, ঢাবির কলা অনুষদের ডিন আকতারুজ্জামান, ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক মেসবাহ কামাল ও নাগরিক উদ্যোগের প্রধান নির্বাহী পরিচালক জাকির হোসেন প্রমুখ।
বাংলাদেশ সময়: ১৮৫৬ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৮, ২০১৫
এমআইকে/এসআর