ঢাকা, শুক্রবার, ১৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

‘হরতালে যানজট বাড়ে’

এম. আব্দুল্লাহ আল মামুন খান, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭৪৩ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৯, ২০১৫
‘হরতালে যানজট বাড়ে’ ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

ময়মনসিংহ: ‘হারাদিন হরতাল তো টের পাইছি না। গেরাম থেইক্যা বাস দিয়া শহরে আইলাম।

সব মোড়েই তো আগের মতোই যানজট লাইগ্যা আছে। কই, হরতাল নাই তো। ’

হাসতে হাসতে বলছিলেন রিকশাচালক হারুন অর রশিদ। বয়স চল্লিশের কোঠায়। তার সঙ্গে যখন কথা হচ্ছিল তখন ঘড়ির কাটায় বৃহস্পতিবার (১৯ নভেম্বর) বিকেল সাড়ে ৩টা। নগরীর প্রাণকেন্দ্র গাঙ্গিনারপাড় মোড়ে যানজটে আটকে উল্টো বিরক্তি প্রকাশ করে বলেন,  ‘হরতালের আর খাওন নাই। দেহেন না, অহন হরতালে যানজট বাড়ে। ’

আলাপচারিতায় জানা গেলো রিকশাচালক হারুনের বাড়ি ময়মনসিংহের ফুলপুর উপজেলায়। বৃহস্পতিবার সকালে বাস চেপে ফুলপুর থেকে নগরীতে এসেছেন। এসেই গতর খাটুনিতে নেমে পড়েছেন। রিকশার প্যাডেল ঘুরিয়ে সকাল থেকে বিকেল নাগাদ প্রায় ৪’শ টাকার মতোন ভাড়া মেরেছেন।

পাশেই যানজটে আটকা ব্যাটারিচালিত এক অটোরিকশা চালকও তার কণ্ঠে সুর মিলিয়ে বললেন, ‘আগে ডরে লোকজন ঘর থেইক্যা বাহির হইতো না। অহন দিন বদলাইছে। মন চাইলেই এই হরতাল খেলা পাবলিক আর মানে না। ’

মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে দলের সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদের ফাঁসির রায় আপিল বিভাগেও বহাল রাখার প্রতিবাদে জামায়াতের ডাকা হরতাল ময়মনসিংহের জনজীবনে কোনো প্রভাব ফেলেনি। ঘটাতে পারেনি কোনো ছন্দপতন। নগরীতে কর্মজীবী মানুষের পদচারণাও ছিল লক্ষণীয়।

শিল্পায়নের উপজেলা হিসেবে পরিচিত ভালুকাতেও ছিল স্বাভাবিক কর্মযজ্ঞ। খোলা ছিল সব শিল্প প্রতিষ্ঠানই। আর ময়মনসিংহ নগরীর বিভিন্ন সড়কে টেম্পু, সিএনজিচালিত অটোরিকশা, ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা, মাইক্রোবাস, প্রাইভেটকার, মাহেন্দ্র, লেগুনাসহ সব ধরনের যানবাহনকে দাবড়ে ছুটতে দেখা গেছে।

নগরীর সানকিপাড়া শেষ মোড় এলাকায় ফিরে চা স্টলে জমিয়ে আড্ডা দিচ্ছিলেন একটি প্রতিষ্ঠানের চাকুরে আব্দুল করিমসহ (৩৫) জনাকয়েক ব্যক্তি। হরতাল নিয়ে কথা উঠতেই বিস্ময়ের ঘোর নিয়ে বললেন, ‘কীসের হরতাল। গাঙ্গিনারপাড়, নতুন বাজার আর চরপাড়ায় তো যানজটের জন্য যাওয়া যায় না। হরতাল খেলা খেইল্যা রেজাকারগোর ফাঁসি আটকানো যাইবো না। ’

সদর উপজেলার কইলানপুর গ্রাম থেকে আসা মাসুম মিয়া (৩৫) নামের এক রিকশাচালক আরেকটু আগ বাড়িয়ে বললেন, ‘আগে হরতাল হইলে গাড়ি ঘোড়া ভাঙচুর হইতো। অহন জামায়াত-শিবির দৌঁড়ের ওপর আছে। পাবলিকের মনে ডর ডুকাইতে হরতাল ডাহে। এগোর আর অহন টাইম নাই। ’

এদিকে, জোট শরিকের ডাকা হরতাল মানছে না বিএনপির অনেক নেতাকেই। বিকেল ৪টার দিকে নগরীর গাঙ্গিনারপাড় মোড় এলাকায় মাইক্রোবাস হাঁকিয়ে ছুটতো দেখা গেলো জেলার দায়িত্বশীল এক বিএনপি নেতাকে। কিছু জিজ্ঞেস করার আগেই কেটে পড়লেন।

জামায়াতের ডাকা হরতালকে ঘিরে জনজীবন স্বাভাবিক বলে জানান কোতোয়ালী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামরুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘নগরীর গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন পয়েন্টে পুলিশ সতর্ক অবস্থায় রয়েছে। ’

বাংলাদেশ সময়: ১৫৪৪ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৯, ২০১৫
এইচএ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।