ঢাকা: দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণমন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়ার সংসদ সদস্য এবং মন্ত্রী পদের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে দায়ের করা রিট আবেদন খারিজ করে দিয়েছেন হাইকোর্ট।
বৃহস্পতিবার (১৯ নভেম্বর) বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের তৃতীয় হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রিট খারিজ করে দেন।
রিট আবেদনের পক্ষে রিট আবেদনকারী আইনজীবী ইউনুচ আলী আকন্দ নিজে শুনানি করেন। মায়ার পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী আবদুল বাসেত মজুমদার ও সাঈদ আহমেদ রাজা।
গত ১৪ জুন একটি দুর্নীতি মামলায় মায়াকে খালাস করে হাইকোর্টের দেওয়া রায় বাতিল করে নতুন করে আপিল শুনানির আদেশ দেন আপিল বিভাগ।
এরপর দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণমন্ত্রী মায়ার এমপি ও মন্ত্রী পদে থাকার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে গত ০৭ জুলাই হাইকোর্টে রিট আবেদনটি দায়ের করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ড. মো. ইউনুচ আলী আকন্দ।
রিটে কোন কর্তৃত্ববলে মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া সংসদ সদস্য এবং মন্ত্রীপদে আছেন তা জানতে চেয়ে রুল জারির আরজি জানানো হয়।
রিট আবেদনে মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী, প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও জাতীয় সংসদের স্পিকারকে বিবাদী করা হয়।
গত ১৭ আগস্ট রিটের প্রাথমিক শুনানি শেষে রিটের ওপর বিভক্ত আদেশ দেন হাইকোর্টের অপর একটি বেঞ্চ। জ্যেষ্ঠ বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী রুল জারি করলেও কনিষ্ঠ বিচারপতি মো. আশরাফুল কামাল আবেদনটি খারিজ করে দেন।
বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী কোন কর্তৃত্ববলে মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া সংসদ সদস্য এবং মন্ত্রী পদে আছেন তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন। দুই সপ্তাহের মধ্যে মায়াকে রুলের জবাব দিতে বলা হয়।
নিয়ম অনুযায়ী আবেদনটি পরে প্রধান বিচারপতির কাছে পাঠানো হয়। বিষয়টি নিষ্পত্তির জন্য বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদকে দায়িত্ব দিয়ে তৃতীয় একক বেঞ্চ গঠন করে দেন প্রধান বিচারপতি।
রিটে বলা হয়, সংবিধানের ৬৬ এর ২ (ঘ) দফা অনুসারে দণ্ডিত ব্যক্তি সংসদ সদস্য বা মন্ত্রী পদে থাকতে পারেন না। সংবিধানের ওই অনুচ্ছেদে বলা হয়, সংসদে নির্বাচিত হওয়ার যোগ্যতা ও অযোগ্যতার বিষয়ে বলা হয়েছে, যদি কেউ নৈতিক স্খলনজনিত কোনো ফৌজদারি অপরাধে দোষী সাব্যস্ত হয়ে অনূন্য দুই বছরের কারাদণ্ডে দণ্ডিত হন এবং তার মুক্তিলাভের পর পাঁচ বছরকাল অতিবাহিত না হয়ে থাকে, তবে তিনি সংসদ সদস্য থাকার যোগ্য হবেন না।
কারণ, গত ১৪ জুন একটি দুর্নীতি মামলায় মায়াকে খালাস করে হাইকোর্টের দেওয়া রায় বাতিল করে নতুন করে আপিল শুনানির আদেশ দিয়েছেন আপিল বিভাগ।
আপিল বিভাগের এ রায়ের পরে মায়ার পদে থাকা অবৈধ বলে দাবি করেন হয় ইউনুচ আলী। তার মতে, যেহেতু মায়ার খালাসের রায় বাতিল হয়ে গেছে, সেহেতু তার সাজা বহাল হয়ে গেছে। এখন তিনি আর পদে থাকতে পারেন না।
অন্যদিকে মায়ার আইনজীবী আবদুল বাসেত মজুমদারের দাবি, যেহেতু আপিল বিচারাধীন, সেহেতু মন্ত্রিত্ব ও সংসদ সদস্য পদ নিয়ে ৬৬ (২) (ঘ) অনুচ্ছেদটি এক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে না।
তবে দুর্নীতি দমন কমিশনের আইনজীবী খুরশীদ আলম দাবি করেন, মায়ার সংসদ সদস্য পদ ধরে রাখা এখন উচিত নয়।
বাংলাদেশ সময়: ১৪৫৩ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৯, ২০১৫
ইএস/বিএস/এএসআর