ঢাকা: যুদ্ধাপরাধীদের বিচার কোনো রাজনৈতিক প্রতিহিংসার বিষয় নয়। এটা বাংলাদেশের সাধারণ মানুষ, মুক্তিযুদ্ধে শহীদ ও নির্যাতনের শিকার পরিবারের দীর্ঘদিনের দাবির ফল।
ন্যুরেমবার্গ ট্রায়ালের ৭০ বছর উদযাপন উপলক্ষে শুক্রবার (২০ নভেম্বর) সন্ধ্যায় একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি আয়োজিত “যুদ্ধাপরাধের বিচার: ন্যুরেমবার্গ থেকে ঢাকা” শীর্ষক আলোচনা সভায় বক্তারা এ মন্তব্য করেন।
সভা সঞ্চালনা করেন কমিটির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি শাহরিয়ার আলম এবং সভাপতিত্ব করেন বিচারপতি সৈয়দ আমিরুল ইসলাম।
সভায় মূল বক্তব্য তুলে ধরেন আমেরিলান অ্যাসোসিয়েশন অব জুরিস্টের সাবেক সভাপতি অ্যাটর্নি উইলিয়াম পি সোলান। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন জাতীয় সংসদের স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী।
শিরীন শারমিন চৌধুরী বলেন, ১৯৭৩ সালে সর্বপ্রথম যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের জন্য দালাল আইন সংসদে পাশ হয়। পরবর্তীতে বিচার প্রক্রিয়া বন্ধ হওয়ার পর ২০১০ সালে বাংলাদেশের জনগনের দাবি ও আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহারের অংশ হিসেবে নতুন করে আইন করা হয়। সে অনুযায়ী যুদ্ধাপরাধীদের বিচার হচ্ছে।
যুদ্ধাপরাধীদের বিচার প্রক্রিয়ার সমালোচনাকারীদের উদ্দেশ্যে মেরি ওলস্টোন ক্রাফটের উদ্ধৃতি তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘ইট ইজ জাস্টিস নট চ্যারিটি, দ্যাট ইজ ওয়ান্টিং ইন দ্যা ওয়ার্ল্ড’।
যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করতে পেরে জাতি হিসেবে আমরা গর্বিত। বিচার সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হলে মুক্তিযুদ্ধে সকল শহীদের আত্মা শান্তি পাবে, যোগ করেন তিনি।
আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, বাংলাদেশ একাত্তরের যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করছে। এ বিচার সহজ বিষয় ছিল না।
পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম বলেন, কুখ্যাত দুই রাজাকার সালাউদ্দিন কাদের (সাকা) চৌধুরী ও আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদের ফাঁসির রায় আপিল বিভাগে বহাল থাকায় আমরা সন্তুষ্ট। কিন্তু দুঃখের বিষয় হলো এসব কুখ্যাত রাজাকারের বিচার পেতে আমাদের চার দশকেরও বেশি সময় অপেক্ষা করতে হয়েছে। এই বিচারের জন্য শহীদ জননী জাহানার ইমাম ও শাহরিয়ার কবিরের ভূমিকারও প্রশংসা করেন।
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের আইনজীবী ব্যারিস্টার তুরিন আফরোজ বলেন, বাংলাদেশে মানবতা বিরোধীদের বিচার বন্ধ করতে অনেকেই আন্তর্জাতিক মানের আইন নয় বলে উল্লেখ করেন। তাদের এ বক্তব্য সঠিক না। বাংলাদেশের যুদ্ধাপরাধের বিচার প্রক্রিয়া আন্তর্জাতিক মানের আইনের চেয়েও উন্নত।
ন্যুরেমবার্গ ট্রাইব্যুনালে রিভিউ পিটিশন, আপিল বা রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণ ভিক্ষার বিষয় ছিল না। যা আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল- বাংলাদেশে রয়েছে।
আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন রাশিয়ান ফেডারেশনের সভাপতি আলেক্সান্ডার এ নিকোলেইভ।
বাংলাদেশ সময়: ২০৪৩ ঘণ্টা, নভেম্বর ২০, ২০১৫
এইচআর/এটি