লালমনিরহাট: লালমনিরহাটের সদ্য বিলুপ্ত ছিটমহলবাসীদের মধ্যে যারা ভারতের নাগরিকত্ব পেয়েছেন তাদের প্রথম দলটি নিজ দেশের উদ্দেশে রওনা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১৯ নভেম্বর) সকাল সাড়ে ১১টার দিকে প্রথম দলটি যাত্রা শুরু করে।
দুপুর পৌনে ১টায় পাটগ্রামের বুড়িমারী স্থলবন্দরের ইমিগ্রেশনের ইনচার্জ উপ পরিদর্শক (এসআই) আমিনুল ইসলাম বাংলানিউজকে জানান, বিলুপ্ত উত্তর গোতামারী ছিটের ৬২ জনকে ভারতে পাঠানোর সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে। কিছুক্ষণের মধ্যে তারা বন্দরে এসে পৌঁছাবে।
সকালে যাত্রার শুরুতে সরকারের পক্ষ থেকে নাস্তা দেওয়া হয়। এ ছিটের ১৮ পরিবারের ৬২ জনের মালপত্র পরিবহনের জন্য চারটি বড় ট্রাক ও যাত্রী পরিবহনের জন্য বাসের ব্যবস্থাও করা হয়েছে।
যাত্রাপথে তাদের নিরাপত্তা দিতে পুলিশের পাশাপাশি রয়েছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) সদস্য। তারা পুরো এলাকা টহল দিচ্ছে। ভারতে গমনেচ্ছুদের গাড়ি বহরের সামনে ও পেছনে রয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর গাড়ির বহর।
বৃহস্পতিবার ট্রাভেল পাস পাওয়াদের বিদায় জানাতে উত্তর গোতামারী আসেন হাতীবান্ধা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান লিয়াকত হোসেন বাচ্চু, হাতীবান্ধা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাহবুবুর রহমান, হাতীবান্ধা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল মতিন প্রধানসহ অনেকে।
চলতি বছরের ৩১ জুলাই মধ্যরাতে দীর্ঘ ৬৮ বছরের বন্দি জীবন থেকে মুক্তি মিলে ভারত-বাংলাদেশের ১৬২টি ছিটমহলের কয়েক হাজার মানুষের। এরপর উভয় দেশে সরকারিভাবে যৌথ জরিপ কার্যক্রম পরিচালনা করে। এ জরিপ কাজের মাধ্যমে ছিটবাসী নিজেদের ইচ্ছামতো নাগরিকত্বের আবেদন করেন। এসময় বাংলাদেশের অভ্যন্তরে থাকা ১১১টি ছিটমহলের মধ্যে ৯৭৯ জন ভারতের নাগরিকত্ব নিতে আবেদন করেন। অপরদিকে, ভারত থেকে কেউ বাংলাদেশের নাগরিকত্ব নিতে আগ্রহ দেখাননি।
ভারতে নাগরিকত্বের আবেদনকারীদের মধ্যে ট্রাভেল পাস ইস্যু করে ভারত সরকার। সে অনুযায়ী ট্রাভেল পাসধারীদের ৩০ নভেম্বরের মধ্যে ভারত পাঠানোর সিদ্ধান্ত হয় উভয় দেশের ডিসি-ডিএম পর্যায়ের যৌথ সভায়।
লালমনিরহাট জেলার তিন উপজেলার সদ্য বিলুপ্ত ৫৯টি ছিটমহলের ৩৯টি পরিবারের ১৯৫ জন ভারতের ট্রাভেল পাস পেয়েছেন। তাদের কয়েকটি দলে বিভক্ত করে ভারত পাঠানো হচ্ছে। এর প্রথম দলটি বৃহস্পতিবার ভারতের উদ্দেশে বাংলাদেশ ছাড়ছেন।
লালমনিরহাটের জেলা প্রশাসক হাবিবুর রহমান বাংলানিউজকে জানান, ট্রাভেল পাসধারীদের মধ্যে প্রথম দলে ৬২ জনকে নির্বিঘ্নে ভারতে পাঠানো হচ্ছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৩০৪ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৯, ২০১৫
এসআই