ঢাকা, শুক্রবার, ১৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

৬৮ বছর পর নিজ দেশে গেল বিলুপ্ত ছিটবাসীর প্রথম দল

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৫৯ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৯, ২০১৫
৬৮ বছর পর নিজ দেশে গেল বিলুপ্ত ছিটবাসীর প্রথম দল ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

লালমনিরহাট: দীর্ঘ ৬৮ বছর বন্দি জীবনের মুক্তির পর অনেক জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটিয়ে অবশেষে নিজ দেশে পা রাখলেন বিলুপ্ত ছিটমহলের ৬২ জন।

বৃহস্পতিবার (১৯ নভেম্বর) দুপুর ২টায় লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলার বুড়িমারী স্থলবন্দর হয়ে ভারতে পা রাখলেন ছিটবাসী।



এ সময় তাদের সঙ্গে ভারতে প্রবেশ করেন বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতীয় সহকারী হাইকমিশনার সন্দীপ মিত্র ও বিলুপ্ত ছিটমহল বিনিময় কমিটির বাংলাদেশ ইউনিটের নেতারা।

এর আগে উভয় দেশে বিলুপ্ত ছিটমহল বিনিময় সমন্বয় কমিটির নেতারা বুড়িমারী বন্দরে মিষ্টি বিনিময় করেন। সেখানে উপস্থিত ছিলেন, ওই কমিটির ভারত ইউনিটের সভাপতি দ্বীপ্তিমান গুপ্ত, বাংলাদেশ ইউনিটের সভাপতি মঈনুল হক, সম্পাদক গোলাম মোস্তফা, লালমনিরহাট ইউনিটের সাধারণ সম্পাদক আজিজুল ইসলাম।

বুড়িমারী ইমিগ্রেশনের উপ-পরিদর্শক (এসআই) আমিনুল ইসলাম বাংলানিউজকে জানান, ট্রাভেল পাশধারী বিলুপ্ত ছিটমহলের ৬২জন নারী-পুরুষ ও শিশু বেলা ২টায় চেংরাবান্ধা বন্দর পার হয়ে ভারতে প্রবেশ করেন।
 
বুড়িমারী বন্দরের জিরো লাইন পার করা মাত্রই ছিটবাসীকে ফুল দিয়ে সাদরে অভ্যর্থনা জানিয়ে মিষ্টি মুখ করান ভারত সরকারের প্রতিনিধিরা। এ সময় বিলুপ্ত ছিটমহল বিনিময় কমিটির ভারত ইউনিটের নেতারাও উপস্থিত ছিলেন।

জানা গেছে, ভারতের কুচবিহার জেলার মেদিনীপুর ভোট বাড়ি এলাকায় অনুষ্ঠানিক ভাবে ছিটবাসীকে সংবর্ধনা দেওয়া হবে। সেখানে চলছে নানা ধরনের আনুষ্ঠানিকতা।

ছিটবাসীকে অভ্যর্থনা জানাতে চেংরাবান্ধা স্থলবন্দরে উপস্থিত হয়েছেন পশ্চিম বঙ্গ রাজ্য সরকারের বিধায়ক রবিন্দ্র নাথ, ভারতীয় লোকসভার সদস্য পরশ অধিকারী।

বুড়িমারী স্থলবন্দরের ইমিগ্রেশন বাংলানিউজকে জানান, লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলার উত্তর গোতামারীর বিলুপ্ত এক ও দুই নং ছিটের ১৮ পরিবারের ৬২জন।

চলতি বছরের ৩১ জুলাই মধ্য রাতে ছিটমহল বিনিময়ের মাধ্যমে দীর্ঘ ৬৮ বছরের বন্দি জীবনের মুক্তি মিলে ভারত বাংলাদেশের ১৬২টি ছিটমহলের কয়েক হাজার মানুষের। যার মধ্যে ১১১টি বাংলাদেশের এবং বাকী ৫১টি ভারতের ভুখণ্ডের সঙ্গে যুক্ত হয়। এগুলোর মধ্যে কুড়িগ্রাম জেলায় ১২টি, লালমনিরহাটে ৫৯টি, পঞ্চগড়ে ৩৬টি এবং নীলফামারীতে রয়েছে ৪টি।

বাংলাদেশের অভ্যন্তরে থাকা ১১১টি ছিটমহলের মধ্যে ৯৭৯জন মানুষ ভারতের নাগরিকত্ব নিতে আবেদন করেন। পক্ষান্তরে ভারতের ভেতরে থাকা ৫১টি ছিটমহল থেকে কেউ বাংলাদেশে আসার প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন নি।

এদের মধ্যে লালমনিরহাট জেলার ৩টি উপজেলার সদ্য বিলুপ্ত ৫৯টি ছিটমহলের ৩৯টি পরিবারের ১৯৫জন লোক ভারতের ট্রাভেল পাস পান। তাদের যোগাযোগের সুবিধার জন্য কয়েকটি দলে বিভক্ত করা।

বৃহস্পতিবার (১৯ নভেম্বর) দুপুরে প্রথম দলটি ভারতে চলে গেলেন। দ্বিতীয় দলে ১৩৩ জন ২৩ নভেম্বর ভারত যাবেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৭০০ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৯, ২০১৫
এসএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।