ঢাকা, শুক্রবার, ১৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

ভারতে গেলো বিলুপ্ত ছিটবাসীদের প্রথম দল

খোরশেদ আলম সাগর, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৪৩ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৯, ২০১৫
ভারতে গেলো বিলুপ্ত ছিটবাসীদের প্রথম দল ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

লালমনিরহাট: লালমনিরহাটের সদ্য বিলুপ্ত ছিটমহলবাসীদের মধ্যে যারা ভারতের নাগরিকত্ব পেয়েছেন তাদের প্রথম দলটি নিজ দেশে পৌঁছেছে।

লালমনিরহাটের বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে বৃহস্পতিবার (১৯ নভেম্বর) দুপুর ২টার দিকে প্রথম দলটি ভারত পৌঁছায়।

এই দলে ১৮ পরিবারে ৬২ জন রয়েছেন। এই দলের সবাই লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলার সদ্য বিলুপ্ত উত্তর গোতামারী ছিটমহলের বাসিন্দা। এর আগে সকাল সাড়ে ১১টার দিকে যাত্রা শুরু করেন তারা।

পাটগ্রামের বুড়িমারী স্থলবন্দরের ইমিগ্রেশনের ইনচার্জ উপ-পরিদর্শক (এসআই) আমিনুল ইসলাম বাংলানিউজকে জানান, বিলুপ্ত উত্তর গোতামারী ছিটের ৬২ জনকে ভারতে পাঠানো হয়েছে। তারা বুড়িমারীর ওপারে চ্যাংরাবান্ধা বন্দরে প্রবেশ করলে ভারত সরকারের পক্ষ থেকে তাদের মিষ্টি খাইয়ে বরণ করে নেওয়া হয়। এছাড়া তাদের সংবর্ধনা জানাতে ভারতের মেদেনীপুর জেলার ভোটবাড়ি এলাকায় (চ্যাংরাবান্ধা বন্দর সংলগ্ন) সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে।  

সকালে যাত্রার শুরুতে সরকারের পক্ষ থেকে নাস্তা দেওয়া হয়। এ ছিটের ১৮ পরিবারের ৬২ জনের মালপত্র পরিবহনের জন্য চারটি বড় ট্রাক ও যাত্রী পরিবহনের জন্য বাসের ব্যবস্থাও করা হয়।

যাত্রাপথে তাদের নিরাপত্তা দিতে পুলিশের পাশাপাশি বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) সদস্য নিয়জিত ছিল। ভারতে গমনেচ্ছুদের গাড়ি বহরের সামনে ও পেছনে ছিল আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর গাড়ির বহর।

ট্রাভেল পাস পাওয়াদের বিদায় জানাতে বৃহস্পতিবার বিলুপ্ত ওই ছিটে (উত্তর গোতামারী) আসেন হাতীবান্ধা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান লিয়াকত হোসেন বাচ্চু, হাতীবান্ধা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাহবুবুর রহমান, হাতীবান্ধা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল মতিন প্রধানসহ অনেকে।

চলতি বছরের ৩১ জুলাই মধ্যরাতে দীর্ঘ ৬৮ বছরের বন্দি জীবন থেকে মুক্তি মিলে ভারত-বাংলাদেশের ১৬২টি ছিটমহলের কয়েক হাজার মানুষের। এরপর উভয় দেশে সরকারিভাবে যৌথ জরিপ কার্যক্রম পরিচালনা করে। এ জরিপ কাজের মাধ্যমে ছিটবাসী নিজেদের ইচ্ছামতো নাগরিকত্বের আবেদন করেন। এসময় বাংলাদেশের অভ্যন্তরে থাকা ১১১টি ছিটমহলের মধ্যে ৯৭৯ জন ভারতের নাগরিকত্ব নিতে আবেদন করেন। অপরদিকে, ভারত থেকে কেউ বাংলাদেশের নাগরিকত্ব নিতে আগ্রহ দেখাননি।

ভারতে নাগরিকত্বের আবেদনকারীদের মধ্যে ট্রাভেল পাস ইস্যু করে ভারত সরকার। সে অনুযায়ী ট্রাভেল পাসধারীদের ৩০ নভেম্বরের মধ্যে ভারত পাঠানোর সিদ্ধান্ত হয় উভয় দেশের ডিসি-ডিএম পর্যায়ের যৌথ সভায়।

লালমনিরহাট জেলার তিন উপজেলার সদ্য বিলুপ্ত ৫৯টি ছিটমহলের ৩৯টি পরিবারের ১৯৫ জন ভারতের ট্রাভেল পাস পেয়েছেন। তাদের কয়েকটি দলে বিভক্ত করে ভারত পাঠানো হচ্ছে। এর প্রথম দলটি বৃহস্পতিবার ভারতে পাঠানো হলো।

বাংলাদেশ সময়: ১৪৪২ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৯, ২০১৫
এসআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।