ঢাকা: ‘মা অসুস্থ, আসতে পারেননি। আমাকে বলেছেন, বাংলাদেশে এসেই মাটিতে চুমু খেতে।
শুক্রবার (২০ নভেম্বর) সকালে এভাবেই ৭১’র যুদ্ধাহত শিশু শিখার মেয়ে ক্যাটরিনা বাংলাদেশের সঙ্গে নিজের এবং তার মায়ের হৃদ্যতার সম্পর্কের বর্ণনা দেন।
রাজধানীর সেগুনবাগিচায় একাত্তরের যুদ্ধশিশুদের মাতৃসমা বনি কাপুচিনোর সঙ্গে নতুন প্রজন্মের ‘আলাপচারিতা’ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে মুক্তিযুদ্ধ যাদুঘর।
কানাডিয়ান দম্পতি ফ্রেড ও বনি কাপুচিনো বাংলাদেশে এসেছিলেন ১৯৭১ সালে। দেখেছেন এদেশের মানুষের উপর পাকিস্তানি হায়েনাদের নির্মম নির্যাতনের ক্ষত। শিশু থেকে শুরু করে আবাল বৃদ্ধ বণিতা কেউই রেহাই পায়নি নরপিচাশদের হাত থেকে। সস্নেহে ছয়মাসের যুদ্ধাহত শিশু শিখাকে কোলে তুলে নেন এ দম্পতি। দেন পিতা-মাতার স্নেহ।
মিডিয়া ব্যক্তিত্ব আব্দুন নূর তুষারের সঞ্চালনায় সেই স্মৃতিচারণ করেন বনি কাপুচিনো এবং শিখার বড় মেয়ে ক্যাটরিনা। এছাড়াও বিতর্ক, দেশত্ববোধক গান ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশন করা হয়।
বনি কাপুচিনো বলেন, আমি এবং আমার স্বামী যখন প্রথম এসেছিলাম, তখন বাংলাদেশ সরকার খুবই নতুন। এখানে যুদ্ধশিশুরা ছিল অনেক গরীব, সুবিধা বঞ্চিত। দ্বিতীয় বার ২০০২ সালে যখন আমরা ফের আসি, তখন বাংলাদেশের চট্টগ্রামে শিশুদের জন্য একটি চাইল্ড হেভেন-শিশু স্বর্গ প্রতিষ্ঠা করেছি। যেখানে শিশুরা পুষ্টিকর খাবার, নিরাপদ বাসস্থান, চিকিৎসা এবং শিক্ষা পাবে।
যুদ্ধাপরাধীদের বিচার প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের জবাবে বানু কাপুচিনো বলেন, রাজনীতি বা বিচার নিয়ে কোনো মন্তব্য করতে চাই না। তবে যারা বিচারপ্রার্থী বা নির্যাতিত হয়েছেন, তাদের প্রতি আমার সহমর্মিতা রয়েছে।
ক্যাটরিনা বলেন, বাংলাদেশের মাটি ও মানুষকে আমি ভালোবাসি। আমার মায়েরও এদেশের প্রতি অগাধ শ্রদ্ধা। তিনি অসুস্থ তাই আজকের এ অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকতে পারেননি। মা আমাকে বলেছেন, ‘দেশের মাটিতে নেমেই যেন মাটিতে চুমু খাই, শ্রদ্ধা প্রকাশ করি। ’
বাংলাদেশ সময়: ১৪৫৯ ঘণ্টা, নভেম্বর ২০, ২০১৫
এসইউজে/এটি